ল্যান্ডফোনে সংযুক্ত হচ্ছে টিভি নেটওয়ার্ক- আসছে ইন্টারনেট ও ভিডিও চিত্র পাঠানোর সুবিধা by ফিরোজ মান্না
এবার ল্যান্ডফোনে সংযুক্ত হচ্ছে টিভি নেটওয়ার্ক। ল্যান্ডফোনের গ্রাহকরা কথা বলার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার এবং ভিডিও চিত্রও পাঠাতে পারবেন। প্রথমে রাজধানী ঢাকা এবং এরপর পর্যায়ক্রমে সারাদেশের বিটিসিএল (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড) গ্রাহকরা এ সুবিধা পাবেন।
অল্প খরচের মধ্যেই গ্রাহকরা এই সুবিধা ভোগ করবেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু জনকণ্ঠকে বলেন, উন্নত বিশ্বে টেলিফোন যেসব সুবিধা রয়েছে তার সব ব্যবস্থাই চালু করা হবে। ইউনিয়ন পর্যনত্ম টেলিফোন এক্সচেঞ্জ স্থাপন করা হবে।বিটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, 'ট্রিপল পেস্ন' সুবিধা উন্নত দেশে ল্যান্ডফোনে আগে থেকেই রয়েছে। এর আগে অনেক বার বাংলাদেশে এটি নিয়ে চিনত্মাভাবনা করা হলেও তা বাসত্মবে রূপ পায়নি। কিন্তু এবার এটি বাসত্মবতার মধ্যে চলে এসেছে। ইতোমধ্যে রাজধানীতে এ সেবা দেয়ার প্রসত্মুতিমূলক কাজ করেছে বিটিসিএল। সে জন্য নতুন ১ লাখ ৭১ হাজার টেলিফোন দেয়ার একটি প্রকল্প চালু করেছে কোম্পানিটি। আগামী এক বছরের মধ্যে এ সেবা গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। এই সংযোগ যেসব গ্রাহকের ঘরে থাকবে তাদের ইন্টারনেট সংযোগ পেতে বা কেবল টেলিভিশন চ্যানেল দেখার জন্য আলাদা সংযোগ নিতে হবে না। আবার আইপি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার কারণে এর খরচও হবে খুবই কম। একসঙ্গে তিনটি সুবিধা থাকলেও গ্রাহক চাইলে এর যে কোন দুটি নেয়া বা যে কোন দু'টি বাদও দিতে পারবেন।
জানা গেছে, প্রকল্পটিকে বাসত্মবতা দিতে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক তৈরি প্রয়োজন। সে কাজ করতে গত বছরের নবেম্বরে আনত্মর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর দরপত্র জমা নেয়ার শেষ তারিখ ছিল। বেশ কয়েকটি বিদেশী কোম্পানি দরপত্র কিনেছিল। বর্তমানে দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। জুনের আগেই বিজয়ী কোম্পানিকে কার্যাদেশ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন, টেলিযোগাযোগ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম খাবিরম্নজ্জামান।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরনো টিডিএম বা টাইম ডিভিশন মাল্টিপেস্নসিং প্রযুক্তির বদলে সর্বাধুনিক 'সফট সুইচ' প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। কপার কেবলের বদলে ব্যবহার করা হবে অপটিক্যাল ফাইবার। তাছাড়া রাজধানী ঢাকাকে ১৮৮টি এলাকায় ভাগ করে নতুন এ প্রযুক্তির নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। যাতে সমভাবে এই সেবা সব জায়গায় দেয়া সম্ভব হয়। ঢাকার পর সারাদেশে এ প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে ইতোমধ্যে ১০ লাখ টেলিফোনের অপর একটি প্রকল্পও গ্রহণ করেছে বিটিসিএল। তাতে করে ল্যান্ডফোনের সত্যিকারের সেবা গ্রাহকরা পেতে পারবেন।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) জিয়া আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা মহানগরীতে তারবিহীন দ্রম্নতগতির ইন্টারনেট ওয়াইম্যাক্স সেবা পাওয়া যাচ্ছে। বিকল্প সাবমেরিন কেবল স্থাপন হলে ইন্টারনেট সেবা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা বিসত্মারের জন্য বিটিআরসি কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার টার্গেট বাসত্মবায়ন করতে টেলিকম সেক্টরে বিদেশী বিনিয়োগে আকর্ষণ বাড়াতে হবে। ওয়াইম্যাক্স ব্যাপক ভিত্তিতে চালু হলে ইন্টারনেট প্রটোকল টেলিভিশন, এফএম রেডিও আর কেবল টেলিভিশন দেখার সুবিধা পাওয়া যাবে। তারবিহীন ইন্টারনেট প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিডিও চিত্র থেকে শুরম্ন করে নানা প্রকার তথ্য দ্রম্নত আদান-প্রদান করা সম্ভব হবে। নতুন এই প্রযুক্তিতে ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি থাকবে প্রতি সেকেন্ডে ১২৮ কিলোবাইট। বিশ্বের ১১০টি দেশে এই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, দেশে বর্তমানে ৫ কোটির ওপরে মোবাইল টেলিফোন রয়েছে। ২০১০ সালের মধ্যে দেশে ১০ কোটি মোবাইল গ্রাহক সৃষ্টি করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। দেশে টেলিফোন সেক্টরটি একটি সম্ভবনাময় সেক্টর। এই সেক্টরে বিনিয়োগ করার জন্য বিদেশী অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই সেক্টরে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশও আছে।
No comments