বাজার দর চড়ছে বেতন বাড়ছে নাঃ গার্মেন্ট শ্রমিকরা বেকায়দায়
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যসহ জীবনযাপনের ব্যয়ভার বাড়লে সবার আগে এর চাপ পড়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের ওপর। বর্তমানে যেভাবে বাজার দর চড়ে যাচ্ছে সেভাবে তাদের আয় বাড়ছে না। ফলে স্বভাবতই দেশের লাখ লাখ পোশাক শ্রমিকসহ কম মাইনের চাকুরেদের ভোগান্তি বেড়েছে। অনাহার-অর্ধাহার অনেকের জন্য হয়ে উঠেছে নির্মম নিয়তি।
ইতিপূর্বে বিশেষ করে চালের দাম কমায় নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের মধ্যে কমবেশি স্বস্তি ফিরে এসেছিল। এখন আবার বাজার দর আক্রা হওয়ায় অবর্ণনীয় সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছেন তারা। দাম বাড়ছে কিন্তু মাইনে বাড়ছে না—এই বৈপরীত্যের মধ্যে দেশের ২৫ লাখ গার্মেন্ট শ্রমিকের জীবনযাপন মানবেতর পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। দফায় দফায় মাইনে বাড়ানোর দাবি করলেও মালিকপক্ষ মোটেই সাড়া দিচ্ছে না। এ অবস্থায় সরকার নীরব ভূমিকা পালন করায় সঙ্কট শুধুই ঘনীভূত হচ্ছে।
দেখা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাড়িভাড়া, পরিবহন ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ। কিন্তু পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়েনি। যদিও তিন বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের কথা ছিল। এর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত অক্টোবরে। এদিকে গত ২৪ জানুয়ারি নতুন করে ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর প্রশ্নে যে বৈঠক হয়েছে তাতে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র কোনো প্রতিনিধিই উপস্থিত হননি। অতঃপর যা হবার তাই হয়েছে। সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বর্তমান সরকারের মজুরি কমিশনের প্রথম বৈঠক। এতে স্বভাবতই শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে বাজারে মোটা চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬/১৭ টাকা। এখন তা কিনতে হচ্ছে ২৮/২৯ টাকা দরে। ৫০ টাকারও কম দামের ডাল একশ’ টাকা ছাড়িয়ে গেছে কবেই। সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। বাড়িভাড়াও হয়েছে দ্বিগুণ, বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। সঙ্গত কারণেই গার্মেন্ট শ্রমিকরা ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণের দাবি করেছে। কিন্তু যে কোনো অংকের বেতন বাড়ানোর বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছে বিজিএমইএ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, গার্মেন্ট শ্রমিকদের শ্রমের ধরন এবং বেতনের বর্তমান ন্যূনতম মজুরি দুই-ই মানবিক বিবেচনায় অস্বাভাবিক। দিনে ৮/৯ ঘণ্টা নিয়মিত কাজের সঙ্গে ওভারটাইম মিলে ১২/১৩ ঘণ্টা কঠিন শ্রম দিয়ে বেশিরভাগ শ্রমিক মজুরি পাচ্ছেন মাত্র এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এই টাকায় পরিবার দূরের কথা, একজন মানুষের গ্রাসাচ্ছাদন কীভাবে সম্ভব তা কাউকে ব্যাখ্যা করে বোঝানোর দরকার পড়ে না। ২০০৬ সালে সরকার ন্যূনতম ১৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা বেতন নির্ধারণ করলে তখনই প্রতিবাদ উঠেছিল শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। তারপর কেবল বাজার দর বেড়েছে, আইন থাকলেও বেতন বাড়েনি। এখন শ্রমিকরা আবার তাদের দাবি উত্থাপন করেছে। কিন্তু বিজিএমইএ সভাপতি ২০ ফেব্রুয়ারি বলেছেন, ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণের সময় পেরিয়ে গেলেও বেতন বাড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি বরং শ্রমিকদের কম দামে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা প্রদান এবং তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধান করতে সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। অর্থাত্ কথায় ও কাজে একটি ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সরকার এই সমস্যাটি দৃশ্যত এড়িয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বাজার দর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারছে না। ফলে হতাশায় বিপর্যস্ত অনেক শ্রমিক চলে যাচ্ছে ভিন্ন পেশায়, অনেকে বেকার জীবন কাটাতে ফিরে যাচ্ছে গ্রামে। কর্মসংস্থানের সঙ্কটের কারণে এই ফিরে যাওয়ার ঘটনাকে মোটেই শুভলক্ষণ বলা যায় না। এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পোশাকশিল্পেও পূর্বাপরের মতো অস্থিরতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এ অবস্থায় পোশাকশিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে উত্পাদন অব্যাহত রাখতে শ্রমিকদের ন্যূনতম খেয়েপরে বাঁচার স্বার্থে বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতেই হবে। কাজেই বর্তমানে শ্রমিক ও মালিকদের দ্বিমুখী অবস্থানে সরকারকে নীরব ভূমিকা পালন করলে চলবে না। সমস্যা এড়িয়ে সরকার সঙ্কট ঘনীভূত করবে না—এটাই প্রত্যাশা।
দেখা গেছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাড়িভাড়া, পরিবহন ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ। কিন্তু পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়েনি। যদিও তিন বছর পর পর ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের কথা ছিল। এর মেয়াদ শেষ হয়েছে গত অক্টোবরে। এদিকে গত ২৪ জানুয়ারি নতুন করে ন্যূনতম বেতন বাড়ানোর প্রশ্নে যে বৈঠক হয়েছে তাতে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র কোনো প্রতিনিধিই উপস্থিত হননি। অতঃপর যা হবার তাই হয়েছে। সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে বর্তমান সরকারের মজুরি কমিশনের প্রথম বৈঠক। এতে স্বভাবতই শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বেড়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে বাজারে মোটা চালের দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬/১৭ টাকা। এখন তা কিনতে হচ্ছে ২৮/২৯ টাকা দরে। ৫০ টাকারও কম দামের ডাল একশ’ টাকা ছাড়িয়ে গেছে কবেই। সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। বাড়িভাড়াও হয়েছে দ্বিগুণ, বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। সঙ্গত কারণেই গার্মেন্ট শ্রমিকরা ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণের দাবি করেছে। কিন্তু যে কোনো অংকের বেতন বাড়ানোর বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছে বিজিএমইএ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, গার্মেন্ট শ্রমিকদের শ্রমের ধরন এবং বেতনের বর্তমান ন্যূনতম মজুরি দুই-ই মানবিক বিবেচনায় অস্বাভাবিক। দিনে ৮/৯ ঘণ্টা নিয়মিত কাজের সঙ্গে ওভারটাইম মিলে ১২/১৩ ঘণ্টা কঠিন শ্রম দিয়ে বেশিরভাগ শ্রমিক মজুরি পাচ্ছেন মাত্র এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এই টাকায় পরিবার দূরের কথা, একজন মানুষের গ্রাসাচ্ছাদন কীভাবে সম্ভব তা কাউকে ব্যাখ্যা করে বোঝানোর দরকার পড়ে না। ২০০৬ সালে সরকার ন্যূনতম ১৬৬২ টাকা ৫০ পয়সা বেতন নির্ধারণ করলে তখনই প্রতিবাদ উঠেছিল শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। তারপর কেবল বাজার দর বেড়েছে, আইন থাকলেও বেতন বাড়েনি। এখন শ্রমিকরা আবার তাদের দাবি উত্থাপন করেছে। কিন্তু বিজিএমইএ সভাপতি ২০ ফেব্রুয়ারি বলেছেন, ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণের সময় পেরিয়ে গেলেও বেতন বাড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি বরং শ্রমিকদের কম দামে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা প্রদান এবং তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধান করতে সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। অর্থাত্ কথায় ও কাজে একটি ফাঁক সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সরকার এই সমস্যাটি দৃশ্যত এড়িয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বাজার দর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পারছে না। ফলে হতাশায় বিপর্যস্ত অনেক শ্রমিক চলে যাচ্ছে ভিন্ন পেশায়, অনেকে বেকার জীবন কাটাতে ফিরে যাচ্ছে গ্রামে। কর্মসংস্থানের সঙ্কটের কারণে এই ফিরে যাওয়ার ঘটনাকে মোটেই শুভলক্ষণ বলা যায় না। এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পোশাকশিল্পেও পূর্বাপরের মতো অস্থিরতা দেখা দেয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এ অবস্থায় পোশাকশিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে উত্পাদন অব্যাহত রাখতে শ্রমিকদের ন্যূনতম খেয়েপরে বাঁচার স্বার্থে বেতন বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতেই হবে। কাজেই বর্তমানে শ্রমিক ও মালিকদের দ্বিমুখী অবস্থানে সরকারকে নীরব ভূমিকা পালন করলে চলবে না। সমস্যা এড়িয়ে সরকার সঙ্কট ঘনীভূত করবে না—এটাই প্রত্যাশা।
No comments