'সম্পদকর' নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব-অযৌক্তিক মনে করছেন কর আইনজীবীরা by শেখ শাফায়াত হোসেন
চলতি অর্থবছর থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিকদের আয়করের সঙ্গে সারজার্চ দেওয়ার বিধান করেছে সরকার। এই বিধান অনুযায়ী, যেসব করদাতার নিট সম্পদের (দায়-দেনা বাদে যে সম্পদ) পরিমাণ দুই কোটি টাকার বেশি; তাঁদের আয়করের সঙ্গে আরো ১০ শতাংশ হারে বাড়তি টাকা সারচার্জ হিসাবে দিতে হচ্ছে। আয়করের সঙ্গে সম্পদের মালিকানার ওপর সারচার্জ আদায়ের বিষয়টি নিয়ে করদাতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। বিষয়টিকে যৌক্তিক মনে করছেন না কর আইনজীবীরাও।
এ বছর দুই কোটি টাকা আয়কর দিয়ে ঢাকা বিভাগের সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন বাংলামোটরের রিকান্ডশন গাড়ির ব্যবসায়ী মো. ইউনুছ আলী। প্রতিবছরই সময়মতো আয়কর বিবরণী (রিটার্ন) জমা দেন তিনি। এ বছর রিটার্ন জমা দেওয়ার পরে তিনি জানতে পেরেছেন, তাঁকে সারচার্জ হিসাবে আরো ২০ লাখ টাকা কর দিতে হবে। বিষয়টিকে অযৌক্তিক দাবি করে ইউনুস আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সম্পদের মালিকানার সঙ্গে আয়করের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। অথচ সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতেই এই সারচার্জ ধার্য করা হয়েছে।'
সারচার্জের বিষয়ে ঢাকা ট্যাঙ্সে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমিজউদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই আইন পাসের আগেই কর আইনজীবীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের আপত্তি উপেক্ষা করেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।' এ বছর থেকে আইনটি কার্যকর করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যেহেতু আইনটি পাস হয়ে গেছে, সেহেতু আইন অনুযায়ী করদাতাদের এখন থেকে সারচার্জ দিতে হবে।'
আয়করের সঙ্গে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে ধার্য করা সারচার্জ কতটুকু যৌক্তিক_এ প্রশ্নের জবাবে রমিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বিষয়টি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। কেননা এ আইনটি কেবল আয়করদাতাদের ওপর বলবৎ করা হয়েছে। যাঁদের দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে; কিন্তু করযোগ্য আয় নেই; তাঁরা এই সারচার্জের বাইরে থেকে গেছেন। আইন অনুযায়ী, সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে কর আরোপ করতে হলে করযোগ্য সম্পদ আছে_এমন সব নাগরিকের ওপর আরোপ করতে হবে।'
জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে চলতি অর্থবছর থেকে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের আয়করের সঙ্গে সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি বলেছিলেন, 'প্রত্যক্ষ করের মূলনীতি অনুযায়ী বেশি আয়ের লোকেরা বেশি কর দেবেন এবং কম আয়ের লোক কম কর দেবেন_এটাই বাঞ্ছনীয়।' এ বিবেচনায় ব্যক্তি করদাতাদের পরিসম্পদ ও দায় বিবরণীতে (রিটার্ন) প্রদর্শিত নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি টাকার বেশি হলে প্রদেয় করের ওপর ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করার প্রস্তাব করেন তিনি। তবে এই দুই কোটি টাকা হবে সম্পত্তি অর্জনকালে এর মূল্যের ভিত্তিতে। প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়, সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি পর্যন্ত হলে আয়করের সঙ্গে কোনো সারচার্জ আরোপিত হবে না। ২৯ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাসের পর চলতি অর্থবছর থেকে এই আইন কার্যকর হয়।
জাতীয় সংসদে গৃহীত নতুন এই আইনের আওতায় সারচার্জ আদায় করছে রাজস্ব বোর্ড। গতকাল রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর প্রশাসন) এম এ কাদের সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দেশে সম্পদকর আদায়ের বিধান নেই। তবে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে সারচার্জ আরোপের এই আইনটি এ বছরই পাস হয়েছে। আইন অনুযায়ী যাঁদের নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি টাকা, তাঁদের আয়করের সঙ্গে ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে।'
দেশের প্রচলিত আইনে সম্পদের ওপর প্রত্যক্ষভাবে কোনো ধরনের কর আরোপের বিধান নেই। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘোষণার আগে নানা মহল থেকে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে কর আরোপের প্রস্তাব করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হয়নি। ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের শাসনামলে সম্পদের ওপর কর আরোপ করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে এই আইন বলবৎ ছিল। ১৯৯৯ সালে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তৎকালীন সরকার এই আইন বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
সারচার্জের বিষয়ে ঢাকা ট্যাঙ্সে বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রমিজউদ্দিন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এই আইন পাসের আগেই কর আইনজীবীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। তাঁদের আপত্তি উপেক্ষা করেই এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।' এ বছর থেকে আইনটি কার্যকর করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যেহেতু আইনটি পাস হয়ে গেছে, সেহেতু আইন অনুযায়ী করদাতাদের এখন থেকে সারচার্জ দিতে হবে।'
আয়করের সঙ্গে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে ধার্য করা সারচার্জ কতটুকু যৌক্তিক_এ প্রশ্নের জবাবে রমিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'বিষয়টি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। কেননা এ আইনটি কেবল আয়করদাতাদের ওপর বলবৎ করা হয়েছে। যাঁদের দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে; কিন্তু করযোগ্য আয় নেই; তাঁরা এই সারচার্জের বাইরে থেকে গেছেন। আইন অনুযায়ী, সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে কর আরোপ করতে হলে করযোগ্য সম্পদ আছে_এমন সব নাগরিকের ওপর আরোপ করতে হবে।'
জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে চলতি অর্থবছর থেকে ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের আয়করের সঙ্গে সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি বলেছিলেন, 'প্রত্যক্ষ করের মূলনীতি অনুযায়ী বেশি আয়ের লোকেরা বেশি কর দেবেন এবং কম আয়ের লোক কম কর দেবেন_এটাই বাঞ্ছনীয়।' এ বিবেচনায় ব্যক্তি করদাতাদের পরিসম্পদ ও দায় বিবরণীতে (রিটার্ন) প্রদর্শিত নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি টাকার বেশি হলে প্রদেয় করের ওপর ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করার প্রস্তাব করেন তিনি। তবে এই দুই কোটি টাকা হবে সম্পত্তি অর্জনকালে এর মূল্যের ভিত্তিতে। প্রস্তাবনায় আরো বলা হয়, সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি পর্যন্ত হলে আয়করের সঙ্গে কোনো সারচার্জ আরোপিত হবে না। ২৯ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাসের পর চলতি অর্থবছর থেকে এই আইন কার্যকর হয়।
জাতীয় সংসদে গৃহীত নতুন এই আইনের আওতায় সারচার্জ আদায় করছে রাজস্ব বোর্ড। গতকাল রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর প্রশাসন) এম এ কাদের সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'দেশে সম্পদকর আদায়ের বিধান নেই। তবে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে সারচার্জ আরোপের এই আইনটি এ বছরই পাস হয়েছে। আইন অনুযায়ী যাঁদের নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি টাকা, তাঁদের আয়করের সঙ্গে ১০ শতাংশ হারে সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে।'
দেশের প্রচলিত আইনে সম্পদের ওপর প্রত্যক্ষভাবে কোনো ধরনের কর আরোপের বিধান নেই। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘোষণার আগে নানা মহল থেকে সম্পদের মালিকানার ভিত্তিতে কর আরোপের প্রস্তাব করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা গৃহীত হয়নি। ১৯৬৩ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের শাসনামলে সম্পদের ওপর কর আরোপ করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় ধরে দেশে এই আইন বলবৎ ছিল। ১৯৯৯ সালে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তৎকালীন সরকার এই আইন বিলুপ্ত ঘোষণা করে।
No comments