মানুষ হতাশাতেও হাসে by এনামুল হক
আমরা আনন্দে হাসি। কিন্তু হতাশায় কি হাসি? বেশিরভাগ মানুষ মনে করে হতাশার মধ্যে আমাদের মুখে হাসি ফোটে না। কিন্তু আসলে ফোটে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) এক নতুন গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
সেই সঙ্গে আরও একটা বিষয়ও জানা গেছে। তাহলো এই গবেষণালব্ধ সর্বশেষ তথ্য নিয়ে প্রোগ্রাম করা কম্পিউটার আনন্দের হাসি ও হতাশার হাসির মধ্যেকার পার্থক্য নির্ণয়ের কাজটা মানুষের তুলনায় আরও ভালভাবে করতে পারে।
এমআইটির মিডিয়া ল্যাবের এ্যাফেক্টিভ কম্পিউটিং গ্রুপের গ্রাজুয়েট ছাত্র এহসান হক এই গবেষণা চালান। এই গবেষণার ওপর তিনি একটি নিবন্ধও লিখেন। মিডিয়া ল্যাবে পরিচালিত সেই গবেষণায় কিছু নারী পুরুষকে বেছে নেয়া হয় এবং প্রথমে তাদেরকে আনন্দ ও হতাশার অভিব্যক্তি দিতে বলা হয়। এ সময় ওয়েব ক্যামেরায় তাদের অভিব্যক্তি রেকর্ড করে রাখা হয়। এরপর তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে একটি অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে বলা হয় নয়ত একটা ভিডিও দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়Ñযার উদ্দেশ্য ছিল দর্শকের মধ্যে একটা আনন্দময় প্রতিক্রিয়া সঞ্চার করা। এই ব্যাপারগুলোও ওয়েব ক্যামেরায় রেকর্ড করে রাখা হয়।
এহসান হক বলেন, হতাশার অভিব্যক্তি সৃষ্টি করতে বলা হলে অংশগ্রহণকারী নর-নারীর ৯০ শতাংশের মুখে মৃদু হাসির রেখা ফুটে ওঠেনি। কিন্তু সত্যিকারের হতাশা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে দিয়ে একটা বিস্তারিত অন লাইন ফর্ম পূরণ করিয়ে নেয়ার পর দেখা যায় সে ৯০ শতাংশের চেহারায় হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। এহসান হক আরও বলেন, স্টিল ছবিতে দেখা যায় যে, হতাশাগ্রস্ত চেহারার হাসি আর আনন্দিত চেহারার হাসির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য চোখে পড়ে না। কিন্তু ভিডিও বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, দুই ধরনের হাসির উৎপত্তি থেকে পরিসমাপ্তি পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রায়শই দেখা গেছে যে, আনন্দময় হাসি ধীরে ধীরে তৈরি হয়। কিন্তু হতাশার হাসি দ্রুত দেখা দিয়ে দ্রুতই মিলিয়ে যায়।
এহসান হক বলেন, এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গবেষকরা সাধারণত আবেগের অনুকরণকৃত অভিব্যক্তির ওপর নির্ভর করেÑযা থেকে ভ্রান্ত বা বিভ্রান্তিকর ফল পাওয়া যেতে পারে। সত্যিকারের প্রতিক্রিয়ার চেয়ে অভিনয়কৃত প্রতিক্রিয়াকে সঠিকভাবে শ্রেণীবিন্যস্ত করা অনেক বেশি সহজ। এই গবেষণার ফলে আগামী দিনের কম্পিউটারের পক্ষে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর আবেগগত অবস্থা আরও ভালভাবে নিরূপণ করা এবং তদনুযায়ী সাড়া দেয়ার পথ সুগম হতে পারে। তাছাড়া এটা অভিব্যক্তি ব্যাখ্যা করতে যাদের অসুবিধা হয়, যেমন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা, তাদের দেখা অভিব্যক্তিগুলো আরও সঠিকভাবে নিরূপণ করার কাজেও সহায়ক হতে পারে। হক বলেন, মুখোমুখি যোগাযোগের দ্বারা মানুষকে সাহায্য করাই এই গবেষণার লক্ষ্য। সূক্ষ্ম যে বিষয়গুলোর মধ্য দিয়ে অন্তর্নিহিত আবেগ অনুভূতি প্রকাশ পায় সেগুলো অনুধাবন করতে পারা এ গবেষণার আরেক বড় লক্ষ্য। হক বলেন, অটিজমে আক্রান্তদের শিখানো হয় যে মৃদু হাসির অর্থ কারোর সুখ বা আনন্দ হচ্ছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাপারটা অত সহজ নয়।
অভিব্যক্তিকে লোকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবে সে ব্যাপারে সময়ের আনেকখানি ভূমিকা আছে। দৃষ্টান্ত দিয়ে এহসান হক বলেন, প্রায়শই দেখা যেত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখে মেকি হাসি লেগেই আছে। হাসিটাকে নকল মনে হবার কারণ তার দাঁত বের করা হাসির পিছনে অনেক সময় লেগে যাওয়া। একইভাবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হারমান কেইনের নির্বাচনী প্রচারের একটি কমার্শিয়াল তৈরি করা হয়েছিল যেখানে তার হাসিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। হাসিটি এত ধীরে ধীরে তৈরি হয় যে আবির্ভাব ঘটতে ৯ সেকেন্ড লেগে গিয়েছিল। এই হাসি নিয়ে নানা রকমের প্যারোডি তৈরি হয়েছিল। কারও হাসিটি আন্তরিক ও অকৃত্রিম বুঝতে হলে হাসির সময়টা সঠিক হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জেফরি কোহন নামে মনস্তত্ত্বের এক অধ্যাপক বলেন, চলতি গবেষণার মৌলিকত্ব এখানে যে, এতে মানুষের মৌলিক অভিজ্ঞতা হতাশার ওপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এই প্রথম হাসিকে নেতিবাচক আবেগের প্রকাশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ কথা গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, সব হাসিই ইতিবাচক নয়। মানুষের একটা প্রবণতাই হলো হাসি দেখলেই সেটাকে আনন্দের প্রকাশ হিসেবে ধরে নেয়া। সেটাও ঠিক নয়।
এমআইটির মিডিয়া ল্যাবের এ্যাফেক্টিভ কম্পিউটিং গ্রুপের গ্রাজুয়েট ছাত্র এহসান হক এই গবেষণা চালান। এই গবেষণার ওপর তিনি একটি নিবন্ধও লিখেন। মিডিয়া ল্যাবে পরিচালিত সেই গবেষণায় কিছু নারী পুরুষকে বেছে নেয়া হয় এবং প্রথমে তাদেরকে আনন্দ ও হতাশার অভিব্যক্তি দিতে বলা হয়। এ সময় ওয়েব ক্যামেরায় তাদের অভিব্যক্তি রেকর্ড করে রাখা হয়। এরপর তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে একটি অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে বলা হয় নয়ত একটা ভিডিও দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়Ñযার উদ্দেশ্য ছিল দর্শকের মধ্যে একটা আনন্দময় প্রতিক্রিয়া সঞ্চার করা। এই ব্যাপারগুলোও ওয়েব ক্যামেরায় রেকর্ড করে রাখা হয়।
এহসান হক বলেন, হতাশার অভিব্যক্তি সৃষ্টি করতে বলা হলে অংশগ্রহণকারী নর-নারীর ৯০ শতাংশের মুখে মৃদু হাসির রেখা ফুটে ওঠেনি। কিন্তু সত্যিকারের হতাশা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে তাদেরকে দিয়ে একটা বিস্তারিত অন লাইন ফর্ম পূরণ করিয়ে নেয়ার পর দেখা যায় সে ৯০ শতাংশের চেহারায় হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। এহসান হক আরও বলেন, স্টিল ছবিতে দেখা যায় যে, হতাশাগ্রস্ত চেহারার হাসি আর আনন্দিত চেহারার হাসির মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য চোখে পড়ে না। কিন্তু ভিডিও বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, দুই ধরনের হাসির উৎপত্তি থেকে পরিসমাপ্তি পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রায়শই দেখা গেছে যে, আনন্দময় হাসি ধীরে ধীরে তৈরি হয়। কিন্তু হতাশার হাসি দ্রুত দেখা দিয়ে দ্রুতই মিলিয়ে যায়।
এহসান হক বলেন, এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গবেষকরা সাধারণত আবেগের অনুকরণকৃত অভিব্যক্তির ওপর নির্ভর করেÑযা থেকে ভ্রান্ত বা বিভ্রান্তিকর ফল পাওয়া যেতে পারে। সত্যিকারের প্রতিক্রিয়ার চেয়ে অভিনয়কৃত প্রতিক্রিয়াকে সঠিকভাবে শ্রেণীবিন্যস্ত করা অনেক বেশি সহজ। এই গবেষণার ফলে আগামী দিনের কম্পিউটারের পক্ষে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর আবেগগত অবস্থা আরও ভালভাবে নিরূপণ করা এবং তদনুযায়ী সাড়া দেয়ার পথ সুগম হতে পারে। তাছাড়া এটা অভিব্যক্তি ব্যাখ্যা করতে যাদের অসুবিধা হয়, যেমন অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিরা, তাদের দেখা অভিব্যক্তিগুলো আরও সঠিকভাবে নিরূপণ করার কাজেও সহায়ক হতে পারে। হক বলেন, মুখোমুখি যোগাযোগের দ্বারা মানুষকে সাহায্য করাই এই গবেষণার লক্ষ্য। সূক্ষ্ম যে বিষয়গুলোর মধ্য দিয়ে অন্তর্নিহিত আবেগ অনুভূতি প্রকাশ পায় সেগুলো অনুধাবন করতে পারা এ গবেষণার আরেক বড় লক্ষ্য। হক বলেন, অটিজমে আক্রান্তদের শিখানো হয় যে মৃদু হাসির অর্থ কারোর সুখ বা আনন্দ হচ্ছে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যাপারটা অত সহজ নয়।
অভিব্যক্তিকে লোকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবে সে ব্যাপারে সময়ের আনেকখানি ভূমিকা আছে। দৃষ্টান্ত দিয়ে এহসান হক বলেন, প্রায়শই দেখা যেত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখে মেকি হাসি লেগেই আছে। হাসিটাকে নকল মনে হবার কারণ তার দাঁত বের করা হাসির পিছনে অনেক সময় লেগে যাওয়া। একইভাবে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হারমান কেইনের নির্বাচনী প্রচারের একটি কমার্শিয়াল তৈরি করা হয়েছিল যেখানে তার হাসিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল। হাসিটি এত ধীরে ধীরে তৈরি হয় যে আবির্ভাব ঘটতে ৯ সেকেন্ড লেগে গিয়েছিল। এই হাসি নিয়ে নানা রকমের প্যারোডি তৈরি হয়েছিল। কারও হাসিটি আন্তরিক ও অকৃত্রিম বুঝতে হলে হাসির সময়টা সঠিক হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জেফরি কোহন নামে মনস্তত্ত্বের এক অধ্যাপক বলেন, চলতি গবেষণার মৌলিকত্ব এখানে যে, এতে মানুষের মৌলিক অভিজ্ঞতা হতাশার ওপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এই প্রথম হাসিকে নেতিবাচক আবেগের প্রকাশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এ কথা গুরুত্বের সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, সব হাসিই ইতিবাচক নয়। মানুষের একটা প্রবণতাই হলো হাসি দেখলেই সেটাকে আনন্দের প্রকাশ হিসেবে ধরে নেয়া। সেটাও ঠিক নয়।
No comments