মিয়ানমারে পরিস্থিতির নাটকীয় উন্নতি হয়েছে

মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নাটকীয় উন্নতি ঘটতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের। সেনাসমর্থিত মিয়ানমার সরকার দেশটিতে রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র তাদের তরফ থেকে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা গতকাল সোমবার এ কথা জানিয়েছেন।এদিকে কারাবন্দি দুই হাজার ভিন্নমতাবলম্বী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিয়ানমার সরকার। সরকারি এক কর্মকর্তা গতকাল জানান, শিগগিরই এ ব্যাপারে ঘোষণা দেওয়া হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটির ওপর অবরোধ অব্যাহত রাখলেও সেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে সূচনা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ওবামা। পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল জানান, মিয়ানমারে গণতন্ত্রের আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চিসহ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সরকারপক্ষ আলোচনা শুরু করেছে। সরকারের আচরণ নিয়ে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও তিনি মনে করেন বিষয়টি অবহেলা করার মতো নয়। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।
ক্যাম্পবেল জানান, মিয়ানমারে অনেক বিরোধী নেতা-কর্মী কারাবন্দি থাকলেও এবং নৃতাত্তি্বক সংখ্যালঘুদের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন দমন করতে গিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও সরকার তার দৃষ্টিভঙ্গিতে হঠাৎ করেই পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, 'রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তিসহ অন্যান্য বিষয়ে আমাদের ইচ্ছার কথা তাদের স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি। তারা যেভাবে এগোবে, আমরাও সেভাবেই এগোব।'
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছে মিয়ানমার_এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায় মিয়ানমারের সাম্প্রতিক কয়েকটি কর্মকাণ্ডে। সম্প্রতি মিয়ানমার সরকার জনগণের প্রতিবাদের মুখে অপ্রত্যাশিতভাবে ৩৬০ কোটি ডলারের একটি বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। চীনের অর্থায়নে বাঁধটির নির্মাণ চলছিল। এ ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের তীব্র সমালোচনা করে চীন। সু চিও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কথা স্বীকার করেছেন। তবে এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি আগাম মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিয়ানমারের এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। কবে নাগাদ তাদের মুক্তি দেওয়া হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও তিনি বলেন, শিগগিরই এ ব্যাপারে ঘোষণা আসবে। আরেক কর্মকর্তা জানান, আগামীকাল বুধবার প্রেসিডেন্ট থিয়েন সেইন ভারত সফরে যাচ্ছেন। এর আগেই কারাবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হবে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.