চরাচর-আজ মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস by বিশ্বজিৎ পাল বাবু

মানবাধিকার সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের ১৮ ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেকেরই চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার রয়েছে। নিজ ধর্ম অথবা বিশ্বাস পরিবর্তনের স্বাধীনতাও রয়েছে প্রত্যেকের। একইভাবে ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেকেরই মতামত পোষণ ও প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে।


বিনা হস্তক্ষেপে মতামত পোষণ করা এবং যেকোনো উপায়ে রাষ্ট্রীয় সীমানা নির্বিশেষে তথ্য ও মতামত সন্ধান করা, গ্রহণ করা বা জানানোর স্বাধীনতা এই অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা অনুযায়ী জাতিসংঘ মুক্ত স্বাধীন মতামতভিত্তিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার জন্য সব রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। কিন্তু মৌলিক স্বাধীনতা সর্বত্র বিপর্যস্ত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় অব্যাহতভাবে চলে সেন্সর প্রথা_কারাদণ্ড প্রদান এবং কখনো কখনো মৃত্যুদণ্ড প্রদানের মাধ্যমে। জাতিসংঘ মনে করে, মুক্ত সাংবাদিকতার প্রাণ হচ্ছে সাংবাদিক।
আজ ৩ মে বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার মৌলিক নীতিমালা অনুসরণ, বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মূল্যায়ন, স্বাধীনতা রক্ষা করার শপথ গ্রহণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্ষতিগ্রস্ত ও জীবনদানকারী সাংবাদিকদের স্মরণসহ তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে ১৯৯৩ সাল থেকে এই দিনে বিশ্বের প্রতিটি দেশে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯১ সালে ইউনেসকোর ২৬তম সাধারণ অধিবেশনের সুপারিশ অনুযায়ী জাতিসংঘ ১৯৯৩ সাল থেকে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। মুক্ত সাংবাদিকতার মৌলিক চাহিদাগুলো চিহ্নিত করাই ছিল এর প্রধান লক্ষ্য। দিবসটিতে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকরা তাঁদের দায়িত্ব-কর্তব্যের পাশাপাশি অধিকারসচেতন হয়। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়।
গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক। গণমাধ্যম স্বাধীন হলেই তার সুফল সরকার তথা জনগণ পায়। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো আগের তুলনায় অনেকটা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে। দেশের সাংবাদিকরাও আজ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ।
তবু বিভিন্ন সময় নানামুখী সমস্যায় পড়তে হয় সাংবাদিকদের। নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকারও হতে হয় তাঁদের। আশঙ্কার বিষয়, এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগেরই বিচার হয় না। খোঁজ মেলে না খুনিদের। মাস তিনেক আগে ঘটে যাওয়া মেধাবী সাংবাদিক সাগর-রুনি দম্পতি হত্যাকাণ্ড নিয়েও চলছে নানা টালবাহানা। এসব একেবারে অপ্রত্যাশিত।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু

No comments

Powered by Blogger.