চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বসানোর প্রস্তাব নাকচ-বিচারপতিদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার আহ্বান
চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ বসানোর সরকারি প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভা। গতকাল সোমবার বিকেলে বিস্তারিত আলোচনার পর এ সিদ্ধান্ত হয় বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
তবে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজন মনে করলে সংবিধানের ১০০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে দেশের যেকোনো জায়গায় সার্কিট বেঞ্চ বসাতে পারেন বলে ফুলকোর্ট মতামত দিয়েছেন।
এদিকে এ সভা থেকে প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিজ নিজ সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে তলব করায় এর তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
তবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. আশরাফুল ইসলাম সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আলোচ্যসূচি ছাড়াও আদালতের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা স্বাক্ষরিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলার এখতিয়ার তাঁর নেই।
প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সভাপতিত্বে গতকাল বিকেলে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী এ সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন, টিআইবির প্রতিবেদন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ বসানোর বিষয়টি ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। এ নিয়েই বেশি সময় আলোচনার পর প্রস্তাবটি অনুমোদন করেননি বিচারপতিরা।
সভায় একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের সম্পদ বিবরণী দাখিল করার তথ্য জানিয়ে অন্যান্য বিচারপতিকে সম্পদের হিসাব দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধান বিচারপতির এ আহ্বানকে বিচারপতিরা স্বাগত জানান বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া বিচার বিভাগ সম্পর্কে টিআইবির প্রতিবেদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন এবং টিআইবিকে চিঠি দেওয়ার তথ্য জানানো হয়। ঢালাওভাবে বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলায় বিচারপতিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে সন্ধ্যার পর সাংবাদিকরা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। রেজিস্ট্রার এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রতিশ্র�তি দেন। এ প্রতিশ্র�তি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে গত ২১ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৪-এর সিনিয়র সহকারী সচিব আজিজ আহমেদ ভূঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি সংযুক্ত করে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সফরকালে যেসব প্রতিশ্র�তি দেন, এর মধ্যে ১ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত বিষয়টি হচ্ছে, �চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট সেশন বেঞ্চ স্থাপন�-সংক্রান্ত।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্টের আসনসংক্রান্ত বিধানটি হলো : �১০০। রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে।�
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, �এমতাবস্থায় চট্টগ্রামে সার্কিট সেশন বেঞ্চ স্থাপন-সংক্রান্ত বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত প্রতিশ্র�তি অনুযায়ী সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদের আলোকে উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।�
ওই চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে ফুলকোর্ট সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের ওপর আলোচনা হয়।
সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম গত বছর ৪ ফেব্র�য়ারি চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির এক সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
এ ছাড়া রাজশাহী ও বরিশালের আইনজীবীরা ইতিমধ্যে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে সমিতিগুলো উল্লেখ করেছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ঢাকায় গিয়ে মামলা পরিচালনায় ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হয়।
এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় ১৯৮৮ সালের ৯ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সারা দেশে আরো ছয়টি স্থায়ী বেঞ্চ গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ওই বছরই ছয়টি শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ বসে। পরে আইনজীবীদের আন্দোলন এবং অষ্টম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধন অবৈধ ও বাতিল করেন। এ কারণে হাইকোর্টের ওই ছয়টি স্থায়ী বেঞ্চ বাতিল হয়।
এদিকে এ সভা থেকে প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিজ নিজ সম্পদের হিসাব জমা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে তলব করায় এর তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
তবে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. আশরাফুল ইসলাম সভার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আলোচ্যসূচি ছাড়াও আদালতের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা স্বাক্ষরিত না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলার এখতিয়ার তাঁর নেই।
প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সভাপতিত্বে গতকাল বিকেলে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় স্থায়ী এ সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন, টিআইবির প্রতিবেদন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ বসানোর বিষয়টি ছিল প্রধান আলোচ্য বিষয়। এ নিয়েই বেশি সময় আলোচনার পর প্রস্তাবটি অনুমোদন করেননি বিচারপতিরা।
সভায় একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের সম্পদ বিবরণী দাখিল করার তথ্য জানিয়ে অন্যান্য বিচারপতিকে সম্পদের হিসাব দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধান বিচারপতির এ আহ্বানকে বিচারপতিরা স্বাগত জানান বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া বিচার বিভাগ সম্পর্কে টিআইবির প্রতিবেদন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন এবং টিআইবিকে চিঠি দেওয়ার তথ্য জানানো হয়। ঢালাওভাবে বিচার বিভাগকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলায় বিচারপতিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে সন্ধ্যার পর সাংবাদিকরা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তথ্য জানতে চান। রেজিস্ট্রার এ বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রতিশ্র�তি দেন। এ প্রতিশ্র�তি বাস্তবায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে গত ২১ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেয়।
আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৪-এর সিনিয়র সহকারী সচিব আজিজ আহমেদ ভূঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠি সংযুক্ত করে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী গত ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সফরকালে যেসব প্রতিশ্র�তি দেন, এর মধ্যে ১ নম্বর ক্রমিকে উল্লিখিত বিষয়টি হচ্ছে, �চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট সেশন বেঞ্চ স্থাপন�-সংক্রান্ত।
উল্লেখ্য, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্টের আসনসংক্রান্ত বিধানটি হলো : �১০০। রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকিবে, তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লইয়া প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে অন্য যে স্থান বা স্থানসমূহ নির্ধারণ করিবেন, সেই স্থান বা স্থানসমূহে হাইকোর্ট বিভাগের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হইতে পারিবে।�
মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, �এমতাবস্থায় চট্টগ্রামে সার্কিট সেশন বেঞ্চ স্থাপন-সংক্রান্ত বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত প্রতিশ্র�তি অনুযায়ী সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদের আলোকে উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।�
ওই চিঠি প্রধান বিচারপতির কাছে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সুপ্রিম কোর্টে ফুলকোর্ট সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের ওপর আলোচনা হয়।
সাবেক প্রধান বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম গত বছর ৪ ফেব্র�য়ারি চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির এক সভায় চট্টগ্রামে সার্কিট বেঞ্চ হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
এ ছাড়া রাজশাহী ও বরিশালের আইনজীবীরা ইতিমধ্যে সার্কিট বেঞ্চ গঠনের দাবি জানিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে সমিতিগুলো উল্লেখ করেছে, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে ঢাকায় গিয়ে মামলা পরিচালনায় ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে হয়।
এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় ১৯৮৮ সালের ৯ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে সারা দেশে আরো ছয়টি স্থায়ী বেঞ্চ গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ওই বছরই ছয়টি শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ বসে। পরে আইনজীবীদের আন্দোলন এবং অষ্টম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে রিট হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধন অবৈধ ও বাতিল করেন। এ কারণে হাইকোর্টের ওই ছয়টি স্থায়ী বেঞ্চ বাতিল হয়।
No comments