চরাচর-শাহপীর কল্লা শহীদের মাজার by বিশ্বজিৎ পাল বাবু
শাহ সৈয়দ আহম্মদ গেছুদারাজ (রহ.) এর মাজারকে শাহপীর কল্লা শহীদের মাজারও বলা হয়। তিতাস নদীর তীরঘেঁষা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুর গ্রামে মাজারটির অবস্থান। গ্রামের নাম ধরে এটি খড়মপুরের মাজার হিসেবেও পরিচিত। প্রতিবছর ২৬ শ্রাবণ থেকে ১ ভাদ্র (১০ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট) পর্যন্ত
সপ্তাহব্যাপী ওরস মোবারক অনুষ্ঠিত হয় এ মাজারে। প্রতিবছরের এ ওরসে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটে।
এখানে মাজার গড়ে ওঠা নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। এর মধ্যে মুখে মুখে রটে আছে জেলেদের জালে কল্লা উঠে আসার কাহিনীটি। সেদিন চৈতৈন্য দাসসহ অন্য জেলেরা প্রতিদিনের মতো জাল নিয়ে তিতাস নদীতে মাছ ধরতে যান। ঘটল আশ্চর্য ঘটনা। মাছের বদলে জালে উঠে এলো শরীরবিহীন মাথা। আরো আশ্চর্য ঘটনা হলো সেই মাথা কথা বলতে পারত। জালে উঠার পরপরই শুরু করেছিল কালেমা পড়া। এই অবাক করা ঘটনায় উপস্থিত সবাই সেই মাথার কথামতো কালেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল এবং মাথাটিকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
এলাকায় প্রচলিত আছে, গেছুদারাজের জন্ম ইয়েমেনে। তিনি ছিলেন লম্বা চুলের অধিকারী (গেছুদারাজ শব্দের অর্থ লম্বা চুলওয়ালা)। ধর্ম প্রচারের জন্য ১২২৩ খ্রিস্টাব্দে হজরত শাহজালাল ইয়ামেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে আরব থেকে আসা ২৫০ জন আউলিয়ার মধ্যে ছিলেন গেছুদারাজও। তৎকালীন শ্রীহট্টের অত্যচারী রাজা আচক নারায়ণের (গৌরগোবিন্দ) কারণে অতিষ্ঠ ছিল সেখানকার মানুষ। আউলিয়াদের ওই দলটি রাজা আচক নারায়ণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সেই যুদ্ধে জয়ী হন আউলিয়ারা। কিন্তু আচক নারায়ণের সেনাপ্রধান নীলকমলের তরবারির আঘাতে গেছুদারাজের শিরশ্ছেদ হয়। আর সেই শির গিয়ে পড়ে কুশিয়ারা নদীতে, যা ভাসতে ভাসতে তিতাসের মোহনায় এসে জেলেদের জালে ওঠে। আবার অনেকে এ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। কারো কারো মতে, কারবালা প্রান্তে ইসলাম ধর্মের ট্র্যাজিক ঘটনাকে সামনে রেখেই গেছুদারাজের খড়মপুর আগমন।
মাজারে ঢোকার পথেই রয়েছে বিশাল ফটক। এরপর কিছুদূর এগোতেই দোতলাবিশিষ্ট বিশাল ভবন। যেখানে রয়েছে দোকানপাট, রেস্ট হাউস, অতিথিশালা, রন্ধনশালা। একটু দূরেই মাজারের মূল ভবন ও বিশাল পাকা ঘাট। ভক্তদের জন্য নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটি সুবিশাল ভবন। ৩২৩ ত্রিপুরা সন লেখা পুরনো মসজিদটি মাজারের আলাদা ঐতিহ্য বহন করে।
মাজার কমিটির নেতারা জানান, প্রতিবছর ২৬ শ্রাবণ থেকে ১ ভাদ্র (১০ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট) পর্যন্ত টানা সাত দিন বাবার দরবারে ওরস শরিফ অনুষ্ঠিত হয়। ওরস শরিফের পঞ্চম দিনে রাত ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। রাত ১০টায় শুরু হয় জিকির মাহফিল।
মাজার শরিফে প্রতিদিন ভোর ৪টা ও মাগরিবের আজানের আগে ডঙ্কা বাজানো হয়। কল্লা বাবা ধর্মীয় যুদ্ধে, ইমানি যুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন। অধিকাংশ খাদেম ও ভক্তের অভিমত, তখনকার সময় যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ও যুদ্ধশেষে ডঙ্কা বাজানো হতো। ওই স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এখনো প্রতিদিন দুই বেলা ডঙ্কা বাজানো হয়।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
এখানে মাজার গড়ে ওঠা নিয়ে রয়েছে নানা জনশ্রুতি। এর মধ্যে মুখে মুখে রটে আছে জেলেদের জালে কল্লা উঠে আসার কাহিনীটি। সেদিন চৈতৈন্য দাসসহ অন্য জেলেরা প্রতিদিনের মতো জাল নিয়ে তিতাস নদীতে মাছ ধরতে যান। ঘটল আশ্চর্য ঘটনা। মাছের বদলে জালে উঠে এলো শরীরবিহীন মাথা। আরো আশ্চর্য ঘটনা হলো সেই মাথা কথা বলতে পারত। জালে উঠার পরপরই শুরু করেছিল কালেমা পড়া। এই অবাক করা ঘটনায় উপস্থিত সবাই সেই মাথার কথামতো কালেমা পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল এবং মাথাটিকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
এলাকায় প্রচলিত আছে, গেছুদারাজের জন্ম ইয়েমেনে। তিনি ছিলেন লম্বা চুলের অধিকারী (গেছুদারাজ শব্দের অর্থ লম্বা চুলওয়ালা)। ধর্ম প্রচারের জন্য ১২২৩ খ্রিস্টাব্দে হজরত শাহজালাল ইয়ামেনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে আরব থেকে আসা ২৫০ জন আউলিয়ার মধ্যে ছিলেন গেছুদারাজও। তৎকালীন শ্রীহট্টের অত্যচারী রাজা আচক নারায়ণের (গৌরগোবিন্দ) কারণে অতিষ্ঠ ছিল সেখানকার মানুষ। আউলিয়াদের ওই দলটি রাজা আচক নারায়ণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। সেই যুদ্ধে জয়ী হন আউলিয়ারা। কিন্তু আচক নারায়ণের সেনাপ্রধান নীলকমলের তরবারির আঘাতে গেছুদারাজের শিরশ্ছেদ হয়। আর সেই শির গিয়ে পড়ে কুশিয়ারা নদীতে, যা ভাসতে ভাসতে তিতাসের মোহনায় এসে জেলেদের জালে ওঠে। আবার অনেকে এ নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। কারো কারো মতে, কারবালা প্রান্তে ইসলাম ধর্মের ট্র্যাজিক ঘটনাকে সামনে রেখেই গেছুদারাজের খড়মপুর আগমন।
মাজারে ঢোকার পথেই রয়েছে বিশাল ফটক। এরপর কিছুদূর এগোতেই দোতলাবিশিষ্ট বিশাল ভবন। যেখানে রয়েছে দোকানপাট, রেস্ট হাউস, অতিথিশালা, রন্ধনশালা। একটু দূরেই মাজারের মূল ভবন ও বিশাল পাকা ঘাট। ভক্তদের জন্য নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটি সুবিশাল ভবন। ৩২৩ ত্রিপুরা সন লেখা পুরনো মসজিদটি মাজারের আলাদা ঐতিহ্য বহন করে।
মাজার কমিটির নেতারা জানান, প্রতিবছর ২৬ শ্রাবণ থেকে ১ ভাদ্র (১০ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট) পর্যন্ত টানা সাত দিন বাবার দরবারে ওরস শরিফ অনুষ্ঠিত হয়। ওরস শরিফের পঞ্চম দিনে রাত ১২টায় অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। রাত ১০টায় শুরু হয় জিকির মাহফিল।
মাজার শরিফে প্রতিদিন ভোর ৪টা ও মাগরিবের আজানের আগে ডঙ্কা বাজানো হয়। কল্লা বাবা ধর্মীয় যুদ্ধে, ইমানি যুদ্ধে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন। অধিকাংশ খাদেম ও ভক্তের অভিমত, তখনকার সময় যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ও যুদ্ধশেষে ডঙ্কা বাজানো হতো। ওই স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এখনো প্রতিদিন দুই বেলা ডঙ্কা বাজানো হয়।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
No comments