জনসংখ্যা বিস্ফোরণের মুখে বাংলাদেশঃ সংশ্লিষ্ট অধিদফতর ব্যর্থ
জনসংখ্যার ভারে ন্যুব্জ বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর মানুষ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে সরকারের সব প্রচেষ্টা। এ পর্যন্ত ঘোষিত কোনো লক্ষ্যমাত্রাই পূরণ করতে না পারায় জনসংখ্যা বিস্ফোরণের দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।
ক্রমাগত ভূমিহীনের সংখ্যা বাড়ছে, উদ্বাস্তু মানুষ জীবিকার সন্ধানে অবস্থান বদল করতে বাধ্য হচ্ছে। একই সঙ্গে অদক্ষ জনশক্তির পাশাপাশি বেকারত্ব সমস্যা বেড়ে লাগামের বাইরে চলে গেছে জীবনধারণের প্রতিটি মৌলিক উপাদান। খাদ্য সঙ্কট তো বটেই, চিকিত্সা সঙ্কট, বাসস্থান সঙ্কট গুরুতর আকার ধারণ করেছে সারাদেশে। এ অবস্থায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ জীবিকা তথা কাজের সন্ধানে ভিড় করছে শহরাঞ্চলে। বর্তমানে খোদ রাজধানী শহরেই বাস করছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। এর মধ্যে কয়েক লাখ মানুষের মাথার ওপরে কোনো ছাদ নেই। রাস্তাঘাট, ফুটপাত, গলিঘিঞ্জি, পার্ক, স্টেশন-টার্মিনালে কোনো রকমে দেহরক্ষা করে তারা। শহর উপচে পড়া জনসংখ্যার আরেক চিত্র হচ্ছে ক্রমবর্ধমান বস্তি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শহরমুখী এই জনস্রোতকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হলে প্রথম যে শর্তটি পালন করতে হবে, তা হলো জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং গ্রাম-শহর সর্বত্র কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এই উভয় খাতেই আমাদের অগ্রগতি যথেষ্ট হতাশাব্যঞ্জক। বিশেষত জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট অধিদফতরের কর্মসূচি এখন আক্ষরিক অর্থেই স্থবির হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সরকার তথা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকাণ্ডের সর্বত্রই দেখা দিয়েছে ভাটার টান।
বর্তমানে এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাম্প্রতিক তথ্যমতে, বর্তমানে এই বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এখন দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৯৭৯ জন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসের এক পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে দেশে সক্ষম দম্পতির সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। এদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়েছেন ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। এদিকে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি নেয়ার হার ক্রমাগত কমছে। এ সমস্যা বেশি প্রকট শহরাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বসবাসরত সক্ষম দম্পতিদের বেলায়। কাজেই আর রাখঢাক করে বলার দরকার নেই যে, জনসংখ্যা কর্মসূচি তথা পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি মোটেই সন্তোষজনক নয়। আমরা জানি, আমাদের মতো দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় বাধা অশিক্ষা ও কুসংস্কার। দেখা যায়, হতদরিদ্র, ভূমিহীন, উদ্বাস্তু মানুষ পরিবারের সদস্য সংখ্যা সীমিত রাখার ব্যাপারে আন্তরিকভাবে তাগিদবোধ করেন না। এর ওপর রয়েছে বাল্যবিয়ে সমস্যা। দারিদ্র্যই এসবের উত্সস্থল।
এই বাস্তবতাকে সামনে রেখেই সরকারকে লাগসই কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য দরকার ব্যাপক উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণা, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিবার-পরিকল্পনা কর্মীদের পর্যবেক্ষণ ও সেবাদান। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সহজলভ্যতা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিবিড় তদারকিও অত্যাবশ্যক।
উল্লেখ্য, আশির দশকে এসব কার্যক্রম যথেষ্ট থাকায় জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সফলভাবে এগিয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে ক্রমাগত এই পরিসেবা কমে এখন প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যার এই বিস্ফোরণকে তো এভাবে নির্বিবাদে বিস্তার করতে দেয়া যায় না। যথাসম্ভব দ্রুত এ বৃদ্ধির হারকে নিম্নমুখী করতে না পারলে সরকার ঘোষিত কোনো দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। জনসংখ্যা সীমিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উন্নয়নের চাকা সামনের দিকে ঠেলে নেয়া যে অসম্ভব, বর্তমান ঢাকা শহরের ছোট আয়তনের মধ্যেই তা চাক্ষুস হয়ে উঠেছে। কাজেই বিলম্ব না করে, এখনই পরিবার কল্যাণ অধিদফতরকে সক্রিয় করতে হবে। এ দফতরের মাঠপর্যায়ে জনবল বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিনামূল্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে সক্ষম দম্পতির দ্বারে দ্বারে।
বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করার কথা বলেছে। কিন্তু সার্বিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে না শিগগির এই অবহেলিত দিকটি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। কিন্তু উটপাখির মতো বালিতে মাথা গুঁজে প্রলয় থামানো যাবে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এগিয়ে যেতে হবে তা সমাধানের জন্য। এ নিয়ে আর কালক্ষেপণের অবকাশ নেই।
বর্তমানে এশিয়ার যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাম্প্রতিক তথ্যমতে, বর্তমানে এই বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এখন দেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে বাস করে ৯৭৯ জন। ২০০৯ সালের মার্চ মাসের এক পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে দেশে সক্ষম দম্পতির সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। এদের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়েছেন ৭২ দশমিক ৩ শতাংশ। এদিকে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি নেয়ার হার ক্রমাগত কমছে। এ সমস্যা বেশি প্রকট শহরাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে বসবাসরত সক্ষম দম্পতিদের বেলায়। কাজেই আর রাখঢাক করে বলার দরকার নেই যে, জনসংখ্যা কর্মসূচি তথা পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি মোটেই সন্তোষজনক নয়। আমরা জানি, আমাদের মতো দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বড় বাধা অশিক্ষা ও কুসংস্কার। দেখা যায়, হতদরিদ্র, ভূমিহীন, উদ্বাস্তু মানুষ পরিবারের সদস্য সংখ্যা সীমিত রাখার ব্যাপারে আন্তরিকভাবে তাগিদবোধ করেন না। এর ওপর রয়েছে বাল্যবিয়ে সমস্যা। দারিদ্র্যই এসবের উত্সস্থল।
এই বাস্তবতাকে সামনে রেখেই সরকারকে লাগসই কর্মসূচি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য দরকার ব্যাপক উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণা, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিবার-পরিকল্পনা কর্মীদের পর্যবেক্ষণ ও সেবাদান। জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সহজলভ্যতা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিবিড় তদারকিও অত্যাবশ্যক।
উল্লেখ্য, আশির দশকে এসব কার্যক্রম যথেষ্ট থাকায় জন্মনিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সফলভাবে এগিয়ে গিয়েছিল। তারপর থেকে ক্রমাগত এই পরিসেবা কমে এখন প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু জনসংখ্যার এই বিস্ফোরণকে তো এভাবে নির্বিবাদে বিস্তার করতে দেয়া যায় না। যথাসম্ভব দ্রুত এ বৃদ্ধির হারকে নিম্নমুখী করতে না পারলে সরকার ঘোষিত কোনো দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। জনসংখ্যা সীমিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উন্নয়নের চাকা সামনের দিকে ঠেলে নেয়া যে অসম্ভব, বর্তমান ঢাকা শহরের ছোট আয়তনের মধ্যেই তা চাক্ষুস হয়ে উঠেছে। কাজেই বিলম্ব না করে, এখনই পরিবার কল্যাণ অধিদফতরকে সক্রিয় করতে হবে। এ দফতরের মাঠপর্যায়ে জনবল বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে বিনামূল্যে জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে সক্ষম দম্পতির দ্বারে দ্বারে।
বর্তমান সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে জনসংখ্যা নীতি যুগোপযোগী করার কথা বলেছে। কিন্তু সার্বিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে না শিগগির এই অবহেলিত দিকটি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। কিন্তু উটপাখির মতো বালিতে মাথা গুঁজে প্রলয় থামানো যাবে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে এগিয়ে যেতে হবে তা সমাধানের জন্য। এ নিয়ে আর কালক্ষেপণের অবকাশ নেই।
No comments