মানবাধিকার লঙ্ঘনে রেকর্ডঃ সুশাসনের অঙ্গীকার পূরণ করবে কে?
জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদকে বলা হয় আধুনিক সভ্যতার ম্যাগনাকার্টা। কিন্তু বাস্তবে সেই সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো কোনো দেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতি ও আচরণে তার প্রতিফলন ঘটে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নটি দিন দিন প্রবল হয়ে উঠছে।
বর্তমান সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তর ঘটনা ঘটলেও দেশের প্রায় সবগুলো মানবাধিকার সংগঠনই মুখে খিল এঁটে বসে আছে। দেশের দেড়শ’ মানবাধিকার সংগঠনের মধ্যে চার-পাঁচটি সংগঠন ছাড়া বাদবাকি সবই নামসর্বস্ব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনা সত্ত্বেও রিমান্ডে নির্যাতনের মাত্রা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। রিমান্ডের নামে নির্যাতন, সরকারদলীয় ক্যাডারদের সাংবাদিকদের ওপর হামলা, খুন, গুপ্তহত্যা, পুলিশ ও র্যাবের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও নীরব ভূমিকা পালন করছে সরকার সমর্থক বলে কথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত থাকলে এবং মানবাধিকার সংগঠন ‘গদাই মোড়ল’-এর ভূমিকা নিলে আক্ষরিক অর্থেই মুখ থুবড়ে পড়বে আইনের শাসন।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সরকার দফায় দফায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার সংরক্ষণের কথা বললেও এগিয়ে যাচ্ছে উল্টো পথে। ফলে কথা ও কাজের সম্পর্কে এখন রীতিমত সাংঘর্ষিক পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা হচ্ছে আদালতের এখতিয়ারে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন।
এই নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে তা থেকে মনে হয়, আমাদের মানসিকতা ক্রমেই বর্বরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। রিমান্ড নির্যাতনে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া সে কথাই প্রমাণ করে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের এক রায়ে বলা হয়েছিল, কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হলে তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেফতারের কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির আত্মীয় বা নিকটস্থ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানাতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবী বা পরিচিত কারও উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির গায়ে আগে থেকে আঘাতের কোনো চিহ্ন থাকলে তাত্ক্ষণিকভাবে ডাক্তার দেখাতে হবে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ডাক্তার দেখাতে হবে। রায়ে আরও বলা হয়, কোনো গোপন জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। এ রায় বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে বলেছিলেন হাইকোর্ট। সেই নির্দেশনা বহাল রয়েছে, অথচ তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বরং নির্যাতনের মাত্রা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের মদতে বা নির্দেশে যথেচ্ছ নির্যাতনের দায়িত্ব নিলে সেখানে আইনের শাসন রয়েছে—এমন কথা বলার অবকাশ থাকে না।
মানবাধিকার সমুন্নত রাখার একটি অন্যতম শর্ত ভিন্ন মতের প্রতি সহিষ্ণুতা। এক্ষেত্রেও সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের খড়গ ঝুলে রয়েছে। সংবাদ প্রকাশের দায়ে যুগপত্ হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। দেশব্যাপী সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। এছাড়া নারী নির্যাতন, অসহায় মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগের অভাব, সর্বোপরি শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা-দুর্বৃত্তায়ন মানবাধিকারকে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে ভয়ের কথা, এর ফলে বিভিন্ন ছদ্মাবরণে স্বৈরাচারী উপাদান যুক্ত হতে পারে, যা কারও জন্য শুভ হতে পারে না। এ অবস্থায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সোচ্চার ভূমিকা একান্ত জরুরি।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সরকার দফায় দফায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার সংরক্ষণের কথা বললেও এগিয়ে যাচ্ছে উল্টো পথে। ফলে কথা ও কাজের সম্পর্কে এখন রীতিমত সাংঘর্ষিক পর্যায়ে এসে ঠেকেছে। সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা হচ্ছে আদালতের এখতিয়ারে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন।
এই নির্যাতনের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ যে তা থেকে মনে হয়, আমাদের মানসিকতা ক্রমেই বর্বরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। রিমান্ড নির্যাতনে পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া সে কথাই প্রমাণ করে।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের এক রায়ে বলা হয়েছিল, কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা হলে তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেফতারের কারণ লিপিবদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির আত্মীয় বা নিকটস্থ কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানাতে হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আইনজীবী বা পরিচিত কারও উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির গায়ে আগে থেকে আঘাতের কোনো চিহ্ন থাকলে তাত্ক্ষণিকভাবে ডাক্তার দেখাতে হবে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ডাক্তার দেখাতে হবে। রায়ে আরও বলা হয়, কোনো গোপন জায়গায় জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। এ রায় বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে বলেছিলেন হাইকোর্ট। সেই নির্দেশনা বহাল রয়েছে, অথচ তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বরং নির্যাতনের মাত্রা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের মদতে বা নির্দেশে যথেচ্ছ নির্যাতনের দায়িত্ব নিলে সেখানে আইনের শাসন রয়েছে—এমন কথা বলার অবকাশ থাকে না।
মানবাধিকার সমুন্নত রাখার একটি অন্যতম শর্ত ভিন্ন মতের প্রতি সহিষ্ণুতা। এক্ষেত্রেও সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের খড়গ ঝুলে রয়েছে। সংবাদ প্রকাশের দায়ে যুগপত্ হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। দেশব্যাপী সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। এছাড়া নারী নির্যাতন, অসহায় মানুষের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সুযোগের অভাব, সর্বোপরি শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা-দুর্বৃত্তায়ন মানবাধিকারকে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। এতসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। সবচেয়ে ভয়ের কথা, এর ফলে বিভিন্ন ছদ্মাবরণে স্বৈরাচারী উপাদান যুক্ত হতে পারে, যা কারও জন্য শুভ হতে পারে না। এ অবস্থায় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সোচ্চার ভূমিকা একান্ত জরুরি।
No comments