আশরাফুলের সেই ইনিংস by মাসুদ পারভেজ
বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া হয়ে গিয়েছিল আরো আগেই। তবু যেন দ্বিগুণবেগেই অধিনায়কত্বের প্রথম রোমাঞ্চটা মোহাম্মদ আশরাফুলের মাঝে ফিরিয়ে এনেছিল ২০০৭ সালের টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। প্রথম কোনো বিশ্ব আসরে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া বলে কথা! কত রকম ভাবনাই না তখন ভেতরে ভেতরে ডালপালা মেলছিল! এর মধ্যে কোনো কোনো ভাবনা আবার পথও হারাচ্ছিল। নিজের ব্যাটের হারানো সুর আর ছন্দ ফিরিয়ে আনতে প্রত্যয়ী এ সাবেক অধিনায়ক তেমন একটার কথা এখনো পরিষ্কার মনে করতে পারেন।
একদিন পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি বাংলাদেশ। কাজেই ঠিক করলেন সদলবলে দেখতে যাবেন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ। গেলেনও। গিয়েই যা দেখলেন তাতে তাঁর ভাবনা এলোমেলো হওয়া বিচিত্র ছিল না, "এক পর্যায়ে কেবলই ভাবছিলাম, 'আল্লাহই জানেন, কিভাবে ক্রিস গেইলকে আটকাব।' ওর সেঞ্চুরি দেখে খুব টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম।" সেদিন ৫৭ বলে ১১৭ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলা গেইল এখনো ঠিক তেমনই মারদাঙ্গা ব্যাটিং করে চলেছেন। সদ্যসমাপ্ত চ্যাম্পিয়নস লিগ টোয়েন্টি টোয়েন্টিতেও গেইল-ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে প্রতিপক্ষের বোলিং অ্যাটাক। তবে বোর্ডের সঙ্গে রেষারেষির কারণে গত বেশ কিছুদিনের মতো এ সিরিজে নেই ওই জ্যামাইকান। সুবাদে কোনো গেইল-ঝড়ের আগাম পূর্বাভাসে ভীত না হয়েই আজ সিরিজের একমাত্র টোয়েন্টি টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলতে নামছে মুশফিকুর রহিমের বাংলাদেশ।
আর প্রতিপক্ষ যখন ক্যারিবীয়রা, তখন গেইল না থাকলেও আশরাফুল কিন্তু চলে আসছেনই। এ ধরনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত জয়টাই তো এসেছিল তাঁর ব্যাটে চড়ে। এর আগে তাঁকে সেদিন চরম স্বস্তি দিয়েছিলেন সৈয়দ রাসেল, 'রাসেল প্রথম দুটো বল ডট দেওয়ার পর তিন নম্বর বলে পয়েন্টে অলকের ক্যাচ বানাল গেইলকে। গেইলের ঝড় থেকে তাই বেঁচে যাই।' কিন্তু ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংশেষে কিনা বেশ বিব্রতবোধই করছিলেন তখনকার বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'সেদিন আমার বোলিংয়ের শুরুটা ঠিকঠাকই ছিল। প্রথমে ২ ওভার বোলিং করে ১১ রান দিয়ে নেই ১ উইকেট। কিন্তু পরের ২ ওভারে আবার দিয়ে ফেলি ৪০-৪৫ রান (আসলে ৪৪, সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৫৫)। ভালো অবস্থায় থাকার পর এতগুলো রান দিয়ে ফেলায় শুধু আমি কেন, দলের সবাই খুব আপসেট ছিল।'
বলা বাহুল্য, ব্যাট হাতে সেদিন পাপমোচন করেছিলেন আশরাফুল। ক্যারিবীয়দের ১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে ২০ বলেই করে ফেলেছিলেন ফিফটি (ওই আসরেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যুবরাজ সিং ১২ বলে ফিফটি করার আগেই সেটিই কয়েক দিনের জন্য ছিল টোয়েন্টি টোয়েন্টির দ্রুততম)। শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৬১ রানের ইনিংসে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে গেইলের সেঞ্চুরির পরও হারায় ক্যারিবীয়দের বিদায়। এমন ম্যাচ উইনিং ইনিংস আরো খেলেছেন আশরাফুল, তবে মাঝখানে বেশ কিছুদিন ভাটার টান। কোচ জেমি সিডন্সের উপেক্ষাকেই এ জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নতুন হেড কোচ স্টুয়ার্ট ল'র আনুকূল্যে আবার তিনি পুরনো আশরাফুল হয়ে ফিরে আসছেন, 'মাঝখানে দুটো বছর আমার ব্যাটিং খুবই বাজে হয়েছে। তবে এখন কোচের সাপোর্ট পাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমার ব্যাটিং এখন আমার নিজের কাছেই ভালো লাগছে। নিজের ব্যাটিংয়ে নিজেই খুব মজা পাচ্ছি।'
আত্মবিশ্বাস ফিরে এলে সঙ্গে করে নিয়ে আসে স্বাভাবিক খেলাটাও। আশরাফুল জানান দিচ্ছেন সেটাও, 'আমার ন্যাচারাল শটগুলোও এখন ফিরে এসেছে। শর্ট বলে ন্যাচারাল যে পুল শট ছিল, মাঝখানে সেটা পুরো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন এটা ভালো হচ্ছে। পজিশন নিতে পারছি। মাঝখানে পজিশনে যেতে সমস্যা হতো।' আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটি 'আশরাফুলস শট' নামেই পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিল, সেই প্যাডেল স্কুপও এখন নতুন করে রপ্ত করার চেষ্টায় আছেন, 'শেষ টোয়েন্টি টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচে ওই শটটা খেলার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে টোয়েন্টি টোয়েন্টি তো ওরকম ইম্প্রোভাইজেশনই দাবি করে। এর আগে অনেক দিন শটটা খেলিইনি।'
বলতে বলতে আশরাফুলের মনে পড়ে গেল অনেক দিন ধরে আরেকটা ব্যাপারও ঘটছে না, 'সম্প্রতি আমি যেমন ব্যাটিং করছি, এ রকম করতে পারলে ভালো কিছুই হবে। অনেক দিন হয়েছে আমি বাংলাদেশকে জেতাই না। যেমন ব্যাটিং করছি তাতে আবার আমার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়।' তাহলে আশার ফুলটাও আবার প্রস্ফুটিত হয় এবং আবারও আশরাফুলের ব্যাটিং রোমাঞ্চে ভেসে যাওয়া যায়।
সেটা এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দিয়েই আবার শুরু হোক না!
আর প্রতিপক্ষ যখন ক্যারিবীয়রা, তখন গেইল না থাকলেও আশরাফুল কিন্তু চলে আসছেনই। এ ধরনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত জয়টাই তো এসেছিল তাঁর ব্যাটে চড়ে। এর আগে তাঁকে সেদিন চরম স্বস্তি দিয়েছিলেন সৈয়দ রাসেল, 'রাসেল প্রথম দুটো বল ডট দেওয়ার পর তিন নম্বর বলে পয়েন্টে অলকের ক্যাচ বানাল গেইলকে। গেইলের ঝড় থেকে তাই বেঁচে যাই।' কিন্তু ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংশেষে কিনা বেশ বিব্রতবোধই করছিলেন তখনকার বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'সেদিন আমার বোলিংয়ের শুরুটা ঠিকঠাকই ছিল। প্রথমে ২ ওভার বোলিং করে ১১ রান দিয়ে নেই ১ উইকেট। কিন্তু পরের ২ ওভারে আবার দিয়ে ফেলি ৪০-৪৫ রান (আসলে ৪৪, সব মিলিয়ে ৪ ওভারে ৫৫)। ভালো অবস্থায় থাকার পর এতগুলো রান দিয়ে ফেলায় শুধু আমি কেন, দলের সবাই খুব আপসেট ছিল।'
বলা বাহুল্য, ব্যাট হাতে সেদিন পাপমোচন করেছিলেন আশরাফুল। ক্যারিবীয়দের ১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে ২০ বলেই করে ফেলেছিলেন ফিফটি (ওই আসরেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যুবরাজ সিং ১২ বলে ফিফটি করার আগেই সেটিই কয়েক দিনের জন্য ছিল টোয়েন্টি টোয়েন্টির দ্রুততম)। শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৬১ রানের ইনিংসে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে গেইলের সেঞ্চুরির পরও হারায় ক্যারিবীয়দের বিদায়। এমন ম্যাচ উইনিং ইনিংস আরো খেলেছেন আশরাফুল, তবে মাঝখানে বেশ কিছুদিন ভাটার টান। কোচ জেমি সিডন্সের উপেক্ষাকেই এ জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নতুন হেড কোচ স্টুয়ার্ট ল'র আনুকূল্যে আবার তিনি পুরনো আশরাফুল হয়ে ফিরে আসছেন, 'মাঝখানে দুটো বছর আমার ব্যাটিং খুবই বাজে হয়েছে। তবে এখন কোচের সাপোর্ট পাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমার ব্যাটিং এখন আমার নিজের কাছেই ভালো লাগছে। নিজের ব্যাটিংয়ে নিজেই খুব মজা পাচ্ছি।'
আত্মবিশ্বাস ফিরে এলে সঙ্গে করে নিয়ে আসে স্বাভাবিক খেলাটাও। আশরাফুল জানান দিচ্ছেন সেটাও, 'আমার ন্যাচারাল শটগুলোও এখন ফিরে এসেছে। শর্ট বলে ন্যাচারাল যে পুল শট ছিল, মাঝখানে সেটা পুরো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন এটা ভালো হচ্ছে। পজিশন নিতে পারছি। মাঝখানে পজিশনে যেতে সমস্যা হতো।' আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেটি 'আশরাফুলস শট' নামেই পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিল, সেই প্যাডেল স্কুপও এখন নতুন করে রপ্ত করার চেষ্টায় আছেন, 'শেষ টোয়েন্টি টোয়েন্টি প্রস্তুতি ম্যাচে ওই শটটা খেলার চেষ্টা করেছি। বিশেষ করে টোয়েন্টি টোয়েন্টি তো ওরকম ইম্প্রোভাইজেশনই দাবি করে। এর আগে অনেক দিন শটটা খেলিইনি।'
বলতে বলতে আশরাফুলের মনে পড়ে গেল অনেক দিন ধরে আরেকটা ব্যাপারও ঘটছে না, 'সম্প্রতি আমি যেমন ব্যাটিং করছি, এ রকম করতে পারলে ভালো কিছুই হবে। অনেক দিন হয়েছে আমি বাংলাদেশকে জেতাই না। যেমন ব্যাটিং করছি তাতে আবার আমার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়।' তাহলে আশার ফুলটাও আবার প্রস্ফুটিত হয় এবং আবারও আশরাফুলের ব্যাটিং রোমাঞ্চে ভেসে যাওয়া যায়।
সেটা এই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দিয়েই আবার শুরু হোক না!
No comments