জুনিয়র বৃত্তি ৪০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব-মাদ্রাসায় ছয় হাজার by মোশতাক আহমেদ

জুনিয়র বৃত্তির সংখ্যা ৪০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একই সঙ্গে প্রথমবারের মতো মাদ্রাসার ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নোমান উর রশীদ কালের কণ্ঠকে জানান, বর্তমানে অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ যত শিক্ষার্থীকে জুনিয়র বৃত্তি দেওয়া হয়, তা ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তরের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রথমবারের মতো মাদ্রাসার ছয় হাজার শিক্ষার্থীকেও বৃত্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর প্রকাশিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই বৃত্তি দেওয়া হবে। চলতি মাসের শেষ দিকে বৃত্তি ঘোষণা করা হতে পারে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, �এত (প্রস্তাব অনুযায়ী) বাড়ানো না গেলেও বৃত্তি কিছু বাড়ানো হবে। এ জন্য বাজেটের বিষয় আছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।�
এর আগে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন তিনি জানিয়েছিলেন, জুনিয়র বৃত্তির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
এতদিন অষ্টম শ্রেণীর বাছাই করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেয়ে এসেছে। মোট ২২ হাজার শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি দেওয়া হয়। এর মধ্যে মেধা (ট্যালেন্টপুলে) কোটায় সাত হাজার ও সাধারণ কোটায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী জুনিয়র বৃত্তি পেয়ে আসছে। মেধা কোটায় বৃত্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেক শিক্ষার্থী মাসে ৩০০ টাকা করে পায়। আর সাধারণ কোটার শিক্ষার্থীরা পায় মাসে ২০০ টাকা করে। এর বাইরেও বই কেনার জন্য মেধা কোটার শিক্ষার্থীরা বছরে ৩৭৫ টাকা এবং সাধারণ কোটার শিক্ষার্থীরা ২২৫ টাকা করে পেয়ে আসছে।
বর্তমান সরকার বৃত্তি পরীক্ষার পরিবর্তে বিদায়ী বছর থেকে জেডিসি ও জেএসসি পরীক্ষা চালু করেছে। এখন থেকে এ পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে। কাজেই আলাদা বৃত্তি পরীক্ষার আর প্রয়োজন হবে না। মাউশি অধিদপ্তরের প্রস্তাব অনুমোদন হলে আরো আট হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী জুনিয়র বৃত্তি পাবে।
মাউশি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তাঁদের পাঠানো প্রস্তাবটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখান থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর নূর জানান, বর্তমানে সরকারের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কোনো বৃত্তি দেওয়া হয় না। কেবল মাদ্রাসা বোর্ডের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বোর্ডের সাবেক এক চেয়ারম্যানের নামে পরিচালিত তহবিলের মাধ্যমে প্রতি জেলায় তিনজন করে শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেডিসি পরীক্ষার মাধ্যমে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও এবার সরকারের তরফ থেকে বৃত্তির আওতায় আনা হবে।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বৃত্তির সংখ্যাও ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫৫ হাজার করে। প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হলেও প্রাথমিক বৃত্তি দেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে।

No comments

Powered by Blogger.