ডিজিটাল যুগে তথ্য প্রাপ্তি by একরামুল হক শামীম
ইন্টারনেটের বিস্তৃত জগতে অনেক রকমের তথ্য পাওয়া যায়। কোনো একটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ইন্টারনেটে গিয়ে সার্চ দিলেই হয়। মুহূর্তেই হাজার হাজার ফলাফল এসে হাজির। ইন্টারনেটের তথ্য প্রাপ্তির সহজলভ্যতা বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।
একটা সময় ছিল যখন কেউ কিছু বললে বা লিখলে তার সত্যতা যাচাই করা তুলনামূলক কঠিন ছিল। ফলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল তথ্য প্রদানের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করা এখন অনেক কঠিন। কোনো কিছু বলা বা লেখার বিপরীতে তথ্যের সত্যতা যাচাই করে পাল্টা বক্তব্য হাজির করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে।
এখানে সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। বিক্ষোভ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ সম্প্রতি পিপার স্প্রে নামে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে এই স্প্রে শিক্ষকদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পিপার স্প্রের শিকার এক শিক্ষক এরই মধ্যে মারা গেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পিপার স্প্রেতে অসুস্থ হয়ে ওই শিক্ষকের মৃত্যু ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে পিপার স্প্রে ব্যবহারে মৃত্যুর শঙ্কার ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এতে মৃত্যুর শঙ্কা নেই। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, 'আগে থেকে অসুস্থ না থাকলে পিপার স্প্রেতে কোনো ব্যক্তির মরার সম্ভাবনা নেই। যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর যদি ময়নাতদন্ত করা হতো, তাহলে তা নিশ্চিত হওয়া যেত।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন জন ইন্টারনেট থেকে তথ্য খুঁজে হাজির করেছে। ১৯৯৫ সালের ১৮ জুন লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় প্রিপার স্পের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে। তাতে জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এই স্প্রে ব্যবহারে ৬১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। পিপার স্প্রের ক্ষেত্রে ক্যালিফোর্নিয়া কেস খুব আলোচিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় পুলিশ কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় পিপার স্প্রে প্রয়োগের কারণে ২৭ জনের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া পিপার স্প্রে ব্যবহারে চোখের কর্নিয়ার ক্ষতি, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, সাময়িক অন্ধত্বের ঘটনাও ঘটতে পারে। ইন্টারনেট থেকে বাংলাদেশে ব্যবহৃত পিপার স্প্রে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশে যে ব্র্যান্ডের স্প্রে বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে তার নাম সাবরে রেড ৯২ঐ২ঙ. যুক্তরাষ্ট্রের 'সিকিউরিটি ইকুইপমেন্ট করপোরেশন' কোম্পানির সাবরে রেড ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেছে, একেকটি স্প্রের দাম প্রায় ৪৮ ডলার করে। বাংলাদেশের পুলিশ ওই ব্র্যান্ডের সবচেয়ে তীব্র মাত্রার পিপার স্প্রে ব্যবহার করছে। নর্থ ক্যারোলিনা মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পিপার স্প্রের রাসায়নিকের প্রভাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এতে আকস্মিক মৃত্যুও ঘটতে পারে। এতসব তথ্য কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার পক্ষে কোনো যুক্তি দেয় না। পিপার স্প্রের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনা আগেও অনেকবার ঘটেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য একটি উদাহরণ মাত্র। এর মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়, তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারটি এখন অনেক সহজ। ফলে নিজের ইচ্ছামতো কোনো তথ্য বলে পার পাওয়া যায় না। সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল ২০১২ সালের মোট সার্চ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এতে জানা যায়, বছরটিতে সারাবিশ্ব থেকে ১.২ ট্রিলিয়ন সার্চ হয়েছে। ১৪৬টি ভাষায় মানুষ গুগলে তথ্য খুঁজেছে। ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার পরিমাণ বেড়েই চলছে। এই ডিজিটাল যুগে যেখানে সহজেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সেখানে আমাদের নীতিনির্ধারকরা তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক
থাকবেন কি?
এখানে সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। বিক্ষোভ দমনে বাংলাদেশ পুলিশ সম্প্রতি পিপার স্প্রে নামে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে। এরই মধ্যে এই স্প্রে শিক্ষকদের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পিপার স্প্রের শিকার এক শিক্ষক এরই মধ্যে মারা গেছেন। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পিপার স্প্রেতে অসুস্থ হয়ে ওই শিক্ষকের মৃত্যু ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে পিপার স্প্রে ব্যবহারে মৃত্যুর শঙ্কার ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এতে মৃত্যুর শঙ্কা নেই। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন, 'আগে থেকে অসুস্থ না থাকলে পিপার স্প্রেতে কোনো ব্যক্তির মরার সম্ভাবনা নেই। যে শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে, মৃত্যুর পর যদি ময়নাতদন্ত করা হতো, তাহলে তা নিশ্চিত হওয়া যেত।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন জন ইন্টারনেট থেকে তথ্য খুঁজে হাজির করেছে। ১৯৯৫ সালের ১৮ জুন লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় প্রিপার স্পের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে। তাতে জানা যায়, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে এই স্প্রে ব্যবহারে ৬১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। পিপার স্প্রের ক্ষেত্রে ক্যালিফোর্নিয়া কেস খুব আলোচিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় পুলিশ কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় পিপার স্প্রে প্রয়োগের কারণে ২৭ জনের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া পিপার স্প্রে ব্যবহারে চোখের কর্নিয়ার ক্ষতি, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, সাময়িক অন্ধত্বের ঘটনাও ঘটতে পারে। ইন্টারনেট থেকে বাংলাদেশে ব্যবহৃত পিপার স্প্রে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশে যে ব্র্যান্ডের স্প্রে বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে তার নাম সাবরে রেড ৯২ঐ২ঙ. যুক্তরাষ্ট্রের 'সিকিউরিটি ইকুইপমেন্ট করপোরেশন' কোম্পানির সাবরে রেড ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা গেছে, একেকটি স্প্রের দাম প্রায় ৪৮ ডলার করে। বাংলাদেশের পুলিশ ওই ব্র্যান্ডের সবচেয়ে তীব্র মাত্রার পিপার স্প্রে ব্যবহার করছে। নর্থ ক্যারোলিনা মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পিপার স্প্রের রাসায়নিকের প্রভাবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এতে আকস্মিক মৃত্যুও ঘটতে পারে। এতসব তথ্য কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথার পক্ষে কোনো যুক্তি দেয় না। পিপার স্প্রের মাধ্যমে মৃত্যুর ঘটনা আগেও অনেকবার ঘটেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য একটি উদাহরণ মাত্র। এর মাধ্যমেই স্পষ্ট হয়, তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের ব্যাপারটি এখন অনেক সহজ। ফলে নিজের ইচ্ছামতো কোনো তথ্য বলে পার পাওয়া যায় না। সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল ২০১২ সালের মোট সার্চ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এতে জানা যায়, বছরটিতে সারাবিশ্ব থেকে ১.২ ট্রিলিয়ন সার্চ হয়েছে। ১৪৬টি ভাষায় মানুষ গুগলে তথ্য খুঁজেছে। ইন্টারনেটে তথ্য খোঁজার পরিমাণ বেড়েই চলছে। এই ডিজিটাল যুগে যেখানে সহজেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে সেখানে আমাদের নীতিনির্ধারকরা তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্ক
থাকবেন কি?
No comments