অবশেষে কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানি চালু হচ্ছে by মহসিন চৌধুরী

অবশেষে অনিশ্চয়তা কেটেছে চট্টগ্রামের জন্য নতুন গ্যাস বিপণন প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে নিয়ে। সোমবার চট্টগ্রামের জয়েন্ট স্টক কোম্পানি নতুন এ গ্যাস বিপণন কোম্পানির নিবন্ধন ইসু্য করেছে।
সে সঙ্গে অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার ওপর। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) গঠনে অনিশ্চয়তা কেটে যাওয়ায় এখন পরিচালনা পরিষদ গঠনে আর কোন বাধা থাকল না। শীঘ্র চট্টগ্রামে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমসের (বিজিএসএল) স্থলাভিষিক্ত হয়ে কেজিডিসি গ্যাস বিপণনের দায়িত্ব পাচ্ছে। সংশিস্নষ্ট সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রামকে নিয়ে নতুন গ্যাস বিপণন কোম্পানি গঠনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এখানকার গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের। বিজিএসএল থেকে গ্যাস সংযোগ পেতে নানা বিড়ম্বনার কারণে চট্টগ্রাম চেম্বার দীর্ঘদিন থেকে নতুন বিপণন কোম্পানি গঠনের দাবি করে আসছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নতুন কোম্পানি গঠনে চূড়ানত্ম প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও একশ্রেণীর আমলা এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখে। ফলে কেজিডিসিএল বাসত্মবায়নে বরাবরই বাধার মুখে পড়ে। গত নবেম্বর মাসে নতুন এ বিপণন কোম্পানির জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছিল সমন্বয়কের। কিন্তু এ সমন্বয়কের সঙ্গে অসহযোগিতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে গতি পাচ্ছিল না কার্যক্রম শুরম্নর। শেষ পর্যনত্ম সরকারের হসত্মেেপ তা নমনীয় হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের পূর্বে শেষ জনসভায় লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন বলে ঘোষণা দেয়ার পর এখানকার মানুষের প্রত্যাশার চাপ বর্তমান সরকারের ওপর বেড়ে যায়। এ বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রধানমন্ত্রী নতুন বিপণন প্রতিষ্ঠান গঠনে সকল বাধা দূর করার নির্দেশ দেন। শেষ পর্যনত্ম কর্ণফুলী গ্যাসের জন্য স্বার হয় এমওএ। জানুয়ারিতে অনুমোদন পাবার পর এ প্রকল্পের জন্য নিয়োগ করা হয় লোকবল। পেট্রো বাংলার কর্মকর্তারা ষোলশহরে বিজিএসএল কার্যালয়ে নতুন কোম্পানির প্রকল্প অফিসের জন্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। অবশেষে একমাস পর অনুমোদন মিলল নিবন্ধনের।
সূত্র জানায়, নতুন কোম্পানি হিসেবে সোমবার বিকেলে নিবন্ধন সনদ ইসু্য করেছে চট্টগ্রামের জয়েন্ট স্টক কোম্পানি। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশনের নিবন্ধন নং-৭৫০৯/১০। এ কোম্পানির সমন্বয়ক সানোয়ার হোসেন জানান, একই দিন গ্যাস বিপণনের জন্য বাণিজ্যিক লাইসেন্সও প্রদান করেছে ঐ দফতর। এতে বিপণন কোম্পানির কার্যক্রম শুরম্ন করতে আর কোন বাধা রইল না। এখন পেট্রো বাংলা নতুন কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ গঠন করলেই মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম শুরম্ন হবে। এর পরই অডিটর নিয়োগের মাধ্যমে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমসের সম্পদ ও এলাকা ভাগাভাগি করে দুটি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস বিপণন করতে পারবে। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিতাসের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলকে বাখরাবাদের অনত্মভর্ুক্ত করে চট্টগ্রাম অঞ্চলকে কর্ণফুলী ডিস্ট্রিবিউশনের নিয়ন্ত্রণে নিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছিল। নতুন বিপণন কোম্পানি চালু হলে চট্টগ্রামেই গ্রাহকরা গ্যাসের সংযোগ সংক্রানত্ম য বিষয়ে সমাধান পাবেন। এতে ব্যবসায়ীদের প্রধান কার্যালয় ও আঞ্চলিক কার্যালয়ের মধ্যে ফাইল নিয়ে টানাহেঁচড়ার দুর্ভোগ মুক্ত হতে সহায়তা করবে। পৃথক বিপণন কোম্পানি হিসেবে কার্যক্রম শুরম্নু করলে চট্টগ্রামে গ্যাস সঙ্কটের অনেকটা লাঘব হবে।
বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস '৮৩ সালে মূলত চট্টগ্রামকে নিয়েই যাত্রা শুরম্ন করেছিল। এ প্রতিষ্ঠানের অনত্মত ৯০ ভাগ গ্রাহক এবং ৯৫ ভাগের বেশি রাজস্ব আদায় হয়ে থাকে চট্টগ্রাম থেকে। কিন্তু গ্রাহকের জন্য বিড়ম্বনার অন্যতম বিষয় ছিল চূড়ানত্ম অনুমোদনের জন্য সিংহভাগ ফাইল কুমিলস্নার প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করতে হতো। এতে গ্রাহকদের সপ্তাহর পর সপ্তাহ অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটাতে হতো। '৯৪ সালে বৃহত্তর চট্টগ্রামকে পৃথক করে কর্ণফুলী গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড গঠনের প্রসত্মাব দেয়া হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে সাবেক্ উপদেষ্টা ড. হোসেন জিলস্নুর রহমানের কাছে চট্টগ্রাম চেম্বারসহ গ্রাহকদের দাবির মুখে নতুন বিপণন কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেন। ২০০৮ সালের ১৭ নবেম্বর কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গঠনের জন্য সরকারী গেজেট প্রকাশ হয়। এক বছর লেগে যায় সমন্বয়ক নিয়োগের জন্য। নানা বাধা উপো করে শেষ পর্যনত্ম কোম্পানি গঠন চূড়ানত্ম হয়। এখন মাঠ পর্যায়ে বিপণন কার্যক্রম শুরম্নর অপো। সংশিস্নষ্টরা আশা করছেন, নির্বাচনী ওয়াদা হিসেবে বর্তমান সরকারের আনত্মরিকতায় এ আকাঙ্ৰাও শীঘ্রই বাসত্মবায়ন হতে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.