চট্টগ্রামে শিল্প-কারখানায় গ্যাস দেওয়া বন্ধ, ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ by রফিকুল বাহার ও রাশেদুল তুষার,
সরকারি সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার (সিইউএফএল) চালু করার জন্য এই অঞ্চলের ভারী ও মাঝারি মানের শতাধিক বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার নোটিশ জারি করেছে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। গতকাল বুধবার এই নোটিশ জারির পর শিল্প-মালিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এতে রপ্তানি খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ছাড়া কোরবানির ঈদের আগে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গেলে শ্রম অসন্তোষও সৃষ্টি হতে পারে।
উৎপাদন কম হলে বাজারে দামের ক্ষেত্রে অস্থিরতা সৃষ্টির আশঙ্কা আছে। তা ছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠান চালাতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হবে সরকার। একইভাবে দেশের সব অঞ্চলের কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ না করে কেবল চট্টগ্রামে করা হচ্ছে, সে ব্যাপারেও শিল্পপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন।
নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে দেশের অন্যতম রড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের নির্বাহী পরিচালক তপন সেনগুপ্ত গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আজ (গতকাল বুধবার) গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার নোটিশ পেয়েছি আমরা। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে।' হতাশা ব্যক্ত করে তিনি আরো বলেন, সরকার কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় তা বোধগম্য নয়। সিইউএফএলের গ্যাসের দর হলো প্রতি ইউনিট দুই টাকা ৫৮ পয়সা। আর আমাদের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি ইউনিটের দাম নেয় পাঁচ টাকা ৮৬ পয়সা। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন ইউরিয়া সারের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটানো সম্ভব। এতে সরকারের কয়েক শ কোটি টাকার রাজস্ব সাশ্রয় হবে।
শিল্পপতিদের এই অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, তাঁরা বন্ধ নয়, রেশনিং করছেন। গত রাতে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মিলকারখানা বন্ধ রাখার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।' কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যাস সংযোগ বন্ধ_এই প্রশ্ন করলে সরকারি ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, 'তাঁরা বললে আমার কী করার আছে।'
সরকারি প্রতিষ্ঠান সিইউএফএল চালু করার জন্য ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দরকার। চট্টগ্রামের বর্তমান চাহিদা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই বিপুল চাহিদার বিপরীতে গত ২০ অক্টোবর পাওয়া গেছে ২২৮ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল তা কমে ২০৫ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। অর্থাৎ একদিকে সরবরাহ কমছে, অন্যদিকে সারকারখানা চালুর জন্য চাহিদা বাড়ছে।
সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল বিকেলে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার মালিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ। নগরীর খুলশীতে অবস্থিত বিজিএমইএ কার্যালয়ে এই বৈঠকে বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'কোরবানির ঈদের আগে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেওয়া কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে সৃষ্টি হবে শ্রম অসন্তোষ। তা ছাড়া সপ্তাহে দুই-তিন দিন গ্যাস বন্ধ রাখার প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ এতে আমরা প্রচুর বিদেশি অর্ডার থেকে বঞ্চিত হবো এবং নির্ধারিত সময়ে বিদেশে রপ্তানি করতে ব্যর্থ হবো।' বিজিএমইএ কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দপ্তরে চিঠি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম রপ্তানিকারক ফোরএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গওহর জামিল। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হঠাৎ এই গ্যাস সংকটের কারণে আমার কারখানার বয়লারে থাকা ১২ মেট্রিক টন কাঁচামাল নষ্ট হয়ে গেছে।'
ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্ধ বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়ার জবাবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেছেন, 'আমাদের সম্পদ সীমিত। তাই গ্যাস রেশনিং করতে হচ্ছে। তবে তৈরি পোশাক খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টিকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।'
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে অসংখ্য সিআর কয়েল, ঢেউটিন, স্টিল, রি-রোলিং, সিমেন্ট ও তৈরি পোশাকের কারখানা। এসব কারখানায় কর্মরত রয়েছে আনুমানিক পাঁচ লাখেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী। এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য থেকে সরকার ভ্যাট, আয়কর, অগ্রিম আয়কর থেকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আয় করে থাকে। এখন উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়লে বহুমুখী এসব রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। প্রতিটন রডে ৮২৫ টাকা ভ্যাট, লাভ হলে সেই লাভের ওপর আয়কর দেওয়া হয় ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রাম অঞ্চলে মাসে সোয়া লাখ টনেরও বেশি রড উৎপাদন করা হয়।
নোটিশ পাওয়ার কথা স্বীকার করে দেশের অন্যতম রড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিএসআরএমের নির্বাহী পরিচালক তপন সেনগুপ্ত গতকাল সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আজ (গতকাল বুধবার) গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার নোটিশ পেয়েছি আমরা। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে।' হতাশা ব্যক্ত করে তিনি আরো বলেন, সরকার কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় তা বোধগম্য নয়। সিইউএফএলের গ্যাসের দর হলো প্রতি ইউনিট দুই টাকা ৫৮ পয়সা। আর আমাদের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রতি ইউনিটের দাম নেয় পাঁচ টাকা ৮৬ পয়সা। আন্তর্জাতিক বাজারে এখন ইউরিয়া সারের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটানো সম্ভব। এতে সরকারের কয়েক শ কোটি টাকার রাজস্ব সাশ্রয় হবে।
শিল্পপতিদের এই অভিযোগের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, তাঁরা বন্ধ নয়, রেশনিং করছেন। গত রাতে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মিলকারখানা বন্ধ রাখার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২২ নভেম্বর পর্যন্ত এভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।' কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য গ্যাস সংযোগ বন্ধ_এই প্রশ্ন করলে সরকারি ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, 'তাঁরা বললে আমার কী করার আছে।'
সরকারি প্রতিষ্ঠান সিইউএফএল চালু করার জন্য ৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস দরকার। চট্টগ্রামের বর্তমান চাহিদা প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই বিপুল চাহিদার বিপরীতে গত ২০ অক্টোবর পাওয়া গেছে ২২৮ মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল তা কমে ২০৫ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে আসে। অর্থাৎ একদিকে সরবরাহ কমছে, অন্যদিকে সারকারখানা চালুর জন্য চাহিদা বাড়ছে।
সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গতকাল বিকেলে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার মালিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ। নগরীর খুলশীতে অবস্থিত বিজিএমইএ কার্যালয়ে এই বৈঠকে বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন চৌধুরী বলেন, 'কোরবানির ঈদের আগে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেওয়া কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে সৃষ্টি হবে শ্রম অসন্তোষ। তা ছাড়া সপ্তাহে দুই-তিন দিন গ্যাস বন্ধ রাখার প্রস্তাব আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ এতে আমরা প্রচুর বিদেশি অর্ডার থেকে বঞ্চিত হবো এবং নির্ধারিত সময়ে বিদেশে রপ্তানি করতে ব্যর্থ হবো।' বিজিএমইএ কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি ও শিল্পমন্ত্রী ও পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি দপ্তরে চিঠি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম রপ্তানিকারক ফোরএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গওহর জামিল। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'হঠাৎ এই গ্যাস সংকটের কারণে আমার কারখানার বয়লারে থাকা ১২ মেট্রিক টন কাঁচামাল নষ্ট হয়ে গেছে।'
ব্যবসায়ীদের ক্ষুব্ধ বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়ার জবাবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী সানোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেছেন, 'আমাদের সম্পদ সীমিত। তাই গ্যাস রেশনিং করতে হচ্ছে। তবে তৈরি পোশাক খাত যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টিকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।'
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে অসংখ্য সিআর কয়েল, ঢেউটিন, স্টিল, রি-রোলিং, সিমেন্ট ও তৈরি পোশাকের কারখানা। এসব কারখানায় কর্মরত রয়েছে আনুমানিক পাঁচ লাখেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী। এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্য থেকে সরকার ভ্যাট, আয়কর, অগ্রিম আয়কর থেকে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব আয় করে থাকে। এখন উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়লে বহুমুখী এসব রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। প্রতিটন রডে ৮২৫ টাকা ভ্যাট, লাভ হলে সেই লাভের ওপর আয়কর দেওয়া হয় ৪০ শতাংশ। চট্টগ্রাম অঞ্চলে মাসে সোয়া লাখ টনেরও বেশি রড উৎপাদন করা হয়।
No comments