সরকারকে আরও সময় দিতে চাই ॥ খালেদা জিয়া- সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়

সরকারের অপশাসনের বিরম্নদ্ধে সংসদের ভেতর-বাইরে প্রতিবাদ করার ঘোষণা দিলেন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। বলেন, "সরকারকে এক বছর সময় দিয়েছি।
সরকারকে আরও সময় দিতে চাই। আমরা সংসদে থাকব, রাজপথেও প্রতিবাদ জানাব। জনগণের সমস্যা ও দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু করা হলে তার প্রতিবাদ করব। জাতীয় ইসু্যতে দুই নেত্রীর একসঙ্গে বসার ব্যাপারে তিনি বলেন, "একতরফা বন্ধুত্ব হয় না। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে ডাকতেন, তবে আমি অবশ্যই যেতাম। কিন্তু তারা (সরকার) তো আমাদের ডাকে না।"
সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেল মিলনায়তনে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে খালেদা জিয়া এ মনত্মব্য করেন। জনাকীর্ণ এই মতবিনিময়সভায় খালেদা জিয়া সরকারকে তার নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের জন্য আবারও আহ্বান জানান। পাশাপাশি সরকারের দলীয়করণ, দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা তুলে ধরে দেশের বর্তমান অবস্থা ও সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি আবারও ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে 'সাজানো-পাতানো নির্বাচন' বলে আখ্যায়িত করে বলেন, জরম্নরী সরকারের সঙ্গে সমঝোতা ও অাঁতাত করেই বর্তমান সরকার ৰমতায় এসেছে।
মতবিনিময়কালে সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা সংসদে যোগদান, দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসা এবং অতীতের মতো হরতাল-অবরোধের মতো সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক কর্মসূচী পরিহারের আহ্বান জানান। মতবিনিময়ের আগে খালেদা জিয়া সবার সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কুশল বিনিময় করেন এবং শেষে সবাইকে চা-চক্রে আপ্যায়িত করেন।
২০০৭ সালে তত্ত্ববাবধায়ক সরকারের আমলে কারামুক্তির পর এই প্রথম খালেদা জিয়া সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক মতবিনিময় করলেন। চা-চক্রে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এ বি এম মূসা, আতাউস সামাদ; সম্পাদকদের মধ্যে দি ইন্ডিপেন্ডেন্টের মাহবুবুল আলম, প্রথম আলো'র মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম, কালের কণ্ঠের আবেদ খান, নিউজ টুডে'র রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের মোয়াজ্জেম হোসেন, অবজারভারের ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ইনকিলাবের এ এম এম বাহাউদ্দীন, মানবজমিনের মতিউর রহমান চৌধুরী, যুগানত্মরের এ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, নয়া দিগনত্মের আলমগীর মহিউদ্দীন, সংগ্রামের আবুল আসাদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমর তৌফিক ইমরোজ খালিদী, নিউএজের নুরম্নল কবীর, আমার দেশের মাহমুদুর রহমান, নিউ নেশনের মোসত্মফা কামাল মজুমদার, বাংলাদেশ টুডের অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল সৈয়দ সাহাবুদ্দিন আহমেদ, চ্যানেল আইয়ের শাইখ সিরাজ, ফরিদুর রেজা সাগর, এনটিভি'র এনায়েতুর রহমান বাপ্পী, চ্যানেল ওয়ানের অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম, বৈশাখী টিভি'র সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও দিগনত্ম টেলিভিশনের মোহাম্মদ হানিফ; সিনিয়র সাংবাদিকদের মধ্যে সাইফুল আলম, মঞ্জুরম্নল আহসান বুলবুল, মোহাম্মদ সানাউলস্নাহ, মঞ্জুরম্নল ইসলাম মঞ্জু, রহুল আমিন গাজী, আব্দুস শহীদ, এলাহী নেওয়াজ খান প্রমুখ।
এ সময় বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আর এ গনি, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, এম কে আনোয়ার, জমিরউদ্দিন সরকার, বেগম সারোয়ারি রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরম্নল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, সহসভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমীর খসরম্ন মাহমুদ চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ এবং খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারম্নফ কামাল খান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের শুরম্নতেই সাংবাদিকদের স্বাগত জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, "আমি সবার কথা শুনব। সবার সঙ্গে কথা বলব।' এরপর বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা বিরোধীদলীয় নেতাকে সংসদে ফিরে গিয়ে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, "এক বছর সময় দিয়েছি। সরকারকে আরও সময় দিতে চাই। আমরা সংসদে থাকব, রাজপথেও প্রতিবাদ জানাব। দ্রব্যমূল্যসহ জনগণের সমস্যা ও দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু করা হলে তার প্রতিবাদ আমরা করব।'
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রশ্ন রেখে বলেন, সংসদে যান, কথা বলুন। কিন্তু ছাত্র ধর্মঘট, হরতাল-অবরোধ কর্মসূচী পরিহার করম্নন। আমরা আওয়ামী লীগকেও একথা বলেছি, আপনাদেরও বলছি। এটা করা হলে আমরা তাঁদের বিপৰেই থাকব। ডেইলী স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, একটি দু'টি আসনের জন্য সংসদ বর্জন করা ঠিক নয়। পরিবেশ যাই-ই হোক, বিভিন্ন ইসু্যতে সংসদে গিয়ে কথা উচিত। প্রবীণ সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন, সংসদ কোন দলের কাছে ইজারা দেয়া হয়নি। আপনারা কেন সংসদে যাচ্ছেন না? সংসদে যান, গিয়ে কথা বলুন। নিউএজ সম্পাদক নুরম্নল কবীর বলেন, জনগণের চাপ ছাড়া কেন গণতন্ত্র চর্চা করবেন না? কমর্ীদের ভোটের মাধ্যমে কেন নেতা নির্বাচিত করা হয় না?
এসব প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, "শুধুমাত্র সংসদে ফিরে গেলেই সমস্যার সমাধান হবে না। গণমাধ্যমকে তার ভূমিকা পালন করতে দিতে হবে।" তবে হরতাল-অবরোধ আগামীতে দেয়া হবে কিনা, এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু না বলে খালেদা জিয়া বলেন, "গত একটি বছর আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি। কোন হরতাল করিনি, অবরোধ ডাকিনি। বরং সরকারের লোকেরাই কিশোরগঞ্জে হরতাল করেছে। আমরা বলছি না যে হরতাল করব। কিন্তু যেভাবে শ্রমিক ও সাংবাদিক নির্যাতন হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারী দলের ছাত্রলীগরা কী করছে? এর পরেও আমরা ধৈর্য ধরেছি। সরকারকে বলছি, তাদের নির্বাচনী ওয়াদাগুলো পূরণ করতে।"
সংসদে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সংসদে গেলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয় না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং সাংবাদিকদের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর প্রথম সংসদেই আমরা যোগ দিয়েছি। সংসদে সরকারকে সহযোগিতা করতে চেয়েছি। কিন্তু বাসত্মব ছিল ভিন্ন। সংসদে আওয়ামী লীগের পাতি নেতাদের বক্তব্যও টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হলেও আমার বক্তব্য পর্যনত্ম প্রচার করা হয় না। এ বিষয়গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য সম্পাদক ও সাংবাদিকদের শক্ত হাতে লেখা ও বলার অনুরোধ জানান তিনি।
খালেদা জিয়া বলেন, সরকারী দলেরই অনেকে বলছে আওয়ামী লীগ সংসদকে মাছের বাজারে পরিণত করেছে। সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সংসদে প্রতিদিনই বিরোধী দলের চরিত্র হনন করা হচ্ছে। স্পীকারকেও বলা হচ্ছে তিনি সংসদের চাকর! তিনি বলেন, এভাবে সংসদ চলতে পারে না। আমরা সংসদে যেতেই চাই। কিন্তু সরকারই চায় না আমরা সংসদে যাই। বিরোধী দল সংসদে থাক। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, আমরা যখন সংসদে যাওয়ার সিদ্ধানত্ম নিয়েছি, ঠিক তখনই বিরোধী দল সম্পর্কে কটূক্তিপূর্ণ মনত্মব্য করা হচ্ছে। এসব করা হচ্ছে যাতে বিরোধী দল সংসদে না যায়।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, সংসদে কথা বললেই গণতন্ত্র রৰা হয় না। সংসদের বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা মিছিল-মিটিং করতে গেলে সরকার থেকে বাধা দেয়া হচ্ছে। কোথাও আমরা সভা আহ্বান করলে আওয়ামী লীগ পাল্টা একই স্থানে কর্মসূচী দিয়ে ১৪৪ জারি করে প- করে দেয়া হচ্ছে। এটাই কী গণতন্ত্রের নমুনা? তিনি অভিযোগ করেন, সারাদেশে দুনর্ীতি, টেন্ডারবাজি, জমি-খালবিল-নদী-নালা সরকারী দলের লোকরা দখল করছে। শিৰাঙ্গনে ছাত্রলীগের তা-ব চলছে। মেধাবী এক ছাত্রকে ছাত্রলীগের কারণে জীবন দিতে হলো। অথচ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বললেন? সে ব্যাপারে তো সংবাদ মাধ্যমে কিছু লেখা হচ্ছে না? একুশের বইমেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে তাঁর পিতাকেই তিনি ছোট করেছেন।
এপির ফরিদ হোসেন বিরোধীদলীয় নেত্রীর উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেছেন বলে আপনি অভিযোগ করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন, কোন গোপন চুক্তি করেননি। কী গোপন চুক্তি হয়েছে তা আপনি জানেন কিনা বা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দলীয়ভাবে কোন তদনত্ম করবেন কিনা? জবাবে দিতে গিয়ে ভারতের সঙ্গে কী 'গোপন চুক্তি' হয়েছে তা প্রকাশে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেননি বিরোধীদলীয় নেত্রী। তিনি বলেন, "ভারত সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী গোপন চুক্তি করেছেন, তা আমরা সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনেছি। প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর নিয়ে সংসদে অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে কী কী চুক্তি করেছেন সে সম্পর্কে কোন কথা বলেননি। তিনি ভারত সফরে গিয়ে কী কী চুক্তি হয়েছে তা সংসদে প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
কালের কণ্ঠের সম্পাদক আবেদ খান প্রশ্ন রেখে বলেন, দুই নেত্রীর মধ্যে কেন সংলাপ হয় না, সরাসরি কেন কথা হয় না? আপনি (খালেদা জিয়া) এক সময় শেখ হাসিনার বাড়ি গেছেন। এখন যান না। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে দুই নেত্রীকে একসঙ্গে বসে কথা বলতে হবে। আর না হলে দেশ আরও বিপর্যয়ের দিকে যাবে। এর দায় থেকে আপনিও রৰা পাবেন না।
অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রশ্ন রেখে বলেন, যত বাধা বা ব্যক্তিগত সমস্যা থাকুক না কেন, দেশের স্বার্থে দুই নেত্রীকে আরও কাছাকাছি আসতে হবে। সেনাকুঞ্জে আপনারা এক হতে পারলে গণকুঞ্জে কেন এক হতে পারবেন না? দুই নেত্রী ঐকমত্য হলে দেশে আর ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি হবে না।
প্রবীণ সাংবাদিক আতাউস সামাদ বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় দুই নেত্রী এক বাড়িতে ছিলেন। আবার যেন সেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে এটাই আমরা চাই।
জবাবে বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেন, "আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু তারা তো ডাকে না। একতরফা বন্ধুত্ব হয় না। সরকার ডাকলে আমরা আলোচনা করব।"
অন্যান্য প্রশ্নের জবাবে বিরোধীদলীয় নেত্রী বলেন, সংবাদ মাধ্যমের ওপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। জরম্নরী অবস্থার সরকারের মতোই বর্তমান সরকার আচরণ করছে। কারণ যারা সাহস করে গণমাধ্যমে লিখছে, টকশোতে কথা বলছে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। জরম্নরী অবস্থায় যা হয়েছে, এখনও তা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তা হলে কী এ সরকারের আড়ালে জরম্নরী সরকার দেশ চালাচ্ছে?
ওয়ান ইলেভেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জরম্নরী সরকার কারা এনেছে তা জনগণ জানে। নির্বাচনের আগেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছিলেন, জরম্নরী সরকারের সকল কর্মকা-ের বৈধতা দেবেন। কিন্তু আমাদের দলের কেউ এসব কথা বলেননি। ফখরম্নদ্দীন-মইনউদ্দীনরা সাংবিধানিকভাবে দেশ চালায়নি। ওই সময় বিএনপি ও জোট নেতাদের ওপর হামলা-নির্যাতন চলেছে। তিনি বলেন, আমার কারাবরণের পর জরম্নরী সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতা হয়েছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগকে তারা ৰমতায় এনেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, যে কারণে আমরা নির্বাচনে যেতে চাইনি। জরম্নরী অবস্থার চেয়ে নির্বাচিত সরকার ভাল, এ কারণেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। বিএনপিই জরম্নরী অবস্থা উঠিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপির দাবি ছিল জরম্নরী অবস্থা প্রত্যাহার না করলে নির্বাচনে যাবে না। এই দাবির কারণেই জরম্নরী অবস্থা তুলে নেয়া হয়। কিন্তু পরে দেখলাম পাতানো-সাজানো নির্বাচন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি ৰমতায় আসতে না পারে, কিন্তু বিএনপি ৩০টি আসন পাবে, তা হতে পারে না। এ সরকার বিদেশীদের কাছে যে ওয়াদা করেছিল, ৰমতায় এসে তাই পালন করছে।
বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে খালেদা জিয়া বলেন, বিডিআরকে আগেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সীমানত্ম বলে কিছু নেই। সবকিছু অরৰিত। প্রতিদিন অবাধে চোরাচালান হচ্ছে। দেশের অভ্যনত্মরে প্রবেশ করে বিডিআর সদস্যদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে বিএসএফ। দ্রব্যমূল্য সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচনের আগে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে, ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। কিন্তু একটি বছরে নির্বাচনী একটি প্রতিশ্রম্নতি পূরণ করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। বাসত্মব চিত্র হচ্ছে, দেশে গ্যাস নেই, বিদু্যত নেই। পানির কি অবস্থা__ সরকারের সেদিকে কোন নজর নেই। তিনি বলেন, জরম্নরী সরকারে সময় দ্রব্যমূল্য যে অবস্থায় ছিল, এখনও একই অবস্থা। কিন্তু বিএনপির আমলে দ্রব্যমূল্য কম ছিল বলে দাবি করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
সরকারের বিরম্নদ্ধে দলীয়করণের অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, সরকার ৰমতায় এসেই নির্বিচারে দলীয়করণ করছে। প্রশাসনের প্রতিটি ৰেত্রে দলীয়করণ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি করে এমন অভিযোগ এনে প্রায় চার শ' কর্মকর্তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একই অবস্থা। ভিসি সরকারের দলীয় লোক। সরকারী দল ছাড়া কিছুই বোঝে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রদলের কোন ছেলেকে থাকতে দেয়া হয় না।
গণমাধ্যমের কাছে সহযোগিতা কামনা করে খালেদা জিয়া বলেন, আমি রাজনীতি করি কিছু চাওয়া-পাওয়ার জন্য নয়। আমি দেশের মঙ্গলের জন্য রাজনীতি করি। তাই সকলের কাছে সহযোগিতা চাই। আপনারা বিরোধী দলকে সহযোগিতা করম্নন। আমরা সংসদেও যাব, রাজপথেও থাকব।

No comments

Powered by Blogger.