বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস by রুদ্র মাসুদ
আজ বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে নামেই আমাদের দেশে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে দিনটি পরিচিত। এ বছর দিনটি বাংলাদেশের সাংবাদিক তথা গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছি। ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকায় নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর আমাদের সাংবাদিক সমাজের টনক নড়েছিল।
নিজ পেশা সম্পর্কে দীর্ঘদিন পর এবং নিজেদের টলটলায়মান অবস্থান সম্পর্কে হঠাৎ করেই নেতৃবৃন্দ নড়েচড়ে ওঠেন। সোচ্চার হয়ে ওঠেন সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন প্রতিরোধে। সাগর-রুনির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় তিন মাস হতে চললেও সেই কান্নার রেশ কাটেনি এখনও। সব মিলিয়ে মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য এই স্বাধীন দেশে আর কত চোখের জল ফেলতে হবে সে প্রশ্ন জাগতে থাকে মনের ভেতর। আর কত সাংবাদিকের রক্তের বিনিময়ে নিরাপদ সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরি হবে আমাদের দেশে?
৩ মে মুক্ত সাংবাদিকতা দিবসকে সামনে রেখে পেছনের এক বছরে সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই সামনে চলে আসে। আর এ চিত্রটি জানতে দ্বারস্থ হয়েছিলাম মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কাছে। ২০১১ সালে সারাদেশে হত্যা, হত্যার হুমকি, নির্যাতন, মামলা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ধরনের সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩০৬ জন সাংবাদিক। ২০১২ সালের প্রথম তিন মাসেই এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৮ জনে। সাংবাদিক নির্যাতনকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি দল এবং সন্ত্রাসী। বাদ যায়নি বিএনপিও। নানাভাবে হুমকি-ধমকি এবং নির্যাতন চলছে। সর্বশেষ পহেলা বৈশাখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তথ্য চাইতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাংবাদিক প্রহৃত হয়েছেন পুলিশের হাতে এবং ইলিয়াস আলীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে অফিসের পিএবিএক্সে ফোন করে। এ রকম একটি অনিশ্চিত পরিবেশের মধ্যেই আজ আমরা পালন করব বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস।
স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং এর আগে ও পরে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা ছিল সাংবাদিকদের। দেশের সামগ্রিক কল্যাণ তথা ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে সংবাদমাধ্যম। সর্বশেষ ১/১১-এর পরবর্তী সময়ে অনিশ্চিত শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে আমাদের গণমাধ্যম। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের এই ভূমিকার ওপর চড়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো পার হয় নির্বাচনী বৈতরণী। ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার পথে তারা পরম আদরে প্রশংসা বিলিয়ে দেন গণমাধ্যমের প্রতি। কিন্তু পরবর্তী সময়েই বেমালুম ভুলে যান পেছনের কথা।
সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্রমাগত প্রতিশ্রুতিও আমাদের নিরাপদ সাংবাদিকতার পরিবেশকে নিশ্চিত করতে পারেনি। উপরন্তু আরও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে পরবর্তী সময়ের সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনাগুলো। একই সঙ্গে আমাদের বিরোধী দলকেও দেখা যায়নি সাংবাদিকদের পাশে এসে কার্যকর কর্মসূচি দিতে। অথচ গত তিন বছরে বিরোধী দলের প্রতিটি যৌক্তিক কর্মসূচিতে আমাদের গণমাধ্যম তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারি দল এবং বিরোধী দলের একই চেহারা দেখে বারবার মনে হয় যত আক্রোশ যেন গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রতি। পরিবেশিত সংবাদ নিজেদের পক্ষে গেলে তো ভালো, না হয় দুই দলের চেহারাই একই রকম হয়ে ওঠে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। মুক্ত সাংবাদিকতা দিবসে তাই মুক্ত সাংবাদিকতার নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তার দাবি তুলব। প্রান্ত থেকে এ আওয়াজ উঠুক কেন্দ্র পর্যন্ত।
editor@chalomannoakhali.com
৩ মে মুক্ত সাংবাদিকতা দিবসকে সামনে রেখে পেছনের এক বছরে সারাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই সামনে চলে আসে। আর এ চিত্রটি জানতে দ্বারস্থ হয়েছিলাম মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কাছে। ২০১১ সালে সারাদেশে হত্যা, হত্যার হুমকি, নির্যাতন, মামলা, বোমা হামলাসহ বিভিন্ন ধরনের সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩০৬ জন সাংবাদিক। ২০১২ সালের প্রথম তিন মাসেই এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৮ জনে। সাংবাদিক নির্যাতনকারী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সরকারি দল এবং সন্ত্রাসী। বাদ যায়নি বিএনপিও। নানাভাবে হুমকি-ধমকি এবং নির্যাতন চলছে। সর্বশেষ পহেলা বৈশাখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে তথ্য চাইতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাংবাদিক প্রহৃত হয়েছেন পুলিশের হাতে এবং ইলিয়াস আলীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে অফিসের পিএবিএক্সে ফোন করে। এ রকম একটি অনিশ্চিত পরিবেশের মধ্যেই আজ আমরা পালন করব বিশ্ব মুক্ত সাংবাদিকতা দিবস।
স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং এর আগে ও পরে প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা ছিল সাংবাদিকদের। দেশের সামগ্রিক কল্যাণ তথা ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে সংবাদমাধ্যম। সর্বশেষ ১/১১-এর পরবর্তী সময়ে অনিশ্চিত শাসন ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা রাখে আমাদের গণমাধ্যম। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের এই ভূমিকার ওপর চড়ে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো পার হয় নির্বাচনী বৈতরণী। ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার পথে তারা পরম আদরে প্রশংসা বিলিয়ে দেন গণমাধ্যমের প্রতি। কিন্তু পরবর্তী সময়েই বেমালুম ভুলে যান পেছনের কথা।
সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্রমাগত প্রতিশ্রুতিও আমাদের নিরাপদ সাংবাদিকতার পরিবেশকে নিশ্চিত করতে পারেনি। উপরন্তু আরও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে পরবর্তী সময়ের সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনাগুলো। একই সঙ্গে আমাদের বিরোধী দলকেও দেখা যায়নি সাংবাদিকদের পাশে এসে কার্যকর কর্মসূচি দিতে। অথচ গত তিন বছরে বিরোধী দলের প্রতিটি যৌক্তিক কর্মসূচিতে আমাদের গণমাধ্যম তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারি দল এবং বিরোধী দলের একই চেহারা দেখে বারবার মনে হয় যত আক্রোশ যেন গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের কর্মীদের প্রতি। পরিবেশিত সংবাদ নিজেদের পক্ষে গেলে তো ভালো, না হয় দুই দলের চেহারাই একই রকম হয়ে ওঠে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। মুক্ত সাংবাদিকতা দিবসে তাই মুক্ত সাংবাদিকতার নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তার দাবি তুলব। প্রান্ত থেকে এ আওয়াজ উঠুক কেন্দ্র পর্যন্ত।
editor@chalomannoakhali.com
No comments