৫০ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, রিজভী গ্রেপ্তার
গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিযোগে বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের ৫০ নেতার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করা হয়েছে। রাতেই বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভি আহমেদকে নয়া পল্টন থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। দু’টি মামলার মধ্যে একটিতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় বিস্ফোরক আইনে ২৮ জন ও তেজগাঁও থানায় গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে ৪৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। একই ব্যক্তিকে দু’টি মামলায় আসামি করার ঘটনাও ঘটেছে। রোববার মধ্যরাতে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা করে। দু’টি মামলাতেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। ফখরুল, সাদেক হোসেন খোকা ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এরই মধ্যে হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। বুধবার এ ব্যাপারে শুনানি হতে পারে। বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারে ইতিমধ্যেই পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এমকে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানার বাসায়। আসামি যারা: বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ১৮ দলীয় জোটের শরিক এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম, বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এমপি, এনপিপি সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নীলু, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্রিগেডিয়ার (অব.) আসম হান্নান শাহ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব আমানউল্লাহ আমান, রিজভী আহমেদ, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি এমপি, সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া এমপি, শাম্মী আখতার এমপি, নিলুফার চৌধুরী মনি এমপি, রেহানা আক্তার এমপি, মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবদুস সালাম, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক মীর শরফত আলী সপু, মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল সম্পাদক ইয়াছিন আলী, ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান খোকন, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম বুলবুল, ছাত্রশিবির নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, আবদুল জব্বার, মহানগর উত্তর যুবদলের সম্পাদক এসএম জাহাঙ্গীর, মহানগর দক্ষিণ যুবদল সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মজনু, যুবদল সহ-দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল সম্পাদক হাবীবুর রশীদ হাবিব, ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল মতিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল হক নাছির, মহানগর উত্তর ছাত্রদল সম্পাদক কামাল আনোয়ার, সাবেক কমিশনার আবুল বাসার, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার আনোয়ার হোসেন, মহিলা দল নেত্রী রেহানা আক্তার ডলি, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি এল রহমান, বিএনপির সাবেক ধর্মবিষয়ক সম্পাদক নবী সোলায়মান ও খিলগাঁও থানা বিএনপি সভাপতি ইউনুছ মৃধা। এজাহারে যা বলা হয়েছে: তেজগাঁও থানার মামলার এজাহারে তেজগাঁও থানার এসআই ইসমাইল মজুমদার উল্লেখ করেছেন, গত ২৯শে এপ্রিল রাত ৯টার দিকে ৬-৭টি মাইক্রোবাস যোগে উক্ত আসামিরা এসে মহাখালী রেল ক্রসিং থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় অবস্থান নেয়। এসময় তারা ঢাকা মেট্রো-জ- ১১২১০৯ নম্বরের একটি বাস থামানোর চেষ্টা করে। বাসটি থামতে না চাইলে বাসে থাকা সোহেল মিয়া ও জসিম চালককে জিম্মি করে বাসটি ফ্যালকন টাওয়ারের সামনে থামাতে বাধ্য করে। এসময় ধৃত আসামি সোহেল মিয়া, জসিম, মানিক রতন, কামরুজ্জামান রতন ও পলাতক আসামি আমানউল্লাহ আমান, মির্জা আব্বাস, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, মীর শরফত আলী সফু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আনিছুর রহমান খোকন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, এসএম জাহাঙ্গীর, মজনু, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, ইয়াছিন আলী, সাইফুল ইসলাম নীরব, শফিউল আলম প্রধান, শেখ শওকত হোসেন নীলু, আবদুল মতিন, ওবায়দুল হক নাছির, হাবীবুর রশীদ হাবিব, কামাল আনোয়ার, আবুল বাসার, আনোয়ার হোসেন, এল রহমান, নবী সোলায়মান, ইউনুছ মৃধা, বুলবুল, দেলোয়ার হোসেন সাঈদী, আবদুল জব্বারসহ অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জন আসামি ওই গাড়িটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। মামলার বাদী এসআই ইসমাইল মজুমদার আরও উল্লেখ করেন, বাস ভাঙচুরের সময় আমি তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করি। কিন্তু আসামিদের ত্রাসে ভীত-সন্ত্রস্ত যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পড়লে আসামিদের একজন ওই বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ওই এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। সঙ্গে সঙ্গে আমি বিষয়টি বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করি। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসার আগেই গাড়িটি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। তিনি আরও বলেন, আমি তখন ঘটনাস্থল থেকে সোহেল, জসিম, মানিক রতন ও কামরুজ্জামান রতনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। উক্ত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, এ ঘটনা ঘটানোর জন্য প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে নির্দেশনা, পরিকল্পনা ও অর্থায়ন করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এমকে আনোয়ার, ব্রি. হান্নান শাহ, সাদেক হোসেন খোকা, রুহুল কবির রিজভী, কর্নেল অলি আহম্মেদ, ডা. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ। এ আসামিরা ভয়ভীতি দেখিয়ে বেআইনি বল প্রয়োগে ঢাকা মেট্রো-জ -১১-২১০৯ যানবাহনে ক্ষতি করে ধারা ৪ ও ৫ আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন-২০০ সংশোধনী ২০১০-এ অপরাধ করেছে। বিস্ফোরক মামলার এজাহারে যা আছে: শাহবাগ থানার এ মামলা নম্বর-৪৪। মামলার বাদী এসআই হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২৯শে এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে বেতার যন্ত্রে খবর পাই সচিবালয়ের ২নং গেটের প্রায় ১০০ গজ পূর্বদিকে সীমানা সংলগ্ন রাস্তার ফুটপাতে এবং সীমানা প্রাচীরের ভেতরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে গাড়ি রাখা গ্যারেজের পশ্চিম পাশে দু’টি ককটেল কে বা কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে বিকাল সোয়া ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তিনজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ককটেলের ধ্বংসাবশেষের আলামত হিসেবে সংগ্রহ করি। পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি, ৩টা ৫৩ মিনিটে সচিবালয়ের পশ্চিম দিক থেকে একটি কালো রঙের মোটরসাইকেলযোগে দু’জন অজ্ঞাতনামা যুবক এসে ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করে দ্রুত পূর্বদিকে পালিয়ে যায়। ওইদিন বিএনপি ও সমমনা ১৮ দলের হরতাল চলাকালীন জনমনে আতঙ্ক ও জানমালের ক্ষতি সাধনের জন্য আসামি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ২৮ জন নেতা ও অজ্ঞাতনামা নেতৃবৃন্দ ষড়যন্ত্র করেছে। রতন রিমান্ডে, ডলি কারাগারে: এদিকে হরতাল চলাকালে রোববার বিকালে সচিবালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির নেতা কামরুজ্জামান রতনকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। মামলার অন্য আসামি রেহানা আক্তার ডলিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শাহবাগ থানা পুলিশ জানিয়েছে, ইন্সপেক্টর বিপ্লব কুমার শীল মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে রতনকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি (এলডিপি) অলি আহমদসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। শাহবাগ থানার এসআই হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক রোববার রাতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এদিকে বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতনকে রোববার রাত পৌনে একটার দিকে মৌচাক এলাকার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশটিভির কার্যালয়ের নিচ থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও তেজগাঁও থানা পুলিশ এজাহারে উল্লেখ করেছে, রতনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশে ফ্যালকন টাওয়ারের সামনে থেকে। রোববার রাত ৯টার দিকে ওই এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগকালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন এসআই তাজুল ইসলাম। তবে শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, রতনকে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছে। এতে মামলার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাইকোর্টে ব্যর্থ দৌড়ঝাঁপ: বিকাল ৪টার দিকে খবর আসে আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে আসছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনের কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন বিএনপি সমর্থক সিনিয়র আইনজীবীরা। সমিতির সভাপতি ছাড়াও সেখানে ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এজে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিঞা প্রমুখ। এরই মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকা, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের জামিন চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়। তবে হরতালের কারণে গতকাল হাইকোর্টের কোন বেঞ্চে বিচার কার্যক্রম চলেনি। আজও মে দিবসের ছুটির কারণে উচ্চ আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। গতকাল সন্ধ্যায় অথবা আজ বিশেষ কোন বেঞ্চে তিন বিএনপি নেতার জামিন আবেদনের শুনানি করার অনুরোধ নিয়ে বিএনপি সমর্থক সিনিয়র আইনজীবীরা প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। তবে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের আবেদনে কোন ধরনের সাড়া দেননি। তিনি তাদেরকে নিয়মিত বেঞ্চে জামিন আবেদন উত্থাপনের পরামর্শ দেন। সেখান থেকে বেরিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তিন বিএনপি নেতার জামিনের আবেদন বিশেষ বেঞ্চে শুনানির ব্যবস্থা করতে আমরা প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেছিলাম। অতীতে এ ধরনের অনেক নজির আছে। তবে প্রধান বিচারপতি আমাদের আবেদনে সাড়া দেননি। তিনি নরমাল বেঞ্চে শুনানি করতে বলেছেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান বিচারপতি আমাদের কথায় সম্মত হননি। আমাদের আশা পূরণ হয়নি। অথচ অতীতে গভীর রাতে আদালত বসে জামিন দেয়ারও নজির রয়েছে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের ভয় পেয়েছে। আমরা আদালত ও রাজপথে থাকবো। আমাদের আন্দোলন চলবে। বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি কাল: গ্রেপ্তার, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্য দিয়ে সারা দেশে পালিত হয়েছে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের হরতাল। টানা দুই দিনের হরতাল শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামীকাল সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। ইলিয়াসের সন্ধান দাবির পাশাপাশি হরতালে বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। হরতালের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিং দেন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। এদিকে প্রথম দিনের হরতালে বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগ মামলায় আত্মগোপনে গেছেন জোটের সিনিয়র নেতারা। হরতালের শুরুতেই সকালে নয়াপল্টন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হককে। সন্ধ্যায় কাকরাইল মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদকে। আগের রাতেই মৌচাক থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতনকে। এছাড়া ভোর থেকে দিনভর দফায় দফায় তল্লাশি চালানো হয় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস ও মহিলা দল সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানার বাসায়। ফলে হরতালের দ্বিতীয় দিন ছিল অনেকটাই নিরুত্তাপ। প্রথম দিনের হরতালের রাজধানীতে ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও কাল ছিল অনেকটাই ব্যতিক্রম। তবে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা মিছিল ও কয়েক জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে ককটেল বিস্ফোরণ এবং ধরপাকড়ের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দেশের বিভিন্ন জেলায় দ্বিতীয় দিনের হরতালেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধেছে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের। দ্বিতীয় দিনের হরতালে সারা দেশে ২০০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করেছে বিএনপি। এদিকে হরতালে রাজধানীর রাজপথ ছিল পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দখলে। সেই সঙ্গে নগরীর অলি-গলিতে র্যাব-পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তারপরও মূল সড়কগুলোতে টহল দিতে থাকে রায়ট কার। মোতায়েন করা হয় জলকামান। নগরীর গলির মোড়ে মোড়ে ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ, আনসার ও র্যাবের সতর্ক পাহারা। টহল দিতে থাকে ১০ ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে শুরু করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মহড়া। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সরকারি বাহিনীর পাশাপাশি দেখা যায় সরকারি দলের কর্মীদেরও। হরতালের কারণে দূরপাল্লার যান চলাচল না হলেও রাজধানীতে দুপুরের পর কিছু যানবাহন চলাচল করেছে। আন্দোলন স্তব্ধ করতেই মামলা -রিজভী: এদিকে বিকালে নয়াপল্টনে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, ইলিয়াস আলীকে ফেরত দেয়ার চলমান আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে ১৮ দলীয় জোটের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের নতুন অপকৌশল নিয়েছে সরকার। মামলার পেছনে সরকারের দুরভিসন্ধি রয়েছে। রোববার সচিবালয়ের সামনে বোমা বিস্ফোরণ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পোড়ানোর ঘটনা দু’টি সরকারের লোকজনই করেছে। রিজভী বলেন, ইলিয়াস ইস্যুকে অন্যদিকে প্রভাবিত করতেই সরকার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তারা ইলিয়াস আলীর ব্যাপারে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছেন এবং ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। তিনি বলেন, হরতালের দুই মামলায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আলমগীরসহ বিএনপি ও জোটের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা এবং বিভিন্ন সারির অর্ধশতাধিক নেতাকে আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল মির্জা আলমগীরের। কিন্তু তার জামিন আবেদন শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বিশেষ বেঞ্চ গঠনে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি নিরাপদ অবস্থানে চলে যান। পরে রিজভী আহমেদই সংবাদ সম্মেলনটি করেন। এ সময় ঢাকা মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব আবদুস সালাম ও সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি এবং বেলাল আহমেদসহ কয়েকজন কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
দিনভর চাপা উত্তেজনা নয়াপল্টনে: ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের নামে পরপর দু’টি মামলার প্রভাব পড়ে নয়াপল্টনে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরের চিত্র ছিল অন্যদিনের হরতালের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন। হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর নয়াপল্টনে সারাদিনই ছিল চাপা উত্তেজনা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হতে পারেনি। দলীয় কার্যালয়ে যাননি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা। কর্মী উপস্থিতিও তুলনামূলক কম। দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতাদের মধ্যে দিনভরই ছিল গ্রেপ্তার আতঙ্ক। সবার ভেতরেই যেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ফখরুলসহ সদ্য দায়ের দুই মামলার আসামি হওয়া নেতাদের নিয়েই আলোচনা করছেন সবাই। তবে কার্যালয়ের সামনে সারাদিন যথারীতি সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ ও র্যাব। এদিকে হরতালের শুরুতেই নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ গ্রেপ্তার করে সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হকসহ তিনজনকে। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টায় দলীয় কর্মী আবদুল আজিজকে আটক করা হয়। এ অবস্থায় সকাল ৯টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিফিং করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। তিনি বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলাগুলো প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেন। তিনি বলেন, ফখরুলের বক্তব্য সরকারের সুখ-স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটায় এবং ফখরুল চোখে আঙুল দিয়ে সরকারের বিভিন্ন অন্যায় ধরিয়ে দিচ্ছেন বলেই তার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ফখরুলের বাড়ির আশপাশে পুলিশের অবস্থান এবং তার অনুপস্থিতিতে বাড়িতে তল্লাশির নিন্দা জানান তিনি। রিজভী আহমেদ বলেন, ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। সরকারের দৃষ্টি এখন উপরের দিকে। কিন্তু সরকারের এ সুখ-স্বপ্ন আমরা মিথ্যা করে দেবো। কামরুজ্জামান রতনকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক ও নগর নেতা আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তল্লাশি চালানো হচ্ছে নেতাদের বাসায় বাসায়।
দিনভর চাপা উত্তেজনা নয়াপল্টনে: ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের নামে পরপর দু’টি মামলার প্রভাব পড়ে নয়াপল্টনে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরের চিত্র ছিল অন্যদিনের হরতালের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন। হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর নয়াপল্টনে সারাদিনই ছিল চাপা উত্তেজনা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হতে পারেনি। দলীয় কার্যালয়ে যাননি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা। কর্মী উপস্থিতিও তুলনামূলক কম। দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানরত নেতাদের মধ্যে দিনভরই ছিল গ্রেপ্তার আতঙ্ক। সবার ভেতরেই যেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ফখরুলসহ সদ্য দায়ের দুই মামলার আসামি হওয়া নেতাদের নিয়েই আলোচনা করছেন সবাই। তবে কার্যালয়ের সামনে সারাদিন যথারীতি সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ ও র্যাব। এদিকে হরতালের শুরুতেই নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশ গ্রেপ্তার করে সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হকসহ তিনজনকে। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টায় দলীয় কর্মী আবদুল আজিজকে আটক করা হয়। এ অবস্থায় সকাল ৯টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিফিং করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। তিনি বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলাগুলো প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি করেন। তিনি বলেন, ফখরুলের বক্তব্য সরকারের সুখ-স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটায় এবং ফখরুল চোখে আঙুল দিয়ে সরকারের বিভিন্ন অন্যায় ধরিয়ে দিচ্ছেন বলেই তার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ফখরুলের বাড়ির আশপাশে পুলিশের অবস্থান এবং তার অনুপস্থিতিতে বাড়িতে তল্লাশির নিন্দা জানান তিনি। রিজভী আহমেদ বলেন, ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। সরকারের দৃষ্টি এখন উপরের দিকে। কিন্তু সরকারের এ সুখ-স্বপ্ন আমরা মিথ্যা করে দেবো। কামরুজ্জামান রতনকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল হক ও নগর নেতা আজিজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তল্লাশি চালানো হচ্ছে নেতাদের বাসায় বাসায়।
No comments