ঐকমত্যের সংবিধান প্রত্যাশিত
উচ্চ আদালতের রায় ও রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন উপলব্ধি করে বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এটা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, যে কারণে সংবিধান সংশোধন করা তাদের জন্য অনেকটা বাধ্যবাধকতার মতোই। সে অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনীর জন্য একটি সংসদীয় কমিটিও গঠন করা হয়।
যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সংবিধানের খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসছেন, সম্প্রতি তাঁদের কর্মপদ্ধতির অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ছাড়া অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং সে অনুযায়ী আলোচনার কাজ শুরু হয় গত রবিবার থেকে। সোমবারও তা অব্যাহত থাকে। রবিবার মতামত প্রদানকারীরা ছিলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মধ্যে আবার সংবিধান প্রণেতাদেরও একাধিক ব্যক্তি ছিলেন।
সাবেক বিচারপতিরা এবং বিশেষজ্ঞরা সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। আবার অধিকাংশই বলেছেন, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অন্তর্ভুক্ত না করাটাই উত্তম হবে। এ বিষয়ে তাঁরা যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তাকে যৌক্তিক বলা যায়। কারণ, সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করা হবে, এমন বিধান থাকার কারণে কার্যরত বিচারপতিকেও অনেক সময় বিব্রতকর মন্তব্য শুনতে হয়। বিচার বিভাগ একই কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে না রাখার ব্যাপারে মত দেওয়ার পাশাপাশি বিকল্প যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা-ও বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার। সরকারি দল থেকে পাঁচজন, বিরোধী দল থেকে পাঁচজন সদস্য নিয়ে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে, তা কি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে? চারদলীয় জোট সরকার-পরবর্তীকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্যদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল, তা আমাদের মনে রাখা দরকার। সেখানে রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও প্রধান ছিলেন। যদিও আইনের আওতায় দুটি পদ একজনের ধরে রাখার ব্যাপারে তখনো কথা উঠেছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যতের তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক দলের মনোনীত রাষ্ট্রপতি দিয়ে আদৌ সম্ভব কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। তবে রাষ্ট্রধর্ম সম্পর্কে তাঁদের যেই বক্তব্য, তাকে অত্যন্ত স্পষ্ট বলে অভিহিত করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তি নয় যে রাষ্ট্র নিজে কোনো আচরণ করতে পারে। সুতরাং রাষ্ট্রের ধর্ম থাকার পক্ষে নন তাঁরা।
সংসদীয় বিশেষ কমিটি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সোমবার। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। সংসদীয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী দল হিসেবে সংগত কারণেই তাদের উপস্থিতি আশা করা গিয়েছিল। যেহেতু তারা অপরাপর সংসদীয় কমিটিগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকে, তাই অত্যন্ত জরুরি কাজ হিসেবে এই কমিটিতেও উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত তুলে ধরতে পারত। এ ক্ষেত্রে ওই কমিটিতে তাদের কোনো সদস্য না থাকায়ও অসুবিধা হতো বলে মনে হয় না। সরকার যদি তাদের মতামতকে অমান্য করত এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ করত, তা-ও অন্তত রেকর্ড হয়ে থাকত। অন্যদিকে গ্রহণযোগ্য মতামতগুলোও সংবিধানকে সমৃদ্ধ করতে পারত। চলমান প্রক্রিয়ায় আরো দলের সঙ্গে আলোচনা চলবে। জাতীয়তাবাদী দল সোমবার অংশগ্রহণ করেনি বলে আর কখনো অংশগ্রহণ করবে না, এমন না-ও হতে পারে। সংসদীয় কমিটিতে তাদের মতামত তুলে ধরবে বলে আমরা এখনো আশা করতে পারি। সংসদীয় কমিটিতে বিএনপি উপস্থিত না থাকলেও পরবর্তীকালে জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরতে পারেন। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে বিধান সংযোজিত হবে, তা হবে অত্যন্ত শক্তিশালী। এটাই সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম পথ।
সাবেক বিচারপতিরা এবং বিশেষজ্ঞরা সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন। আবার অধিকাংশই বলেছেন, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে অন্তর্ভুক্ত না করাটাই উত্তম হবে। এ বিষয়ে তাঁরা যেসব যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তাকে যৌক্তিক বলা যায়। কারণ, সদ্য সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান করা হবে, এমন বিধান থাকার কারণে কার্যরত বিচারপতিকেও অনেক সময় বিব্রতকর মন্তব্য শুনতে হয়। বিচার বিভাগ একই কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়ায়, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে না রাখার ব্যাপারে মত দেওয়ার পাশাপাশি বিকল্প যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা-ও বিশ্লেষণ করে দেখা দরকার। সরকারি দল থেকে পাঁচজন, বিরোধী দল থেকে পাঁচজন সদস্য নিয়ে যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে, তা কি সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে? চারদলীয় জোট সরকার-পরবর্তীকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্যদের মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছিল, তা আমাদের মনে রাখা দরকার। সেখানে রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরও প্রধান ছিলেন। যদিও আইনের আওতায় দুটি পদ একজনের ধরে রাখার ব্যাপারে তখনো কথা উঠেছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে ভবিষ্যতের তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক দলের মনোনীত রাষ্ট্রপতি দিয়ে আদৌ সম্ভব কি না, তা ভেবে দেখা দরকার। তবে রাষ্ট্রধর্ম সম্পর্কে তাঁদের যেই বক্তব্য, তাকে অত্যন্ত স্পষ্ট বলে অভিহিত করা যায়। বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, রাষ্ট্র কোনো ব্যক্তি নয় যে রাষ্ট্র নিজে কোনো আচরণ করতে পারে। সুতরাং রাষ্ট্রের ধর্ম থাকার পক্ষে নন তাঁরা।
সংসদীয় বিশেষ কমিটি সংসদে বিরোধীদলীয় নেতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সোমবার। কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। সংসদীয় রাজনীতিতে বিশ্বাসী দল হিসেবে সংগত কারণেই তাদের উপস্থিতি আশা করা গিয়েছিল। যেহেতু তারা অপরাপর সংসদীয় কমিটিগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে থাকে, তাই অত্যন্ত জরুরি কাজ হিসেবে এই কমিটিতেও উপস্থিত হয়ে তাদের মতামত তুলে ধরতে পারত। এ ক্ষেত্রে ওই কমিটিতে তাদের কোনো সদস্য না থাকায়ও অসুবিধা হতো বলে মনে হয় না। সরকার যদি তাদের মতামতকে অমান্য করত এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ করত, তা-ও অন্তত রেকর্ড হয়ে থাকত। অন্যদিকে গ্রহণযোগ্য মতামতগুলোও সংবিধানকে সমৃদ্ধ করতে পারত। চলমান প্রক্রিয়ায় আরো দলের সঙ্গে আলোচনা চলবে। জাতীয়তাবাদী দল সোমবার অংশগ্রহণ করেনি বলে আর কখনো অংশগ্রহণ করবে না, এমন না-ও হতে পারে। সংসদীয় কমিটিতে তাদের মতামত তুলে ধরবে বলে আমরা এখনো আশা করতে পারি। সংসদীয় কমিটিতে বিএনপি উপস্থিত না থাকলেও পরবর্তীকালে জাতীয় সংসদে সংবিধান সংশোধনী বিষয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরতে পারেন। সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে বিধান সংযোজিত হবে, তা হবে অত্যন্ত শক্তিশালী। এটাই সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্যতম পথ।
No comments