হত্যার অপরাধে গ্রামের সবার শিরশ্ছেদ করা যেতে পারে
মানবাধিকার আল্লাহর বিধানের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ নাসের আল-বুসাইরি। গুলশানে নিজ বাসভবনে গতকাল সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত শুক্রবার আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদের মধ্যে দিয়ে আল্লাহর বিধান 'কিসাস' (প্রতিফল বা হত্যার বদলে হত্যা) কার্যকর করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে কিসাসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, হত্যার অপরাধ হলে একজনের জন্য কেবল আটজনই নয়, পুরো গ্রামের সবার শিরশ্ছেদ করা যেতে পারে। নরহত্যার ঘটনায় কিসাস কার্যকর করা নিহতের হক।
সংবাদ সম্মেলনে সৌদি রাষ্ট্রদূত অনুবাদকের মাধ্যমে আসন্ন হজ নিয়ে সৌদি সরকারের বিভিন্ন প্রস্তুতির বিবরণ দেন। এরপর সাংবাদিকদের কাছ থেকে হজবিষয়ক প্রশ্ন আহ্বান করা হয়। সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্নের ফাঁকে গত শুক্রবার সৌদি আরবে আট বাংলাদেশিকে শিরশ্ছেদ করার বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি আগে হজবিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এরপর অন্য ইস্যু আসতে পারে।
হজ বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে সাংবাদিকরা আবারও প্রসঙ্গটি তুললে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'একজন মিসরীয়কে হত্যার জন্য কিসাস নীতি কার্যকর করা হয়েছে। আমি তাঁদের জন্য দোয়া করছি। তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।' তিনি বলেন, 'এখানে সৌদি সরকারের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। তাঁরা (আট বাংলাদেশি) মিসরীয় নাগরিককে হত্যা করেছেন। তাঁদের ব্যাপারে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সৌদি আরব আল্লাহর বিধান কার্যকর করে।'
নাসের আল-বুসাইরি জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অপরাধীদের মাফ করে দেওয়ার অধিকার ছিল। যাঁদের ব্যাপারে কিসাস কার্যকর করা হয়েছে, তাঁদের জন্য 'রক্তপণ' দেওয়ার চেষ্টা বারবার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের মাফ করে দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যেদিন আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদ করা হলো, সেদিনই আফগানিস্তানের এক নাগরিককে হত্যার দায়ে এক সৌদি নাগরিকের শিরশ্ছেদ করা হয়। সৌদি নাগরিককে মাফ করার সুযোগ থাকলে আমরা কি তা করতাম না? কিন্তু নিহত আফগান নাগরিকের পরিবার তাঁকে মাফ করেনি। তাই তাঁর ক্ষেত্রেও কিসাস কার্যকর করা হয়।'
আট বাংলাদেশিকে শিরশ্ছেদের ঘটনার পর বাংলাদেশ-সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কোনো আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতীম দুই দেশ বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, অত্যন্ত গভীর ও অত্যন্ত পুরনো। আল্লাহর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও বাস্তবায়নের কারণে এ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।'
সৌদি আরবে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার চেয়ে মানবাধিকারকে আমরা ওপরে স্থান দিতে পারি না।'
সৌদি আদালতে অভিবাসীদের আরবি ভাষায় শুনানি বুঝতে না পারা ও আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ না থাকার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কোনো কোনো মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ থাকতে পারে। তবে ওই বিচার ছিল সৌদি আরবের ন্যায়বিচারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।' তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ দূতাবাস ও তাঁদের নিয়োগ করা অনুবাদকরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত আটজনই প্রকাশ্যে অপরাধ স্বীকার করেন। রিয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও মিসরের রাষ্ট্রদূত আসামিদের ক্ষমা পাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা সফল হননি।
সৌদি আরবে আরো কতজন বাংলাদেশির ওপর শিরশ্ছেদের খাঁড়া ঝুলছে, সে বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি ড. আবদুল্লাহ নাসের আল বুসাইরি। শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া বিদেশিদের দেহ সৌদি সরকার স্বজনদের কছে ফেরত দেয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আত্মীয়স্বজন চাইলে লাশ ফেরত না দেওয়ার কোনো বিধান নেই।' সৌদি সরকার কিছু না জানিয়েই আট বাংলাদেশির লাশ দাফন করেছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তার মন্তব্য প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
সম্প্রতি লন্ডনে এক সৌদি যুবরাজের হাতে তাঁর ভৃত্য নিহত হওয়ার ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া একই ধরনের হওয়া উচিত কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যদি এ ধরনের অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে অপরাধ সংঘটনের স্থান যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ীই বিচার হতে পারে।'
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'সৌদি সরকার এ বছর সারা পৃথিবী থেকে হজ করতে যাওয়া মুসলমানদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে। সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ নিজেই বিষয়টি তদারক করছেন। এত দিন হজের সময় শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপের স্থান সংকট থাকলেও এবার সমস্যার সমাধার করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপের জায়গায় পাঁচতলা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতে তা ১২ তলায় উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।'
রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বছর এক লাখ বাংলাদেশি হজে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। হজে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের ঢাকার সৌদি দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
হজ বিষয়ে প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে সাংবাদিকরা আবারও প্রসঙ্গটি তুললে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'একজন মিসরীয়কে হত্যার জন্য কিসাস নীতি কার্যকর করা হয়েছে। আমি তাঁদের জন্য দোয়া করছি। তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।' তিনি বলেন, 'এখানে সৌদি সরকারের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। তাঁরা (আট বাংলাদেশি) মিসরীয় নাগরিককে হত্যা করেছেন। তাঁদের ব্যাপারে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সৌদি আরব আল্লাহর বিধান কার্যকর করে।'
নাসের আল-বুসাইরি জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অপরাধীদের মাফ করে দেওয়ার অধিকার ছিল। যাঁদের ব্যাপারে কিসাস কার্যকর করা হয়েছে, তাঁদের জন্য 'রক্তপণ' দেওয়ার চেষ্টা বারবার করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সৌদি সরকারের মাফ করে দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যেদিন আট বাংলাদেশির শিরশ্ছেদ করা হলো, সেদিনই আফগানিস্তানের এক নাগরিককে হত্যার দায়ে এক সৌদি নাগরিকের শিরশ্ছেদ করা হয়। সৌদি নাগরিককে মাফ করার সুযোগ থাকলে আমরা কি তা করতাম না? কিন্তু নিহত আফগান নাগরিকের পরিবার তাঁকে মাফ করেনি। তাই তাঁর ক্ষেত্রেও কিসাস কার্যকর করা হয়।'
আট বাংলাদেশিকে শিরশ্ছেদের ঘটনার পর বাংলাদেশ-সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কোনো আশঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, 'মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতীম দুই দেশ বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, অত্যন্ত গভীর ও অত্যন্ত পুরনো। আল্লাহর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও বাস্তবায়নের কারণে এ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।'
সৌদি আরবে বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'আমরা মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠার চেয়ে মানবাধিকারকে আমরা ওপরে স্থান দিতে পারি না।'
সৌদি আদালতে অভিবাসীদের আরবি ভাষায় শুনানি বুঝতে না পারা ও আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ না থাকার বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'কোনো কোনো মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ থাকতে পারে। তবে ওই বিচার ছিল সৌদি আরবের ন্যায়বিচারের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।' তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ দূতাবাস ও তাঁদের নিয়োগ করা অনুবাদকরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্ত আটজনই প্রকাশ্যে অপরাধ স্বীকার করেন। রিয়াদে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও মিসরের রাষ্ট্রদূত আসামিদের ক্ষমা পাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা সফল হননি।
সৌদি আরবে আরো কতজন বাংলাদেশির ওপর শিরশ্ছেদের খাঁড়া ঝুলছে, সে বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি ড. আবদুল্লাহ নাসের আল বুসাইরি। শিরশ্ছেদের শিকার হওয়া বিদেশিদের দেহ সৌদি সরকার স্বজনদের কছে ফেরত দেয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আত্মীয়স্বজন চাইলে লাশ ফেরত না দেওয়ার কোনো বিধান নেই।' সৌদি সরকার কিছু না জানিয়েই আট বাংলাদেশির লাশ দাফন করেছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তার মন্তব্য প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই।
সম্প্রতি লন্ডনে এক সৌদি যুবরাজের হাতে তাঁর ভৃত্য নিহত হওয়ার ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া একই ধরনের হওয়া উচিত কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'যদি এ ধরনের অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে অপরাধ সংঘটনের স্থান যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ীই বিচার হতে পারে।'
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'সৌদি সরকার এ বছর সারা পৃথিবী থেকে হজ করতে যাওয়া মুসলমানদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে। সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ নিজেই বিষয়টি তদারক করছেন। এত দিন হজের সময় শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপের স্থান সংকট থাকলেও এবার সমস্যার সমাধার করা হয়েছে। পাথর নিক্ষেপের জায়গায় পাঁচতলা ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। আগামীতে তা ১২ তলায় উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে।'
রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বছর এক লাখ বাংলাদেশি হজে অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। হজে যেতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের ঢাকার সৌদি দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
No comments