একটি অরাজনৈতিক আবেদন by আদনান হুসাইন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ বছরের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই কয়েক শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মাথা হেঁট করে দিয়েছেন তারা। গত বুধবার উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তিন শিক্ষক মিলে পিটিয়েছেন ওই বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক শিক্ষককে। তিনি বিভাগের সভাপতিও বটে।
জাবিতে নানা সময়ে ছাত্র কিংবা ছাত্রীদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত হলেও শিক্ষকের ওপর সংঘবদ্ধ শিক্ষকদের হামলার ঘটনা এই প্রথম। অধ্যাপক আলী আকন্দ মামুনের অপরাধ, তিনি ওই 'কৃতী' শিক্ষকদের নানা অনিয়মের প্রমাণসহ উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। উপাচার্য নিয়ম অনুযায়ী একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি সুচারুভাবে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। বিচার করলে ওই শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির মতো শাস্তিও হতে পারত। প্রশাসন বিচার না করায় তারা আশকারা পেয়ে যান।
ধারণা করা হয়, এর অনেক আগেই বিশেষ কারণে প্রতিক্রিয়াশীল ওই গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন উপাচার্য। ফলে বিচার করার মতো নৈতিক সাহস ছিল না তার। এর সুযোগ নেন ওই তিন শিক্ষক। প্রতিক্রিয়াশীলতার অন্ধকার তাদের এতই আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, শিক্ষক হয়েও আরেক সিনিয়র শিক্ষকের গায়ে লাথি মারতে তাদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। এ লজ্জা শুধু অধ্যাপক আকন্দের নয়, শুধু জাবির নয়_ এ লজ্জা যারা প্রতিক্রিয়াশীলতার বিপক্ষে তাদের সবার। ওই গোষ্ঠীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির যেভাবে চরম আঘাত হেনে ভয়ের আবরণ তৈরি করে প্রতিপক্ষকে কাবু করে এ শিক্ষকরাও মূলত সে কাজটিই করেছেন। ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাই যে কাজটি শিবির করতে পারছে না, তাদের 'ওস্তাদরা' সে কাজটি করে দিলেন। দেখিয়ে দিলেন পথের বাধা হলে তারা কী পারেন? কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক এদের পেলে-পুষে বড় করছেন, ছায়া দিচ্ছেন। বটগাছের চারা এক সময় আশ্রয়দাতা বৃক্ষকে গ্রাস করে নেয়। সেদিন মনে হয় আর বেশি দূরে নয়। বুধবারের ঘটনা তারই ইঙ্গিত। জাবির সবচেয়ে প্রতিবাদী ও নীতিবান শিক্ষকটিকে পিটিয়ে তারা নরম মেরুদণ্ডের শিক্ষকদের দেখিয়ে দিলেন, কাদের ইশারায় চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী দিনের শিক্ষক রাজনীতি।
বিএনপি-জামায়াত-বামপন্থি শিক্ষক যারা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করছেন তাদের কেউ কেউ এ আন্দোলনের সঙ্গে অধ্যাপক আকন্দের বিষয়টি গুলিয়ে ফেলতে চাইছেন। দুটি বিষয়ই সম্পূর্ণ আলাদা। উপাচার্যবিরোধীদের আন্দোলন অযৌক্তিক নয়। তবে যারা আন্দোলন করছেন তারা কি এটি স্বীকার করবেন, উপাচার্যের এসব অনিয়ম মাত্র কয়েক মাস আগের নয়। যত দূর জানি, তার স্বাভাবিক মেয়াদও আর খুব বেশি দিন নেই। ৩ বছর পর আপনাদের বিবেক জেগে উঠেছে_ সাধুবাদ!
অন্ধকারে ঘাপটি মেরে আগুয়ান প্রতিক্রিয়াশীলদের উত্থান ঠেকাতে আপনাদের বিবেক জেগে উঠতে কত বছর, কত যুগ লাগবে তা কে জানে! আমরা আপনাদের রাজনীতি বুঝি না, আমরা আমাদের কলজের এক টুকরো ওই জাহাঙ্গীরনগরকে সব পঙ্কিলতার ঊধর্ে্ব দেখতে চাই।
স আদনান হুসাইন : সাংবাদিক, সাবেক শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
ধারণা করা হয়, এর অনেক আগেই বিশেষ কারণে প্রতিক্রিয়াশীল ওই গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি হয়ে পড়েন উপাচার্য। ফলে বিচার করার মতো নৈতিক সাহস ছিল না তার। এর সুযোগ নেন ওই তিন শিক্ষক। প্রতিক্রিয়াশীলতার অন্ধকার তাদের এতই আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, শিক্ষক হয়েও আরেক সিনিয়র শিক্ষকের গায়ে লাথি মারতে তাদের নিবৃত্ত করতে পারেনি। এ লজ্জা শুধু অধ্যাপক আকন্দের নয়, শুধু জাবির নয়_ এ লজ্জা যারা প্রতিক্রিয়াশীলতার বিপক্ষে তাদের সবার। ওই গোষ্ঠীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির যেভাবে চরম আঘাত হেনে ভয়ের আবরণ তৈরি করে প্রতিপক্ষকে কাবু করে এ শিক্ষকরাও মূলত সে কাজটিই করেছেন। ক্যাম্পাসে শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ। তাই যে কাজটি শিবির করতে পারছে না, তাদের 'ওস্তাদরা' সে কাজটি করে দিলেন। দেখিয়ে দিলেন পথের বাধা হলে তারা কী পারেন? কিছু সুবিধাবাদী শিক্ষক এদের পেলে-পুষে বড় করছেন, ছায়া দিচ্ছেন। বটগাছের চারা এক সময় আশ্রয়দাতা বৃক্ষকে গ্রাস করে নেয়। সেদিন মনে হয় আর বেশি দূরে নয়। বুধবারের ঘটনা তারই ইঙ্গিত। জাবির সবচেয়ে প্রতিবাদী ও নীতিবান শিক্ষকটিকে পিটিয়ে তারা নরম মেরুদণ্ডের শিক্ষকদের দেখিয়ে দিলেন, কাদের ইশারায় চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী দিনের শিক্ষক রাজনীতি।
বিএনপি-জামায়াত-বামপন্থি শিক্ষক যারা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করছেন তাদের কেউ কেউ এ আন্দোলনের সঙ্গে অধ্যাপক আকন্দের বিষয়টি গুলিয়ে ফেলতে চাইছেন। দুটি বিষয়ই সম্পূর্ণ আলাদা। উপাচার্যবিরোধীদের আন্দোলন অযৌক্তিক নয়। তবে যারা আন্দোলন করছেন তারা কি এটি স্বীকার করবেন, উপাচার্যের এসব অনিয়ম মাত্র কয়েক মাস আগের নয়। যত দূর জানি, তার স্বাভাবিক মেয়াদও আর খুব বেশি দিন নেই। ৩ বছর পর আপনাদের বিবেক জেগে উঠেছে_ সাধুবাদ!
অন্ধকারে ঘাপটি মেরে আগুয়ান প্রতিক্রিয়াশীলদের উত্থান ঠেকাতে আপনাদের বিবেক জেগে উঠতে কত বছর, কত যুগ লাগবে তা কে জানে! আমরা আপনাদের রাজনীতি বুঝি না, আমরা আমাদের কলজের এক টুকরো ওই জাহাঙ্গীরনগরকে সব পঙ্কিলতার ঊধর্ে্ব দেখতে চাই।
স আদনান হুসাইন : সাংবাদিক, সাবেক শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
No comments