ঢাবিতে ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কমিটি, তীব্র উত্তেজনা
বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে তীব্র উত্তেজনা চলছে ক্যাম্পাসে। কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আলাদা আলাদা স্বাক্ষরিত কমিটি দেয়া হয়েছে প্রেসে। কমিটিতে পদবঞ্চিতদের দফায় দফায় মহড়া আর স্লোগানে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের গ্রুপ তার দেয়া কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করেছে। অপরদিকে ঢাবি সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ তার গ্রুপ নিয়ে শোডাউন করেছে মধুর ক্যান্টিনে। মঙ্গলবার বিকাল থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলে এ মহড়া। গত ৩/৪ মাস আগে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি গঠন করে তা অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মনমতো না হওয়ায় কমিটি ঝুলিয়ে রাখে দীর্ঘদিন। মঙ্গলবার হঠাৎ করে আগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ভেঙে ১৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। নতুন পদ দেয়া ৬৪ জন নেতার প্রায় সবাই কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী। কেন্দ্র ঘোষিত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোন স্বাক্ষর নেই। সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সোহেল রানা টিপু ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশাহ’র স্বাক্ষর রয়েছে এ কমিটিতে। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদকও তাদের স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রেসে পাঠিয়ে দেন। সাধারণ সম্পাদক জানান, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত গঠন করা যায় না। এদিকে ছাত্রলীগের সংবিধানমতে জেলা শাখার কমিটির সদস্য সংখ্যা ১২১ হওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঘোষিত কমিটিতে সদস্য সংখ্যা ১৩৭। বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি হওয়ার পরে ছাত্রলীগের সংবিধান সংশোধন করে সদস্য সংখ্যা ৭১ থেকে ১২১ করা হয়। কেন্দ্র ঘোষিত নতুন কমিটিতে খুলনা ও জামালপুর অঞ্চলের রয়েছে আধিক্য। অপরদিকে ছাত্রলীগের পদ-পদবিতে বরাবর বরিশাল ও ফরিদপুর অঞ্চল এগিয়ে থাকলেও এবার তাদের পদ সংখ্যা অনেক কম। অনেকে জুনিয়র ও শিবিরের সংশ্লিষ্টতা অভিযোগ রয়েছে এমন নেতাদের দেয়া হয়েছে কেন্দ্র ঘোষিত কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ। ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতিকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা ওয়াহিদুজ্জামানকেও দেয়া হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদ। তিনি হল ও ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কৃত। ছাত্রলীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, কোটি টাকার পদ বিক্রির বাণিজ্য বহাল রাখতেই কেন্দ্রীয় সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সবার অগোচরে কমিটি ঘোষণা করেছেন। এ বিষয়ে বিশ্বদ্যিালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ বলেন, যে কমিটি সম্পর্কে আমরা জানি না তা মেনে নেয়ার প্রশ্নই আসে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আমাদের- আমরা কমিটি গঠন করবো। আমাদের না জানিয়ে কমিটি গঠন করে দিলে তা নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো কি করে। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা জেলা শাখা। বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আমাদের তালিকা দিয়েছে আমরা তা আরও একটু বাড়িয়েছি। এখানে তাদের স্বাক্ষরের কোন বিষয় নয়। কমিটি আমরা যেটা দিয়েছি সেটাই থাকবে। অন্য কোন পদক্ষেপের প্রশ্ন আসে না।
No comments