আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদ্যাপিত-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের সমাবেশে একাধিক সাংসদ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন। একই অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু লারমা) সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ আদিবাসীদের বিভিন্ন অধিকার আদায়ে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।


গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নানা আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষ এই সমাবেশে যোগ দেয়। তাদের অনেকের পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী পোশাক। হাতে ছিল নানা দাবিসংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড।
আদিবাসী দিবস পালন নিরুৎসাহিত করতে সরকারের নির্দেশ ছিল। সমাবেশে সরকারের এই নির্দেশের সমালোচনা করেন একাধিক বক্তা। সমাবেশের সভাপতি সন্তু লারমা বলেন, ‘সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমাদের মানসিকভাবে চাপে ফেলেছে। বর্তমান সরকার আদিবাসীদের বিষয়ে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে।’ তিনি আদিবাসীদের অধিকার অর্জনে গণতান্ত্রিক শক্তির সহযোগিতা চান।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের ওপরে নয়, বিশেষ কোনো শক্তির ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তিনি আদিবাসীদের অধিকারের প্রশ্নে সরকারের অবস্থান পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
সমাবেশের উদ্বোধন করেন আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক রাশেদ খান মেনন। তিনি আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান সংশোধনের দাবি জানান।
সাংসদ হাসানুল হক ইনু আদিবাসীদের সঙ্গে সংলাপ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
এবারের আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আদিবাসী অধিকার উজ্জীবিতকরণে আদিবাসী গণমাধ্যম’। সমাবেশে সংহতি জানাতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আদিবাসীদের ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের জন্য সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। বিশিষ্ট কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ আলোচনায় বলেন, সংবিধানে আদিবাসীদের যেভাবে পরিচিত করা হয়েছে, তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
জাতীয় তথ্য কমিশনের সদস্য সাদেকা হালিম আদিবাসীদের জন্য একটি পৃথক টেলিভিশন চ্যানেল চালুর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক মেজবাহ কামাল, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, আদিবাসী নেতা শক্তিপদ ত্রিপুরা, রবীন্দ্রনাথ সরেন, চৈতালী ত্রিপুরা, আন্না মিনজ প্রমুখ।
আলোচনা পর্ব শেষে আদিবাসী শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি দোয়েল চত্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।

No comments

Powered by Blogger.