কাদেরের 'যুদ্ধপ্রস্তুতি' নিয়ে সংশয় by পার্থ সারথি দাস
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবারের ঈদে মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার বিষয়টিকে 'যুদ্ধপ্রস্তুতির' সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, 'যেভাবে একটি যুদ্ধপরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়, ঠিক সেভাবে ঈদে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' কিন্তু তাঁর কথায় অনেকেই আস্থা রাখতে পারছেন না।
তাঁরা বলছেন, বেশ দেরি হয়ে গেছে। আরো আগে থেকে 'যুদ্ধপ্রস্তুতিটা' নিলে ভালো হতো।
'রাস্তার মইধ্যে গাড়ি কাইত হইয়া পইড়া থাকে। কাঁচপুর থাইক্যা যাত্রাবাড়ী গাড়ি ঢুকতেই তিন ঘণ্টা লাগে। কয়দিন পর তো ঢাকা-চিটাগাং রোডে গাড়ি চলবই না। এইবার সাংঘাতিক জ্যাম হইব। মেঘনা সেতুতে গাড়ি উঠলেই সেতু দুলে। আরো আগে প্রস্তুতি নিলে ভালো হইত।' সরকারের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে এভাবেই টেলিফোনে প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।
অনেকের মতে, যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করার বিষয়ে অনেক আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করার প্রয়োজন হলেও তা করা হয়নি। ঈদ হতে আর অল্প কয়েক দিন বাকি। কিন্তু যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সড়কপথে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে গতকাল বৃহস্পতিবার। অথচ এরই মধ্যে মানুষের ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে বাস-মিনিবাসের ভাড়া। চলছে চাঁদাবাজি। যান চলাচলের শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বৈঠক একাধিকবার এবং কমপক্ষে এক মাস আগে করা উচিত ছিল। তাহলে ভাড়া সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি রোধ করা সম্ভব হতো।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা ওসমান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, গত মাসের শেষ দিক থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। বৈঠকের পর সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
গতকাল দুপুরে রেলভবনে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, যেভাবে একটি যুদ্ধপরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়, ঠিক সেভাবে আগামী ঈদে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তানে হানিফ ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় যানজট হচ্ছে। তাই সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, সিএনজিচালিত যানে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ঈদ উপলক্ষে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো ১৫ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সড়ক থেকে সরানোর জন্য পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বৈঠকে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রেকার আনার দাবি জানান। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে তাঁদের আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, 'অনবরত স্বপ্নের কথা শোনাব না, যাত্রীরা যাতে ভোগান্তি ছাড়া যেতে পারে, সে ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।' খারাপ সড়ক প্রতিনিয়ত ঠিক করা হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ঈদে মহাসড়কগুলোতে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হবে না।
স্থানীয়ভাবে যাতায়াত ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে ঢাকার আশপাশের জেলার প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, 'সামনে কঠিন পরীক্ষা, আপনাদের সহযোগিতায় পাস করতে চাই।' বৈঠকে অংশ নেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামছুল হক টুকুসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বৈঠকে তিনটি 'ভিজিলেন্স টিম' গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতুর স্থানে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা নেওয়া, সেতুতে রেকার রাখা, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের সময় তিন দিন ফেরিতে ভারী যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সড়ক-মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলবে।
শুরু বাড়ি যাওয়া : গতকাল ছিল জন্মাষ্টমীর জন্য সরকারি ছুটি। আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার আবার বন্ধ। টানা এই বন্ধের পর ১২ থেকে ১৪ আগস্ট তিন দিন অফিস খোলা। এরপর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। পরদিন ১৬ আগস্ট পবিত্র শবেকদর। দুই দিনই সরকারি ছুটি। এরপর শুক্র-শনি সাপ্তাহিক ছুটি। ১৯ থেকে ২১ আগস্ট ঈদের ছুটি। এভাবে টানা বন্ধ। ঈদের পরে ২২ ও ২৩ আগস্ট দুই দিন অফিস খোলা। এই দুই দিন ঐচ্ছিক ছুটি মিললে টানা অনেক দিন ছুটি কাটানো যাবে। ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা ১৪ আগস্ট রাতের টিকিট পেতে মরিয়া। কিন্তু অগ্রিম টিকিট না পেয়ে গতকাল চলতি টিকিটে বাসে ও ট্রেনে রাজধানী ছেড়েছেন অনেকে।
নাড়ির টানে কংক্রিটের জঙ্গল রাজধানীতে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ যেতে চাইছেন গ্রামের বাড়ি। টার্মিনালে বাসের টিকিটের জন্য দৌড়ঝাঁপ চলছে। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে। লঞ্চে কালোবাজারিতে চলছে টিকিট বিক্রি।
'রাস্তার মইধ্যে গাড়ি কাইত হইয়া পইড়া থাকে। কাঁচপুর থাইক্যা যাত্রাবাড়ী গাড়ি ঢুকতেই তিন ঘণ্টা লাগে। কয়দিন পর তো ঢাকা-চিটাগাং রোডে গাড়ি চলবই না। এইবার সাংঘাতিক জ্যাম হইব। মেঘনা সেতুতে গাড়ি উঠলেই সেতু দুলে। আরো আগে প্রস্তুতি নিলে ভালো হইত।' সরকারের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে এভাবেই টেলিফোনে প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী।
অনেকের মতে, যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করার বিষয়ে অনেক আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করার প্রয়োজন হলেও তা করা হয়নি। ঈদ হতে আর অল্প কয়েক দিন বাকি। কিন্তু যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সড়কপথে যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে গতকাল বৃহস্পতিবার। অথচ এরই মধ্যে মানুষের ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা শুরু হয়েছে। বেড়ে গেছে বাস-মিনিবাসের ভাড়া। চলছে চাঁদাবাজি। যান চলাচলের শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের বৈঠক একাধিকবার এবং কমপক্ষে এক মাস আগে করা উচিত ছিল। তাহলে ভাড়া সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি রোধ করা সম্ভব হতো।
সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা ওসমান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, গত মাসের শেষ দিক থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। বৈঠকের পর সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
গতকাল দুপুরে রেলভবনে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে যোগাযোগমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, যেভাবে একটি যুদ্ধপরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়, ঠিক সেভাবে আগামী ঈদে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তানে হানিফ ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় যানজট হচ্ছে। তাই সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, সিএনজিচালিত যানে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ঈদ উপলক্ষে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো ১৫ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সড়ক থেকে সরানোর জন্য পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বৈঠকে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রেকার আনার দাবি জানান। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে তাঁদের আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, 'অনবরত স্বপ্নের কথা শোনাব না, যাত্রীরা যাতে ভোগান্তি ছাড়া যেতে পারে, সে ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।' খারাপ সড়ক প্রতিনিয়ত ঠিক করা হচ্ছে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ঈদে মহাসড়কগুলোতে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হবে না।
স্থানীয়ভাবে যাতায়াত ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন করতে ঢাকার আশপাশের জেলার প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, 'সামনে কঠিন পরীক্ষা, আপনাদের সহযোগিতায় পাস করতে চাই।' বৈঠকে অংশ নেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামছুল হক টুকুসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে বৈঠকে তিনটি 'ভিজিলেন্স টিম' গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতুর স্থানে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা নেওয়া, সেতুতে রেকার রাখা, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের সময় তিন দিন ফেরিতে ভারী যানবাহন চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সড়ক-মহাসড়কে ভারী যানবাহন চলবে।
শুরু বাড়ি যাওয়া : গতকাল ছিল জন্মাষ্টমীর জন্য সরকারি ছুটি। আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার আবার বন্ধ। টানা এই বন্ধের পর ১২ থেকে ১৪ আগস্ট তিন দিন অফিস খোলা। এরপর ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। পরদিন ১৬ আগস্ট পবিত্র শবেকদর। দুই দিনই সরকারি ছুটি। এরপর শুক্র-শনি সাপ্তাহিক ছুটি। ১৯ থেকে ২১ আগস্ট ঈদের ছুটি। এভাবে টানা বন্ধ। ঈদের পরে ২২ ও ২৩ আগস্ট দুই দিন অফিস খোলা। এই দুই দিন ঐচ্ছিক ছুটি মিললে টানা অনেক দিন ছুটি কাটানো যাবে। ফলে সরকারি চাকরিজীবীরা ১৪ আগস্ট রাতের টিকিট পেতে মরিয়া। কিন্তু অগ্রিম টিকিট না পেয়ে গতকাল চলতি টিকিটে বাসে ও ট্রেনে রাজধানী ছেড়েছেন অনেকে।
নাড়ির টানে কংক্রিটের জঙ্গল রাজধানীতে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ যেতে চাইছেন গ্রামের বাড়ি। টার্মিনালে বাসের টিকিটের জন্য দৌড়ঝাঁপ চলছে। ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে। লঞ্চে কালোবাজারিতে চলছে টিকিট বিক্রি।
No comments