বাণিজ্যমেলা শেষ ॥ ২৫ কোটি টাকার স্পট রফতানি আদেশ

১৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে টানা ৩৮ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর গতকাল রবিবার শেষ হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব) ফারুক খান মেলায় অংশ নেয়া সেরা পারফরমেন্স প্রদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে ট্রফি তুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের দশটি দেশ এই মেলায় অংশ নিয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, প্রতিদিন গড়ে এক লাখ হারে ৩০ লাখেরও বেশি দর্শনাথর্ী মেলায় এসেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের ডিন প্রফেসর খালেদা রশিদকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট মূল্যায়ন কমিটি মেলায় অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপত্য সৌন্দর্য, সাজসজ্জা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পরিচালনা ও সেবার মান এবং রফতানিকারক হিসেবে অবদান এ জাতীয় ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল নির্বাচন করা হয়।
এদিকে নানা অনিয়ম ও অঘটনের জন্য যেমন এই মেলা আলোচিত ছিল সব মহলে, তেমনি প্রাপ্তিও কম ছিল না। বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব) ফারম্নক খান মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জানান, এবারের মেলা থেকে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা পর্যনত্ম ২৫ কোটি টাকার স্পট রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে। তবে সর্বশেষ এই রফতানি আদেশের পরিমাণ ৩০ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে। চলতি অর্থবছরে রফতানি খাতে যে লৰ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে তার অর্জনে এই মেলা গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এই লৰ্যে ব্যবসা সহায়ক নানামুখী উদ্যোগ বাসত্মবায়নে কাজ করছে সরকার। আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা হবে বলেও তিনি জানান। একই সঙ্গে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে এ ধরনের মেলা আয়োজনের জন্য ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আনত্মর্জাতিক মানসম্পন্ন দীর্ঘ এক কিলোমিটারব্যাপী আধুনিক এক্সিবিউশন সেন্টার নির্মাণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এ বছর ৩৭টি আনত্মর্জাতিক মেলায় বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই ২০টি মেলায় বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে। আগামী ছয় মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত আরও ১৭টি আনত্মর্জাতিক মেলায় বাংলাদেশ অংশ নেবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইএর সভাপতি আনিসুল হক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সচিবের দায়িত্বে) মোসত্মফা মহিউদ্দিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রফতানি উন্নয়ন বু্যরোর ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ সাহাবউলস্নাহ ও মহাপরিচালক মোঃ আমির হোসেন প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই-এর সভাপতি আনিসুল হক বলেন, আমরা হয়ত দেশের আকার ও আয়তন বড় করে তোলতে পারব না। তবে ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে দেশের উন্নয়ন ঘটাতে অবশ্যই সৰম হব। এর জন্য ব্যবসায়ীদের দৰতা বৃদ্ধি ও পণ্যের গুণগত মান রৰা করতে হবে।
মেলায় বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টলে পণ্য প্রদর্শনে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি আনত্মর্জাতিক মানের মেলায় ব্যবসায়ীদের এ ধরনের কর্মকা- কোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আগামীতে মেলার স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই ধরনের প্রবণতা পরিহার করার আহ্বান জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.