চট্টগ্রাম-১২ উপনির্বাচন- আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান নির্বাচিত

চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৯৬৪ ভোট। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী গণফোরামের উজ্জ্বল ভৌমিক পেয়েছেন এক হাজার ৮৪৬ ভোট।
গতকাল বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণভাবে এ উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় নিরুত্তাপ এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে গতকাল দিনভর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের তোড়জোড় দেখা গেছে। কয়েকটি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মীরা জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবশ্য পরে ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, ৫১ দশমিক ০৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
আওয়ামী লীগের সাংসদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুতে এই আসনটি শূন্য হয়। তাঁরই ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী হন। এই আসনে ৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৫০ হাজার ২৫৭ জন।
সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বেশির ভাগ কেন্দ্রেই প্রথম এক ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১০-১৫টি। তবে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি হাইলধর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল কিছুটা বেশি। তাঁর বাড়ির সামনের বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিক্ষা কেন্দ্রে বেলা পৌনে দুইটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে এক হাজার ৭০৪টি। এখানে মোট ভোটার ছিলেন দুই হাজার ৬০৩ ভোট। আবার, আনোয়ারা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন হাজার ৬৮৫ ভোটের মধ্যে বেলা একটা পর্যন্ত পড়েছে মাত্র ৭৫০ ভোট। খিলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা ১১টা পর্যন্ত পড়েছে মাত্র ২৫২ ভোট। এখানে মোট ভোটার ১৭৩৬ জন। এই কেন্দ্রে ভোট দেন উজ্জ্বল ভৌমিক। সাইফুজ্জামান চৌধুরী আনোয়ারা সংসদীয় এলাকার ভোটার নন। তাই তিনি ভোট দিতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের নেতাদের চাপ: একাধিক প্রিসাইডিং কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, গতকাল দুপুরের পর বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটের পরিমাণ বাড়াতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা তৎপর হয়ে ওঠেন। এ সময় তাঁরা ভোট গ্রহণ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বলেন, ‘৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়লে এই নির্বাচন বাতিল হবে। তাই বেশি কড়াকড়ি করার দরকার নাই।’
এ জে চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সত্যজিৎ আচার্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেলা একটার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা কিছু যুবক নিয়ে এসে তাঁদের ভোট সংগ্রহ করতে বলেন। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, যাতে তাঁরা সফল না হন।’
শাহমিরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আবদুল খালেক নামের এক যুবককে জাল ভোট দিতে দেখা গেছে। এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মিলন কান্তি দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা জাল ভোটের ব্যাপারে চাপ দেওয়ার কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি।’

No comments

Powered by Blogger.