শুরু হচ্ছে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণঃ জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ চাই
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভারত বরাক নদীর টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ শুরু করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবে না ভারত।
টিপাইমুখে একতরফা বাঁধ নির্মাণের আশঙ্কাকে বিরোধীদলের ভারতবিরোধী প্রচারণা আখ্যা দিয়ে আপাতত এমন কোনো পরিকল্পনা না থাকার বিষয়টি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলেছিলেন মন্ত্রী ও সরকারি দলের নেতারা। বিষয়টি চাপা দেয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল তখনই। ভারতের প্রস্তুতি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে ভূমিকাই নিয়েছে সরকার। এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে গতকাল আমার দেশ-এ প্রকাশিত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ শুরুর খবর থেকে।
মনিপুরের হুইয়েন নিউজ সার্ভিসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুত্ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রো পাওয়ার কো-অপারেশন লিঃ (এনএইচপিসি) ও সাতলুজ জলবিদ্যুত্ নির্গম লিঃ (এসজেভিএন) এবং মনিপুর সরকারের সঙ্গে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে সমঝোতা স্বাক্ষর বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করেছে। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় ৮ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিতব্য প্রকল্পটির খুঁটিনাটি বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সেখানে প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে। আলোচনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এজন্য ৩০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করে বলে জানা গেছে।
সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর উত্স বরাক নদীর টিপাইমুখের অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭৮ মিটার উঁচুতে। ভূমিকম্পপ্রবণ এই স্থানে ৩৯০ মিটার লম্বা এবং ১৬২.৮ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট বাঁধ নির্মিত হলে পার্শ্ববর্তী ২৭৫.৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে যাবে। ফলে বাঁধটি ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। একই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ, ফসলি জমি ও বনভূমি, সব থেকেই উচ্ছেদ হতে হবে। ফলে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে মনিপুর ও ভারত জুড়ে প্রবল জনমত এবং নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া কারও পক্ষেই সম্ভব হয়নি। আদিবাসী জনগণ ও ওয়ার্ল্ড কমিশন অন ড্যামসের সুপারিশ উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে সেখানকার মানবাধিকার সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে। ভারতীয় জনগণের বিরোধিতা মোকাবিলার জন্য শুরু থেকেই আটঘাট বেঁধে নামার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে, সন্দেহ নেই।
কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে ভাটির দেশ বাংলাদেশের যে ক্ষতি তার বিরোধিতা করবে কে? অভিন্ন নদী বরাকের ওপর বাঁধ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সম্মতি নিতে বাধ্য ভারত সরকার। এমন আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে একতরফা এই বাঁধ নির্মিত হলে সিলেট বিভাগসহ দেশের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আর্থসামাজিক বিপর্যয় ভয়াবহ হয়ে উঠবে। সেখানে ফারাক্কার পরিণতি এড়াতেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণের প্রতিবাদ ও বিরোধীদলের আপত্তির মুখে মহাজোট সরকার যে আলো-আঁধারির আশ্রয় নিয়েছে সেটা পরিষ্কার। বিগত আমলে যেভাবে গঙ্গার পানি চুক্তি করে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া হয়েছিল, টিপাইমুখ নিয়ে আওয়ামী মহাজোট সরকারের ভূমিকাও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ভূমিকা এবং জাতীয় সংসদে খোলামেলা আলোচনার দাবি খুবই যুক্তিসঙ্গত।
ভারত একের পর এক দু’দেশের অভিন্ন ৫৪ নদীর ৪২টিতেই বাঁধ ও ব্যারাজ নির্মাণ করেছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হচ্ছে এদেশবাসীকে। অতএব নিজ থেকে সরকার আগ্রহী না হলে কালবিলম্ব না করে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতায় প্রবল জনমত গড়ে তোলা এবং বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে সরকারকে বাধ্য করা দরকার। সরকার যদি এক্ষেত্রে গড়িমসি করে তবে দেশপ্রেমিক জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মনিপুরের হুইয়েন নিউজ সার্ভিসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুত্ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রো পাওয়ার কো-অপারেশন লিঃ (এনএইচপিসি) ও সাতলুজ জলবিদ্যুত্ নির্গম লিঃ (এসজেভিএন) এবং মনিপুর সরকারের সঙ্গে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে সমঝোতা স্বাক্ষর বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করেছে। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় ৮ হাজার ১৮৯ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিতব্য প্রকল্পটির খুঁটিনাটি বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সেখানে প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে। আলোচনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এজন্য ৩০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করে বলে জানা গেছে।
সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর উত্স বরাক নদীর টিপাইমুখের অবস্থান সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭৮ মিটার উঁচুতে। ভূমিকম্পপ্রবণ এই স্থানে ৩৯০ মিটার লম্বা এবং ১৬২.৮ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট বাঁধ নির্মিত হলে পার্শ্ববর্তী ২৭৫.৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে যাবে। ফলে বাঁধটি ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। একই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থাপনাসমূহ, ফসলি জমি ও বনভূমি, সব থেকেই উচ্ছেদ হতে হবে। ফলে বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে মনিপুর ও ভারত জুড়ে প্রবল জনমত এবং নাশকতার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া কারও পক্ষেই সম্ভব হয়নি। আদিবাসী জনগণ ও ওয়ার্ল্ড কমিশন অন ড্যামসের সুপারিশ উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলা হয়েছে সেখানকার মানবাধিকার সংগঠনসমূহের পক্ষ থেকে। ভারতীয় জনগণের বিরোধিতা মোকাবিলার জন্য শুরু থেকেই আটঘাট বেঁধে নামার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে, সন্দেহ নেই।
কিন্তু টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে ভাটির দেশ বাংলাদেশের যে ক্ষতি তার বিরোধিতা করবে কে? অভিন্ন নদী বরাকের ওপর বাঁধ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সম্মতি নিতে বাধ্য ভারত সরকার। এমন আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করে একতরফা এই বাঁধ নির্মিত হলে সিলেট বিভাগসহ দেশের পূর্ব-দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আর্থসামাজিক বিপর্যয় ভয়াবহ হয়ে উঠবে। সেখানে ফারাক্কার পরিণতি এড়াতেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনগণের প্রতিবাদ ও বিরোধীদলের আপত্তির মুখে মহাজোট সরকার যে আলো-আঁধারির আশ্রয় নিয়েছে সেটা পরিষ্কার। বিগত আমলে যেভাবে গঙ্গার পানি চুক্তি করে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়া হয়েছিল, টিপাইমুখ নিয়ে আওয়ামী মহাজোট সরকারের ভূমিকাও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট ভূমিকা এবং জাতীয় সংসদে খোলামেলা আলোচনার দাবি খুবই যুক্তিসঙ্গত।
ভারত একের পর এক দু’দেশের অভিন্ন ৫৪ নদীর ৪২টিতেই বাঁধ ও ব্যারাজ নির্মাণ করেছে। এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ভোগ করতে হচ্ছে এদেশবাসীকে। অতএব নিজ থেকে সরকার আগ্রহী না হলে কালবিলম্ব না করে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতায় প্রবল জনমত গড়ে তোলা এবং বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে সরকারকে বাধ্য করা দরকার। সরকার যদি এক্ষেত্রে গড়িমসি করে তবে দেশপ্রেমিক জনগণকেই ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
No comments