লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় আব্বাস

ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধান মাহমুদ আব্বাস স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থন লাভের জন্য ব্যাপক চেষ্টা শুরু করেছেন। এই চেষ্টার অংশ হিসেবে তিনি এখন এল সালভাদরে অবস্থান করছেন। মাহমুদ আব্বাস এল সালভাদরে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সাক্ষাত্ শেষে দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইয়ুরিসু ফুনেসের সঙ্গেও সাক্ষাত্ করেছেন। এল সালভেদরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুগো মার্টিনেস বলেছেন, তার দেশ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেয়ায় মাহমুদ আব্বাস প্রেসিডেন্ট মাইয়ুরিসু ফুনেসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
এল সালভাদর গত ২৫ আগস্ট স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে। তবে দেশটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ব্যাপারে জাতিসংঘে অনুষ্ঠেয় ভোটাভুটিতে তাদের অবস্থান কী হবে সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধান মাহমুদ আব্বাস এল সালভাদর সফর শেষ করে কলম্বিয়ায় যাবেন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল সান্তুসের সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন বলে কথা রয়েছে। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এর আগে ঘোষণা করেছিলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘে তাদের প্রতিনিধি ভোটদানে বিরত থাকবেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ছয় সদস্য অর্থাত্ ব্রাজিল, চীন, ভারত, লেবানন, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিল ছিল প্রথম দেশ যে কিনা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে। ব্রাজিলের পর আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, ইকুয়েডর, ভেনিজুয়েলা, নিকারাগুয়া ও কোস্টারিকা ১৯৬৭ সালের সীমানা নিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। এ পর্যন্ত ১৩০টির বেশি দেশ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করলেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রস্তাব উত্থাপিত হওয়ার পর বেশিরভাগ দেশ তাদের অবস্থান এখনও স্পষ্ট করেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লাতিন আমেরিকার বামপন্থী শাসিত দেশগুলো ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেয়া থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে এ দেশগুলোর আগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায়। অবশ্য ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনদানের এ প্রক্রিয়া ২০০৬ সালে লেবাননে ইসরাইলি আগ্রাসনের পর থেকে শুরু হয়েছে।
সে সময় ল্যাটিন আমেরিকার এ দেশগুলো লেবাননে ইসরাইলি হামলার তীব্র নিন্দা জানায়। গাজায় ইসরাইলি হামলার সময়ও এ দেশগুলো তেলআবিবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।
যাই হোক, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে এমন সব গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যারা স্বাধীনচেতা নীতি গ্রহণের পাশাপাশি মার্কিন আধিপত্যকামী নীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থন থেকে বোঝা যায়, এসব দেশ অনেক ক্ষেত্রেই আরব দেশগুলোর চেয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।

  
     

No comments

Powered by Blogger.