মেসিকে ছাপিয়ে উদয় নতুন মেসির

ডর্টমুন্ডে বিস্ফোরণ কান্ডে বরুসিয়া-মোনাকো ম্যাচ ভণ্ডুল যাওয়ার দিনই আর একটা বিস্ফোরণ ঘটল। এই বিস্ফোরণটা হলো মাঠে। য়ুভেন্তাস আর বার্সেলোনা ম্যাচে। লিওনেল মেসিদের ম্লান করে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে য়ুভেন্তাসকে জোড়া গোল করে জেতালেন পাওলো দিবালা। ১৫ মিনিটের ঝড়ে বার্সেলোনার রক্ষণ কাঁপিয়ে দিয়ে যান মেসির দেশের নতুন নায়ক। যাকে ফুটবল দুনিয়ায় এখন বলা হচ্ছে ‘নতুন মেসি।’০-৩ গোলে হার মেসিদের। খেলা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই য়ুভেন্তাসকে এগিয়ে দেন দিবালা। বার্সেলোনার বক্সের ডানদিক থেকে কুয়াদ্রাদো বল বাড়ান দিবালাকে। দ্রুত বাঁ পায়ে বলটা জালে জড়িয়ে দেন দিবালা। তার মিনিট ১৫ পরেই দিবালার দ্বিতীয় গোল। এ বার বার্সেলোনার বক্সের বাঁ-দিক থেকে। এ বারও বার্সার রক্ষণের ভুলে। দিবালাকে মার্কিং করার মতো বার্সেলোনার রক্ষণের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই সুযোগে বাঁ পায়ে চমৎকার শটে য়ুভেন্তাসকে ২-০ এগিয়ে দেন দিবালা। ইতালির ক্লাবের তৃতীয় গোল দ্বিতীয়ার্ধের গোড়ায়। এ বার কর্নার থেকে হেডে গোল করেন কিয়েল্লিনি। বিরতির পরপরই তিন গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর স্প্যানিশ ক্লাবের তরফে জবাব আসবে ধরে নিয়েছিল সমর্থকরা।

বিশেষ করে বার্সার বিখ্যাত এমএসএন রয়েছে যখন মাঠে। কিন্তু মেসি, সুয়ারেজ, নেইমারের ত্রিভুজও দ্বিতীয়ার্ধে য়ুভেন্তাসের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি। ঠিক যেমন এই ম্যাচে দিবালাকে রোখার হদিশ পায়নি বার্সার ডিফেন্ডাররা। তেইশ বছর বয়সী আর্জেন্টিনীয় স্ট্রাইকার শুধু মেসির দেশের জার্সিতেই নয়, জন্মসূত্রে ইতালি আর পোল্যান্ডেও খেলতে পারেন। দিবালার আর্জেন্তিনায় জন্ম হলেও দিবালার দাদার জন্ম পোল্যান্ডে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি আর্জেন্টিনায় পালিয়ে যান। আবার দিবালা দিদিমার জন্ম নেপলসের কাছে। বছর পাঁচেক আগে তিনি ইতালির নাগরিকত্বও পান। যদিও আর্জেন্টিনায় খেলার ইচ্ছেটাই যে তাঁর জোরালো সেটা বারবার বলেছেন দিবালা। এর আগে আর্জেন্তিনার অনূর্ধ্ব ১৭ এবং অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়েও ডাক পেয়েছিলেন। যদিও নামা হয়নি। কে জানত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মঞ্চে আর্জেন্তিনার মহাতারকার সামনেই এ ভাবে উত্থান হবে তার। লিওনেল মেসিদের দলকে একাই চূর্ণ করে দেবেন তিনি। প্রথম পর্বে তিন গোলে পিছিয়ে পড়ার পরে এখন বার্সেলোনা-য়ুভেন্তাসের ফিরতি ম্যাচে দুরন্ত কিছু করে দেখাতে হবে মেসিদের। যে রকম প্যারিস সঁ জরমেঁর বিরুদ্ধে হয়েছিল। প্রথম পর্বে ৪-০ হারার পরে অবিশ্বাস্য ভাবে দ্বিতীয় পর্বে ৬-১ ম্যাচ জিতে শেষ আটে উঠেছিলেন মেসিরা। য়ুভেন্তাসের বিরুদ্ধে সে রকমই অবিশ্বাস্য কিছু করতে পারেন কি না মেসিরা সেটাই দেখার।