আজ ময়মনসিংহে খালেদার জনসভা-লাখো মানুষ জড়ো করতে ব্যস্ত বিএনপি

ময়মনসিংহ জেলা শহরে বিএনপির জনসভা আজ। শহরের সার্কিট হাউস মাঠে জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। চারদলীয় ঐক্যজোটের শরিক ও সমমনা দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দেবেন। সভা সফল করতে বিএনপি ও শরিক দলের নেতা-কর্মীরা দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গুলশানের বাসভবন থেকে ময়মনসিংহের জনসভার উদ্দেশে রওনা হবেন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন।

জনসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় চারদলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। পুরো জেলায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিযুক্ত বিশাল ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণ নির্মাণের হিড়িক পড়ে গেছে শহরে।
সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভা সফল করতে ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আশপাশের জেলার নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তিনি। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও একাধিকবার বৈঠক করেছেন ফখরুল ইসলাম। জনসভায় লাখো মানুষ জড়ো করতে প্রতিনিয়ত কর্মীসভা করছে বিএনপি।
কেন্দ্র থেকে প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারাও প্রায় দিন ময়মনসিংহ গিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে প্রচারণার কাজে পাঠাচ্ছেন। গ্রাম পর্যায়ের প্রচারণা কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারাও অংশ নিচ্ছেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহের অন্য জেলাগুলোতেও সমাবেশ সফল করার জন্য চলছে বিরতিহীন প্রচারণা। ময়মনসিংহে অবস্থানকারী কেন্দ্রীয় টিম পুরো প্রচার কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তদারকি করছে।
ময়মনসিংহের জনসভা সফল করতে গঠিত হয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটি। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা কমিটির সভাপতি এ কে এম মোশাররফ হোসেনকে। তাঁর বাসভবনে জনসভা সফল করতে বিভিন্ন উপকমিটির কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।
ময়মনসিংহ থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, জনসভাকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহ শহরের প্রতিটি মোড়ে নানান রঙের বিলবোর্ড বসানো হয়েছে। এতে শোভা পাচ্ছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাস্যোজ্জ্বল ছবি। অসংখ্য ফেস্টুন শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত দেখা যায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ, ঝোলানো হয়েছে ব্যানার।
আজকের জনসভাকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়ার যাত্রাপথ, সার্কিট হাউসের জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকা বর্ণাঢ্য রূপ নিয়েছে। ময়মনসিংহ শহরের চিরচেনা রূপ অনেকটাই বদলে গেছে। বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। উপজেলা থেকে নেতারা এসে নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন।
বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর ময়মনসিংহে নেত্রীর আগমন উপলক্ষে দলের সব পর্যায়ে চাঙ্গা ভাব। এ ছাড়া অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের ব্যস্ততা এখনো শুরু না হওয়ায় জনসভার দিনটি সব দিক বিবেচনায় যথাসময়ে নির্ধারিত হয়েছে বলে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন।
জনসভা সফল করতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের সব জেলায় সভা, সমাবেশ, মিছিল, কর্মীসভা, প্রচারপত্র বিতরণ, গণসংযোগ, মাইকিং প্রভৃতি আরো জোরদারের তাগিদ দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায়। জনসভা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব ও ঢাকা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বিভিন্ন উপকমিটিকে কেন্দ্রের কিছু নির্দেশনার কথাও জানান। ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতারা ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ ময়দান পরিদর্শন করেছেন।
জনসভা সফল করার জন্য প্রচার, দপ্তর, স্বেচ্ছাসেবক, মিডিয়া প্রভৃতি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রচারেও বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। গান গেয়ে, ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে শহরের অলিগলিতে যাচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মিছিল। জেলা ছাত্রদল সভাপতি রুকনোজ্জামান রুকন বলেন, একটি পরিবারের সদস্যদের মতো ছাত্রদলের সব নেতা-কর্মী কাজ করছেন। জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ওয়াহাব আকন্দ বলেন, জনসভাকে ঘিরে ময়মনসিংহে যে জাগরণের সৃষ্টি হয়েছে, তা দেখে তাঁরা অভিভূত। দলের এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠ-ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন। বিএনপি কেন্দ্রীয় সহপ্রচার সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স জানান, শুধু বড় আয়োজন নয়, একটি সফল জনসভার আয়োজনের জন্য দলের সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।