ভারতের মঙ্গলগ্রহ অভিযান

মঙ্গলগ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের শেষ নেই। কেননা সেখানকার অনেক বৈশিষ্ট্যই নাকি পৃথিবীর সঙ্গে মেলে, বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। তাই তো বিভিন্ন দেশ মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে জানতে গবেষণা করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতও যোগ দিয়েছে সেই প্রচেষ্টায়। আগামী বছর, মানে ২০১৩ সালের নবেম্বরের ২৬ তারিখ মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশ্যে একটি অর্বিটার

পাঠাতে চায় সেদেশের বিজ্ঞানীরা। সবকিছু ঠিক থাকলে তিন শ’ দিন পর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্ব^র নাগাদ সেটি মঙ্গলের কাছে গিয়ে পৌঁছবে।
এমন পরিকল্পনা নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেছিল দেশটির মহাকাশ সংস্থা। জনপ্রিয় দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’ বলছে গত শুক্রবার দিনের শেষে সেই প্রস্তাবটা অনুমোদন পেয়ে গেছে। অবশ্য সরকারিভাবে সেই তথ্যটা এখনও প্রকাশিত হয়নি।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে সাড়ে চার শ’ কোটি রুপি। আর অর্বিটারটির ওজন হবে সাগে তেরো শ’ কিলোগ্রাম। চেন্নাইয়ের ৮০ কিলোমিটার উত্তরের ‘পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল’ থেকে এটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এই লঞ্চিং প্যাড থেকেই ২০০৮ সালে ভারত চাঁদের উদ্দেশে ‘চন্দ্রায়ন-১’ কে পাঠিয়েছিল। চাঁদে যে পানির অস্তিত্ব রয়েছে সেটা জানিয়েছিল চন্দ্রায়ন।
প্রস্তাবে বলা হয়, মঙ্গল অভিযান সফল হলে বিশ্বের কাছে ভারতের প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতার খবর পৌঁছে দেয়া যাবে। যেটা দেশের জন্য একটা বড় রকমের গৌরবের বিষয় হবে। এই অভিযানের মাধ্যমে মোট নয়টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে সঙ্গে এটাও বলা হয় যে, ১৯৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত মঙ্গল গ্রহে প্রায় ৪২টি অভিযান চালানো হয়। যার অর্ধেকই হয়েছে ব্যর্থ। সুতরাং প্রস্তাবিত অভিযানটিও যে সেরকম ব্যর্থ হতে পারে সে সম্পর্কে গণমাধ্যম আর দেশের জনগণকে সচেতন করে রাখতে হবে।
পাঁচটি দেশ এ পর্যন্ত মঙ্গলে অভিযান চালিয়েছে। ভারত হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ দেশ। ২০১১ সালে চীনের একমাত্র অভিযানটি ব্যর্থ হয়েছিল। দেশের সামাজিক আর আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে টেলিযোগাযোগ আর রিমোট সেন্সিং নিয়ে এতদিন গবেষণা করা হলেও গত প্রায় ১০ বছর ধরে মহাকাশ গবেষণার দিকে নজর দিচ্ছেন ভারতের বিজ্ঞানীরা। মঙ্গল অভিযান ছাড়াও চাঁদে আরেকটি অভিযান পরিচালনা, নিজেদের মহাকাশযানে করে বিজ্ঞানী পাঠানো - এমন সব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন তাঁরা। মঙ্গল নিয়ে সবশেষ অভিযানটি হয়েছে গত সোমবার। এদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ১১টা ৩১ মিনিটে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা তাদের ছয় চাকা বিশিষ্ট একটি যন্ত্রকে মঙ্গলে নেমেছে । প্রায় ১২ বছর ধরে নাসা এই প্রকল্পটি নিয়ে কাজ করছে।
মোঃ মাজাহারুল হক