ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃষ্টি ও তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে

ব্রাজিলে গবেষকরা এবার রীতিমতো হিসাবনিকাশ করে দেখেছেন যে, বৃষ্টির পরিমাণ আর গড় তাপমাত্রা বাড়লে সেই সঙ্গে মশার প্রাদুর্ভাব ও ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাড়ে।
সত্যিই কি তাই? ব্রাজিলের রিও ডি জানিরো শহরের ‘ন্যাশনাল স্কুল অব পাবলিক হেল্থ’ শহরটির আবহাওয়াগত বিভিন্ন উপাদান ও ডেঙ্গু জ্বরের ঘটনা বাড়া কি কমার সম্পর্কটা বৈজ্ঞানিক উপায়ে নির্ধারণ করার চেষ্টা করেছে। এবং সেটা এক-দুই বছর ধরে নয়, বরং ২০০১ থেকে ২০০৯, অর্থাৎ ৯ বছর ধরে। প্রতিমাসে কতগুলো ডেঙ্গু জ্বরের ঘটনা ঘটছে, সে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে স্বাস্থ্য দফতর থেকে। রিও’র দিন ও রাত্রির তাপমাত্রার খতিয়ান দিয়েছে জাতীয় মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান। আর বৃষ্টির পরিমাণ জানিয়েছে রিও’র মিউনিসিপাল কর্পোরেশন।
এই তিন মিলে খতিয়ে দেখে গবেষকরা যে খুব নতুন কোন তথ্য আবিষ্কার করেছেন, এমন নয় সে কথা তারা নিজেরাই বলছেন। ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায় এডিস নামের এক মশা, যাদের দরকার বৃষ্টি কিংবা সেচ থেকে পরিষ্কার জল। ওদিকে তাপমাত্রা বেশি থাকলে তাদের ডিম ফুটতে ও ডিম থেকে বেরুনো শূককীটদের তাড়াতাড়ি বাড়তে সুবিধা হয়। রিও দক্ষিণ গোলার্ধে। সেখানে গরমকাল হল ডিসেম্বর থেকে মার্চ এবং সেই সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়। গবেষকরা দেখেছেন, কোন মাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এক ডিগ্রী বাড়লেই, পরের মাসে রিও’তে ডেঙ্গুর ঘটনা ৪৫ শতাংশ বেড়ে যায়। আর বৃষ্টিপাত ১০ মিলিমিটার বাড়লে পরের মাসে ডেঙ্গুর ঘটনা বাড়ে ছয় শতাংশ। এটাই হলো এই গবেষণা থেকে আবিষ্কৃত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দেখা গেছে, বৃষ্টিপাতের চেয়ে তাপমাত্রা, বিশেষ করে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ওপরই ডেঙ্গুর বাড়া-কমা নির্ভর করে। সব মিলিয়ে ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনা বাড়ে যখন দিন ও রাতের গড় তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশি হয়। এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধের পন্থা সম্পর্কেও গবেষকদের নতুন করে কিছু বলার নেই : মশারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে, এমন বদ্ধজলের এলাকাগুলো পরিষ্কার করা দরকার। এক্ষেত্রে ফুলের টবে জমা জল, এমনকি পুরনো প্লাস্টিকের বোতলে জমা জলকেও বাদ দিচ্ছেন না তারা। চৌবাচ্চার জল ঢেকে রাখাও একটা পন্থা।
জুবায়ের আব্দুল বারি
সূত্র : হেলথ সায়েন্স

No comments

Powered by Blogger.