শামীম-আইভী দুজনই অনড় by পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে শামীম ওসমান ও ডা. সেলিনা হায়াত আইভী কাউকেই দলীয় সমর্থন না দিয়ে ফের সমঝোতার পরামর্শ দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীসহ দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে গত এক সপ্তাহে কয়েক দফা বৈঠকের পরও তাঁরা নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকায় গতকাল সোমবার পর্যন্ত কাউকে সমর্থন দেওয়া হয়নি। দলের পক্ষ থেকে তাঁদের সঙ্গে আর কোনো সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করা হবে না বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র নিশ্চিত করেছে।দলের পক্ষ থেকে কাউকেই সমর্থন না দিলেও আওয়ামী লীগের তরফে শামীম ওসমানের জন্য তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

আবার শেষ মুহূর্তে আজ মঙ্গলবার নাটকীয়ভাবে দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর নামের ঘোষণাও আসতে পারে বলে দলের নেতাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, দুই প্রার্থী থাকলে নির্বাচনের ফল দলের বিপক্ষে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে দলের পক্ষ থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হতে পারে।
গতকাল রাতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন দুই প্রার্থী। দুজনই তাঁদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার ব্যাপারে অনড় থাকেন। তাঁদের এই শক্ত অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হয়নি। পরে দুই প্রার্থীই শেখ হাসিনাকে সালাম করে দোয়া নিয়ে গেছেন বলে গণভবন সূত্রে জানা গেছে। তবে শেখ হাসিনা দুজনকে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করার পরামর্শ দিয়েছেন। দুজনে সমঝোতায় ব্যর্থ হলে জয়লাভ কঠিন হবে বলেও দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীকে জানান শেখ হাসিনা।
মনোনয়নের ব্যাপারে দলীয় অবস্থান জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, আওয়ামী লীগের তরফে দুই প্রার্থীর সঙ্গে আর বৈঠক করা হবে না। দুজনকে নিজেদের মধ্যে বসে সমঝোতার জন্য দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। তিনি নির্বাচন কমিশনের আইনের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কাউকে দলীয় মনোনয়ন বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী। সে ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কোনো প্রার্থী থাকবেন না।
এর আগে বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের সমর্থনপ্রত্যাশী দুই প্রার্থীর একজনকে প্রতিমন্ত্রী ও দলের জেলা সভাপতি এবং অন্যজনকে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও কাউকেই অনড় অবস্থান ত্যাগ করানো যায়নি।
এক সপ্তাহ ধরে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে একাধিক বৈঠক করেও দল সমর্থিত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি ক্ষমতাসীন দলটি। ফলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের এক দিন বাকি থাকলেও জানা যায়নি দল সমর্থিত প্রার্থীর নাম।
গতকাল বিকেল ৫টার পর শামীম ওসমান গণভবনে আসেন। আইভী আসেন সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে। এ ছাড়া গণভবনে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের, মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক। প্রথমে দলীয় নেতাদের সঙ্গে এবং পরে শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করেন দুই সমর্থনপ্রত্যাশী।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান ও আইভী দুজনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামীকাল ১২ অক্টোবর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আর নির্বাচন হবে ৩০ অক্টোবর।