তারপরেও পদ আঁকড়ে থাকবেন? by সানাউল্লাহ মাহী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের পদত্যাগ দাবিতে মঙ্গলবার থেকে আমরণ অনশন করে যাচ্ছেন 'শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংহতি মঞ্চে'র শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ মঞ্চটিতে রয়েছেন প্রগতিশীল শিক্ষক, ছাত্র, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী, সাবেক শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।


২০১১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ও সাধারণ শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত হয় 'শিক্ষক সমাজ'। উদ্দেশ্য ছিল, গণহারে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা। বর্তমান উপাচার্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামিসহ নানা অনিয়মে প্রশ্নবিদ্ধ শিক্ষকদের নিয়োগদানের অভিযোগ উঠেছে। বিজ্ঞাপিত পদের বেশি শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগটিও রয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষকের রেজাল্টের বিরুদ্ধে রয়েছে সমালোচনা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারী সন্ত্রাসীদের হাতে ইংরেজি বিভাগের স্নাতক শেষবর্ষের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ খুন হন।
ফুঁসে ওঠেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক সমাজের আন্দোলনের মাত্রা লাভ করে ভিন্নধারা। চলে শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির আন্দোলন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কী দেখল? সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গেল। তারা একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছে এ সবুজ ক্যাম্পাসে। কেন এ সন্ত্রাসী আস্ফালন? কারণ হিসেবে সবাই একটি বিষয়কে দায়ী করি তা হলো, প্রশাসনের শতভাগ মদদ।
২৫ এপ্রিল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং ২৮ এপ্রিল সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর পালিত সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলা শিক্ষক সমাজের টানা উপাচার্য ভবন ঘেরাওয়ের আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে ।
ছাত্র-জনতার এক দফা এক দাবির আন্দোলন শুরু হলো_ উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। বিক্ষোভ হলো। মিছিল হলো। মশাল মিছিলও হলো। কিন্তু অনড় উপাচার্য। তিনি পদত্যাগ করবেন না। এবার শিক্ষার্থীরা নিলেন দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত। তারা ১ মে থেকে শুরু করলেন আমরণ অনশন। ২ মে তাদের সঙ্গে এ দুঃসাহসিক আন্দোলনে যোগ দিলেন শিক্ষকরা। তবুও কি গদিতে অনড় থাকবেন মাননীয় উপাচার্য? তার পক্ষ নেওয়া শিক্ষকরা সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে মানববন্ধন করছেন, যা ক্যাম্পাসের সাধারণ ও প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা একদম মেনে নিতে পারছেন না।
উপাচার্য পদত্যাগের ব্যাপারে একটাই বক্তব্য বারবার দিয়ে আসছেন_ 'আমি অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি। আমি ১০টি নতুন বিভাগ খুলেছি। আমি এ ক্যাম্পাসকে করেছি সম্পূর্ণ সেশনজটমুক্ত।'
উপাচার্যের এ অবদান সবাই স্বীকার করেন। তবে তার পদত্যাগের প্রশ্নটি এখানে নয়। প্রশ্নটির জন্ম সন্ত্রাসদের লালনপালনের সঙ্গে। আমরা ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসীদের দেখতে চাই না। চাই না তাদের আশ্রয়দাতাদের।
স সানাউল্লাহ মাহী : শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
 

No comments

Powered by Blogger.