বিনিয়োগকারীদের হতাশা তীব্র হচ্ছে
শেয়ারবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশার মেঘ যেন কাটছেই না। একদিন বাজার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলে এর পরই চলছে টানা দরপতন। গত এক সপ্তাহের বাজারের মন্দা ভাব দেখে আশা হারিয়েছেন অনেকেই। এর ধারাবাহিকতায় গতকালও দরপতনের কবল থেকে বের হতে পারেনি শেয়ারবাজার।গতকাল সোমবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক কমে গেছে ১৪.৫৪ পয়েন্ট। আগের দিন রবিবার সূচক কমেছিল ১৯৪.৪১ পয়েন্ট। টানা এই দরপতনে লোকসানি বিনিয়োগকারীদের হতাশা আরো তীব্র হয়েছে। গতকালও ডিএসই ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন তাঁরা।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সিকিউরিটিজ ও এঙ্চেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল সোমবার। বৈঠকে বাজার সংশ্লিষ্টরা পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। বৈঠক শেষে এসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুঁজিবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। আর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়_সে বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বেশ কিছু কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়_সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
পরে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এসইসির মুখপাত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) সিনিয়র সহসভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আনতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সমাধানের পথ খুঁজছি। এসব পরিকল্পনা নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। বৈঠকে দুই স্টক এঙ্চেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এদিকে দরপতনে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা গতকাল ডিএসই ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। বিনিয়োগকারীদের একাংশ এসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন; কিন্তু এসইসির চেয়ারম্যানের আশ্বাস বিনিয়োগকারীদের হতাশা দূর করতে পারেনি।
চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিনিয়োগকারী জয়নুল আবেদিন কালের কণ্ঠকে বলেন, কারো আশ্বাসেই আর বিশ্বাস নেই। তিনি বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে পরিচালক সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। সেদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, 'আমরা কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল এসইসি সেগুলো পাস করে দেবে। এতে আগামী সপ্তাহে শুরু থেকেই বাজার ভালো হয়ে যাবে।'
জয়নুল আরো বলেন, 'সেদিন তাঁর কথায় বিশ্বাস করেছিলাম। বড় ছেলে জাহাঙ্গীরকে বিদেশে পাঠানোর জন্য জমি বেচে তিন লাখ টাকা জমিয়ে রেখেছিলাম। সালমান এফ রহমানের কথায় বিশ্বাস করে সেই টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করি; কিন্তু তারপর বাজার আরো পড়ে গেছে। আমার পোর্টফোলিও থেকে আরো ৯০ হাজার টাকা মাইনাস হয়ে গেছে।'
১৯৯৬ সালে দরপতনে জয়নুল আবেদিনের লোকসান হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। এবার ডিসেম্বরে শুরু হওয়া বিপর্যয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর লোকসান ৩০ লাখ টাকা। জয়নাল আবেদিন মাহ সিকিউরিটিজ হাউস ও আনোয়ার সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন। বিনিয়োগকারী কামাল হোসেন বলেন, দিনের শুরুতে যেভাবে দরপতন হচ্ছিল তাতে মনে হয়েছিল লোকসান দিয়ে বাজার থেকে বেরিয়ে যাব; কিন্তু বাজারে গুঞ্জন ওঠে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডিএসই নেতারা বৈঠক করবেন। এ গুঞ্জনের কারণে শেয়ার বিক্রি বন্ধ রাখি। আমিসহ অনেকেই এই বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি। এদিকে গতকালের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে ডিএসইতে মোট ২৫৪টি কম্পানির তিন কোটি সাত লাখ ৩৪ হাজার ২৯৯টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব কম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ১৩৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টি কম্পানির শেয়ারের দাম।
মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি ৮০ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭ টাকা। এটা আগের দিনের চেয়ে ৬৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম।
গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল_দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৫১ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬১২ টাকা।
লেনদেনের ভিত্তিতে গতকালের প্রধান ১০টি কম্পানি হলো_লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, গ্রামীণফোন, বেঙ্মিকো লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক, মবিল যমুনা লুব্রিক্যান্টস্, সামিট পাওয়ার, বেঙ্মিকো ফার্মা, এম আই সিমেন্ট, ইউসিবিএল ও মালেক স্পিনিং।
মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০টি কম্পানি হলো_ইবনে সিনা ফার্মা, রূপালী ইনস্যুরেন্স, রিলায়েন্স ১, রেকিট বেঙ্কিজার, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড প্রথম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, মিরাক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, আরামিট সিমেন্ট, কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্স, তাক্কাফুল ইনস্যুরেন্স ও এসিআই।
অন্যদিকে দাম কমার শীর্ষে থাকা প্রধান ১০টি কম্পানি হলো_মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড, বিডি অটোকারস্, পঞ্চম আইসিবি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন কেবলস্, চতুর্থ আইসিবি, শমরিতা হাসপাতাল, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস ও রিপাবলিক ইনস্যুরেন্স।
পরে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে এসইসির মুখপাত্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জের (ডিএসই) সিনিয়র সহসভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আনতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে সমাধানের পথ খুঁজছি। এসব পরিকল্পনা নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। বৈঠকে দুই স্টক এঙ্চেঞ্জ, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন, সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
এদিকে দরপতনে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা গতকাল ডিএসই ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন। বিনিয়োগকারীদের একাংশ এসইসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন; কিন্তু এসইসির চেয়ারম্যানের আশ্বাস বিনিয়োগকারীদের হতাশা দূর করতে পারেনি।
চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিনিয়োগকারী জয়নুল আবেদিন কালের কণ্ঠকে বলেন, কারো আশ্বাসেই আর বিশ্বাস নেই। তিনি বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক শেষে পরিচালক সালমান এফ রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। সেদিন তিনি আমাকে বলেছিলেন, 'আমরা কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল এসইসি সেগুলো পাস করে দেবে। এতে আগামী সপ্তাহে শুরু থেকেই বাজার ভালো হয়ে যাবে।'
জয়নুল আরো বলেন, 'সেদিন তাঁর কথায় বিশ্বাস করেছিলাম। বড় ছেলে জাহাঙ্গীরকে বিদেশে পাঠানোর জন্য জমি বেচে তিন লাখ টাকা জমিয়ে রেখেছিলাম। সালমান এফ রহমানের কথায় বিশ্বাস করে সেই টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করি; কিন্তু তারপর বাজার আরো পড়ে গেছে। আমার পোর্টফোলিও থেকে আরো ৯০ হাজার টাকা মাইনাস হয়ে গেছে।'
১৯৯৬ সালে দরপতনে জয়নুল আবেদিনের লোকসান হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। এবার ডিসেম্বরে শুরু হওয়া বিপর্যয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত তাঁর লোকসান ৩০ লাখ টাকা। জয়নাল আবেদিন মাহ সিকিউরিটিজ হাউস ও আনোয়ার সিকিউরিটিজ হাউসে লেনদেন করেন। বিনিয়োগকারী কামাল হোসেন বলেন, দিনের শুরুতে যেভাবে দরপতন হচ্ছিল তাতে মনে হয়েছিল লোকসান দিয়ে বাজার থেকে বেরিয়ে যাব; কিন্তু বাজারে গুঞ্জন ওঠে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডিএসই নেতারা বৈঠক করবেন। এ গুঞ্জনের কারণে শেয়ার বিক্রি বন্ধ রাখি। আমিসহ অনেকেই এই বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছি। এদিকে গতকালের বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে ডিএসইতে মোট ২৫৪টি কম্পানির তিন কোটি সাত লাখ ৩৪ হাজার ২৯৯টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব কম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩টির, কমেছে ১৩৬টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টি কম্পানির শেয়ারের দাম।
মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৫৫ কোটি ৮০ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭ টাকা। এটা আগের দিনের চেয়ে ৬৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা কম।
গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল_দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৫১ কোটি ৩৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬১২ টাকা।
লেনদেনের ভিত্তিতে গতকালের প্রধান ১০টি কম্পানি হলো_লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, গ্রামীণফোন, বেঙ্মিকো লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক, মবিল যমুনা লুব্রিক্যান্টস্, সামিট পাওয়ার, বেঙ্মিকো ফার্মা, এম আই সিমেন্ট, ইউসিবিএল ও মালেক স্পিনিং।
মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০টি কম্পানি হলো_ইবনে সিনা ফার্মা, রূপালী ইনস্যুরেন্স, রিলায়েন্স ১, রেকিট বেঙ্কিজার, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড প্রথম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, মিরাক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, আরামিট সিমেন্ট, কর্ণফুলী ইনস্যুরেন্স, তাক্কাফুল ইনস্যুরেন্স ও এসিআই।
অন্যদিকে দাম কমার শীর্ষে থাকা প্রধান ১০টি কম্পানি হলো_মার্কেন্টাইল ব্যাংক প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড, বিডি অটোকারস্, পঞ্চম আইসিবি, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন কেবলস্, চতুর্থ আইসিবি, শমরিতা হাসপাতাল, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস ও রিপাবলিক ইনস্যুরেন্স।
No comments