ধর্ষকের কী শাস্তি হওয়া উচিত?
ভারতের একটি আদালত ধর্ষণের শাস্তিস্বরূপ অণ্ডকোষ কেটে নেয়া উচিত বলে মত দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে বিতর্ক। এর আগে ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি নিয়েও বিতর্ক হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশেই অবশ্য ধর্ষণের এ ধরণের শাস্তি রয়েছে। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের হাই কোর্ট সম্প্রতি শিশু ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে অণ্ডকোষকে কেটে ফেলে বা অন্যভাবে অকার্যকর করে তার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছে। ভারতে ধর্ষণ, বিশেষ করে শিশু ধর্ষণের প্রবণতা কমানোর জন্য এমন শাস্তির পক্ষে মত দিয়েছে চেন্নাইয়ের আদালত। এক বৃটিশ নাগরিকের রিট আবেদনের শুনানির সময় আদালত এই মত দেয়। এক স্কুলছাত্রকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বৃটেনের ওই নাগরিকের বিচার চলছে। মামলার আদেশে বিচারক বলেন, ‘শিশুদের যৌন নির্যাতনের শাস্তি নির্যাতনকারীকে খোজা করার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করে দেখতে পারে।’ চেন্নাই আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারতে শিশু নির্যাতন ৪০০ শতাংশের মতো বেড়েছে। দেশের কিছু ‘দানবের’ পাশাপাশি বিদেশিরাও ভারতে এসে শিশুদের নির্যাতন করছে বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণে দাবি করা হয়েছে। এর আগে দিল্লিতে নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের পর অপ্রাপ্তবয়স্ক এক ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবি ওঠে। তামিলনাড়ু রাজ্যের আদালত এবার শিশুদের যারা ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন করে তাদের খোজা করার আইন করার প্রস্তাব রাখল। ধর্ষনের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বা ধর্ষককে খোজা করে দেয়া অবশ্য নতুন কিছু নয়। চীন, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, ইরান, সৌদি আরব, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া, বাংলাদেশ, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার আইন রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী ধর্ষককে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়। আবার অনেক দেশে ধর্ষককে অণ্ডকোষ কেটে বা কৃত্রিমভাবে নিষ্ক্রিয় করে প্রজননে অক্ষম করে দেয়ারও আইন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও আছে এই আইন। অপরাধী স্বেচ্ছায় অণ্ডকোষ কেটে কিংবা রাসায়নিক ব্যবহার করে খোজা হতে চাইলে তার কারাবরণের মেয়াদও কমিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। ভারতের তামিলনাড়– রাজ্যের আদালত সব ধর্ষকের নয়, শুধু শিশুদের ধর্ষণকারীকে খোজা করার পক্ষে মত দিয়েছে। এক্ষেত্রে অপরাধের শিকারের বয়স অনুযায়ী অপরাধীর শাস্তি নির্ধারণ সম্ভব বা উচিত কিনা এই বিতর্কও নিশ্চয়ই দীর্ঘদিন চলবে।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
সূত্র: ডয়েচে ভেলে
No comments