চারুশিল্প: প্রদর্শনী- তারুণ্যের দৃশ্যকল্প by মোবাশ্বির আলম মজুমদার
দৃশ্যকল্পে প্রাণ সঞ্চার ঘটে ক্যানভাসে রং, আকৃতি, রেখা, বিষয় ও উপস্থাপন বৈচিত্র্যে। ছয়জন তরুণ শিল্পীর এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোকে আমরা বোধের ঐক্য বলতে পারি।
বাংলাদেশের শিল্প আন্দোলনে দলীয় শিল্পচর্চার সংস্কৃতি নতুন নয়। দলবদ্ধ শিল্পযাত্রায় শামিল হয়ে আমাদের শিল্পকলাকে বিশ্ব শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত করেছেন অগ্রজ শিল্পীরা। শূন্য দশক-পরবর্তী সময়ে তরুণদের দলবদ্ধ শিল্পচর্চা ও প্রদর্শনীর আয়োজনে সেই উত্তরসূরিদের কাজের রেশ দেখা যায়। ৯ জানুয়ারি ঢাকা আর্ট সেন্টারে শুরু হওয়া ছয়জন শিল্পীর বিভিন্ন মাধ্যমের ৩০টি শিল্পকর্মের প্রদর্শনী আমাদের মনে করে দেয়, বিষয়-বৈচিত্র্য ও সমসাময়িক বিশ্ব শিল্পকলার প্রকাশভঙ্গি। প্রদর্শনীর শিরোনাম ‘জাংশান’ বা ‘জংশন’।
প্রদর্শনীর শিরোনাম ও দলবদ্ধ পথযাত্রা সম্পর্কে জংশনের সদস্য আমজাদ আকাশ জানান, ‘আমাদের এই দলটির সদস্যরা কলকাতা ও ঢাকার দুটি চারুকলা অনুষদে অধ্যয়নরত, এ ছাড়া উত্তীর্ণ শিল্পীরাও রয়েছেন। শিল্পকলার বিভিন্ন মাধ্যমে এই দলটি কাজ করবে। শুধু দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম সৃষ্টি নয়, এর সঙ্গে থাকবে পারফর্মিং আর্ট বা অভিনয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট শিল্প, স্থাপনাশিল্প, ভিডিও আর্ট, আলোকচিত্র ইত্যাদি বিষয়।’
শূন্য দশক-পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের জীবনযাপনে অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। প্রদর্শিত ছয় তরুণের শিল্পকর্মেও তথ্যপ্রযুক্তির ভাবনা, মানুষের দিনযাপন ও অন্তর্গত বোধের স্ফুরণ আমরা লক্ষ করি। ৩০টি কাজের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে অ্যাক্রিলিক, ড্রাই প্যাস্টেল, উড ইন্টাগলিও, তেলরং, এচিং, স্টোনওয়্যার উইথ গ্লেজ বা সিরামিকস শিল্পকর্ম। মাধ্যমের দিক থেকে দেখলে, এই ছয় শিল্পীর প্রত্যেকের সৃষ্টির মাধ্যম যেমন স্বতন্ত্র, তেমনি স্বকীয় দৃশ্যকল্পে বিষয় নির্মাণেও শিল্পীরা মনোযোগী।
ছাপচিত্র-মাধ্যমের কাজ নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন ইকবাল বাহার চৌধুরী (জন্ম ১৯৮৬)। তিনি কাজের মাধ্যম উড ইন্টাগলিও বা কাঠের পাটাতনে অবজেক্ট যুক্ত করে কাগজে ছাপ নেওয়া ছবিতে দুই রঙের ব্যবহারে ছবির বিষয়কে প্রকাশ করেছেন। জ্যামিতিক আকৃতিতে গড়া মানুষের অবয়ব ভেদ করে তীক্ষ রেখা ঊর্ধ্বমুখে চলাচল করছে। কখনো এসব ছবির শিরোনাম, ‘সম্পর্ক’, কখনো বা ‘সাইলেন্স’।
তপন হালদারের (জন্ম ১৯৮৪) এচিং ছাপচিত্রে মুখ বা মুখশ্রীই প্রধান। সাধারণ মানুষের মুখ আর রাজা-রানীর মুখের আলংকারিক সাজ প্রধান হয়ে উঠেছে ছবিতে।
উম্মে সোহাগ (জন্ম ১৯৮৫) শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিরামিকস বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এ প্রদর্শনীতে তাঁর সিরামিকসের চারটি কাজের মধ্যে দুটি স্টুডিও সিরামিকস আর একটি টেরাকোটা বা ফিগারেটিভ পোড়ামাটির কাজ। অন্যটি ফিগার—মানুষের দেহাবয়ব। গোলাকৃতির স্টুডিও সিরামিকসের গায়ে বুনট সৃষ্টির সঙ্গে পোড়ামাটির রঙের গ্লেজ আমাদের মনে এক স্থির ছন্দ তৈরি করে।
আমজাদ আকাশ (১৯৭৯) কাজ করেছেন ড্রাই প্যাস্টেল ও অ্যাক্রিলিক-মাধ্যমে। কাগজ ও ক্যানভাস—দুটি মাধ্যমেই বিষয় হিসেবে তিনি নিয়েছেন মানুষের দেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, সিলিন্ডার বা ফাঁপা গোলক আকৃতিকে। সমাজ-বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে আমজাদ ছবির শিরোনাম দিয়েছেন ‘ক্রাইং অব পলিটিকস’ বা ‘ট্রি প্লান্টেশন ইন হেড’।
এ ছাড়া আনিকা মরিয়ম আহমেদ (১৯৮৮) ক্যানভাস ও কাগজে তেলরঙে এঁকেছেন মানুষের অভিব্যক্তি ও দৈনন্দিন জীবনযাপনের মুহূর্ত। ফাতেমা মুন্নী ( ১৯৮০) এ প্রদর্শনীতে বাস্তবানুগ রীতিতে ফিগার ও জড়বস্তু এঁকে চিত্রতলে রঙের ছোপ ছোপ আঁচড়ে ফর্ম ভেঙেছেন।
ছয়জন তরুণ শিল্পীর কাজে আমরা নিরীক্ষার চেষ্টা খুঁজে পাই। দেখা যায় অগ্রজ শিল্পীদের কৌশলের ছাপও। তবে চিত্ররূপ ও উপাদানের সীমাবদ্ধতা জয় করেই তো শিল্পীদের এগিয়ে যেতে হয়। চিত্রতলের ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয় একমাত্র নিবিড় চর্চার মাধ্যমে। এই অনুজ শিল্পীরা নিশ্চয় সে ঝুঁকি মেনে নেবেন। প্রদর্শনীটি শেষ হয়েছে ১৪ জানুয়ারি।
প্রদর্শনীর শিরোনাম ও দলবদ্ধ পথযাত্রা সম্পর্কে জংশনের সদস্য আমজাদ আকাশ জানান, ‘আমাদের এই দলটির সদস্যরা কলকাতা ও ঢাকার দুটি চারুকলা অনুষদে অধ্যয়নরত, এ ছাড়া উত্তীর্ণ শিল্পীরাও রয়েছেন। শিল্পকলার বিভিন্ন মাধ্যমে এই দলটি কাজ করবে। শুধু দ্বিমাত্রিক ও ত্রিমাত্রিক শিল্পকর্ম সৃষ্টি নয়, এর সঙ্গে থাকবে পারফর্মিং আর্ট বা অভিনয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট শিল্প, স্থাপনাশিল্প, ভিডিও আর্ট, আলোকচিত্র ইত্যাদি বিষয়।’
শূন্য দশক-পরবর্তী সময়ে সারা বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তি মানুষের জীবনযাপনে অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। প্রদর্শিত ছয় তরুণের শিল্পকর্মেও তথ্যপ্রযুক্তির ভাবনা, মানুষের দিনযাপন ও অন্তর্গত বোধের স্ফুরণ আমরা লক্ষ করি। ৩০টি কাজের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহূত হয়েছে অ্যাক্রিলিক, ড্রাই প্যাস্টেল, উড ইন্টাগলিও, তেলরং, এচিং, স্টোনওয়্যার উইথ গ্লেজ বা সিরামিকস শিল্পকর্ম। মাধ্যমের দিক থেকে দেখলে, এই ছয় শিল্পীর প্রত্যেকের সৃষ্টির মাধ্যম যেমন স্বতন্ত্র, তেমনি স্বকীয় দৃশ্যকল্পে বিষয় নির্মাণেও শিল্পীরা মনোযোগী।
ছাপচিত্র-মাধ্যমের কাজ নিয়ে প্রদর্শনীতে এসেছেন ইকবাল বাহার চৌধুরী (জন্ম ১৯৮৬)। তিনি কাজের মাধ্যম উড ইন্টাগলিও বা কাঠের পাটাতনে অবজেক্ট যুক্ত করে কাগজে ছাপ নেওয়া ছবিতে দুই রঙের ব্যবহারে ছবির বিষয়কে প্রকাশ করেছেন। জ্যামিতিক আকৃতিতে গড়া মানুষের অবয়ব ভেদ করে তীক্ষ রেখা ঊর্ধ্বমুখে চলাচল করছে। কখনো এসব ছবির শিরোনাম, ‘সম্পর্ক’, কখনো বা ‘সাইলেন্স’।
তপন হালদারের (জন্ম ১৯৮৪) এচিং ছাপচিত্রে মুখ বা মুখশ্রীই প্রধান। সাধারণ মানুষের মুখ আর রাজা-রানীর মুখের আলংকারিক সাজ প্রধান হয়ে উঠেছে ছবিতে।
উম্মে সোহাগ (জন্ম ১৯৮৫) শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিরামিকস বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। এ প্রদর্শনীতে তাঁর সিরামিকসের চারটি কাজের মধ্যে দুটি স্টুডিও সিরামিকস আর একটি টেরাকোটা বা ফিগারেটিভ পোড়ামাটির কাজ। অন্যটি ফিগার—মানুষের দেহাবয়ব। গোলাকৃতির স্টুডিও সিরামিকসের গায়ে বুনট সৃষ্টির সঙ্গে পোড়ামাটির রঙের গ্লেজ আমাদের মনে এক স্থির ছন্দ তৈরি করে।
আমজাদ আকাশ (১৯৭৯) কাজ করেছেন ড্রাই প্যাস্টেল ও অ্যাক্রিলিক-মাধ্যমে। কাগজ ও ক্যানভাস—দুটি মাধ্যমেই বিষয় হিসেবে তিনি নিয়েছেন মানুষের দেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, সিলিন্ডার বা ফাঁপা গোলক আকৃতিকে। সমাজ-বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে আমজাদ ছবির শিরোনাম দিয়েছেন ‘ক্রাইং অব পলিটিকস’ বা ‘ট্রি প্লান্টেশন ইন হেড’।
এ ছাড়া আনিকা মরিয়ম আহমেদ (১৯৮৮) ক্যানভাস ও কাগজে তেলরঙে এঁকেছেন মানুষের অভিব্যক্তি ও দৈনন্দিন জীবনযাপনের মুহূর্ত। ফাতেমা মুন্নী ( ১৯৮০) এ প্রদর্শনীতে বাস্তবানুগ রীতিতে ফিগার ও জড়বস্তু এঁকে চিত্রতলে রঙের ছোপ ছোপ আঁচড়ে ফর্ম ভেঙেছেন।
ছয়জন তরুণ শিল্পীর কাজে আমরা নিরীক্ষার চেষ্টা খুঁজে পাই। দেখা যায় অগ্রজ শিল্পীদের কৌশলের ছাপও। তবে চিত্ররূপ ও উপাদানের সীমাবদ্ধতা জয় করেই তো শিল্পীদের এগিয়ে যেতে হয়। চিত্রতলের ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা অর্জন সম্ভব হয় একমাত্র নিবিড় চর্চার মাধ্যমে। এই অনুজ শিল্পীরা নিশ্চয় সে ঝুঁকি মেনে নেবেন। প্রদর্শনীটি শেষ হয়েছে ১৪ জানুয়ারি।
No comments