২৩ বছরেও খোঁজ মেলেনি কল্পনা চাকমার, বিশিষ্টজনদের প্রতিক্রিয়া

পার্বত্য চট্টগ্রাম অধিকার আন্দোলনের নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৩ বছর পূর্ণ হল ১২ জুন। আজও তার খোঁজ মেলেনি। ঘটনার সাথে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলেও আজও এ নিয়ে তদন্তই শেষ হয়নি;  বিচার তো দূরের কথা।
এ অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনরত হিল উইমেনস ফেডারেশন জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভা ডেকে সরকারের  নিষ্ক্রিয়তার তীব্র সমালোচনা করেছে। অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, নারী নেত্রী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ তাদের বক্তব্যে 'দেশে লাগামহীন গুম, খুন, নারী নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অগণতান্ত্রিক শাসন এবং মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায়' গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসাথে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যাপক জনগণের আন্দোলন সংগঠিত করতে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে  রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের ঐক্যের আহ্বান জানান বক্তারা।  
এ প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া রেডিও তেহরানকে জানান, কল্পনা চাকমা থেকে শুরু করে সাগর-রুনি হত্যা, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে তনু হত্যা বা অতি সম্প্রতি মাইকেল চাকমা নিখোঁজ হবার ঘটনায় সরকারের গোয়েন্দা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ তাদের দায়িত্ব সম্পাদনে সফলতা দেখাতে পারেনি।
এ মানবাধিকার আইনজীবী আরো বলেন, এটা খুবই হতাশার বিষয় যে, এ জাতীয় বেশীরভাগ মামলায় দীর্ঘদিনেও তদন্ত শেষ হচ্ছে না; ফলে বিচারকার্যক্রমও শুরু হচ্ছে না।
তিনি বলেন, দু'একটি ঘটনায় রাজধানীর পুরোন ঢাকায় প্রকাশ্য রাজপথে বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ড বা নারায়ণগঞ্জে র‍্যাবের হাতে সাতজন খুনের মামলা বিচারের মুখ দেখেছে  কারণ এ নিয়ে জনগণের চাপ ছিল এবং গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা ছিল।
আজকে প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভায় বক্তারা অবিলম্বে কল্পনা চাকমার অপহরণসহ, পাহাড় ও সমতলে সংগঠিত সকল গুম, হত্যা ধর্ষণের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। একইসাথে পার্বত্য অঞ্চলে চলমান সশস্ত্র সংঘাত, অপহরণ, গুম, মিথ্যা মামলায় আটক এবং সন্ত্রাসী দুর্বৃত্তদের মদদ দেওয়া বন্ধ করার  জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
হিল উইমেনস ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমার সভাপতিত্বে অলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ফায়েজুল হাকিম, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সীমা দত্ত, বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি হাসিবুর রহমান, নারী নেত্রী বহ্নিশিখা জামালী, লেখক ওমর তারেক চৌধুরী প্রমূখ।