পছন্দের পোলাও

শুধু চালের পোলাও হোক বা মাংস দিয়ে বিরিয়ানি, ঈদের দিনে এমন খাবার তো চাই-ই। এ রকম কয়েক পদ রান্নার প্রণালি দিয়েছেন সিতারা ফিরদৌস দম বিরিয়ানি উপকরণ: খাসির মাংস দুই কেজি, পোলাও বা বাসমতী চাল এক কেজি, আদা বাটা তিন টেবিল-চামচ, রসুন বাটা দেড় টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ বাটা চার টেবিল-চামচ, শাহি জিরা বাটা


এক টেবিল-চামচ, মরিচ গুঁড়া এক চা-চামচ, পোস্তদানা বাটা এক টেবিল-চামচ, পেস্তা-আমন্ড-কাজুবাদাম বাটা এক টেবিল-চামচ, টকদই এক কাপ, মিষ্টিদই আধা কাপ, দারুচিনি ছয় টুকরা, ছোট এলাচ ছয় টুকরা, বড় এলাচ চারটি, লবঙ্গ আটটি, স্টার অ্যানিস দুটি, তেজপাতা চারটি, কেওড়া দুই টেবিল-চামচ, জাফরান আধা চা-চামচ, বেরেস্তা আধা কাপ, কিশমিশ এক টেবিল-চামচ, আলুবোখারা আটটি, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া এক চা-চামচ, মাওয়া সিকি কাপ, আলু ৫০০ গ্রাম, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, সরিষার তেল সোয়া কাপ, ঘি সিকি কাপ, ঘন দুধ এক কাপ, গরম পানি ছয় কাপ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: মাংস মাঝারি টুকরা করে ধুয়ে লবণ মাখিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর আবার ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। সব বাটা মসলা ও মরিচ গুঁড়া এক কাপ পানিতে গুলিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। সব বাটা মসলার রস, বাদাম বাটা, পোস্তদানা বাটা, টক-মিষ্টিদই, লবণ ও আস্ত গরম মসলা দিয়ে মাংস মাখিয়ে তিন-চার ঘণ্টা রাখতে হবে। আলুতে লবণ মাখিয়ে ঘিয়ে ভেজে নিতে হবে। চাল ধুয়ে ২০-২৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। কেওড়ার জলে জাফরান ভিজিয়ে রাখতে হবে। যে হাঁড়িতে বিরিয়ানি রান্না করতে হবে, সেই হাঁড়িতে মাংস বিছিয়ে মাংসের ওপর আলুবোখারা ও ভাজা আলু বিছিয়ে তার ওপর চাল দিয়ে কাঁচা মরিচ, গোলমরিচ গুঁড়া, লবণ, কিশমিশ, পেস্তা-আমন্ড-কাজু কুচি, কেওড়ায় ভেজানো জাফরান, সরিষার তেল, মাওয়া, দুধ, বেরেস্তা ও গরম পানি দিতে হবে। ময়দা মাখিয়ে আধা ইঞ্চি পুরু রুটি বেলে বিরিয়ানির হাঁড়ির ওপর রুটি এমনভাবে এঁটে দিতে হবে, যাতে হাঁড়ির ভেতরের কোনো বাতাস বাইরে বের হতে না পারে এবং রুটির ওপর ঢাকনা এমনভাবে দিতে হবে, যাতে রুটির সঙ্গে ঢাকনা লেগে না যায়। এরপর মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট, কম আঁচে ২০ মিনিট ও ঢিমে আঁচে ২৫ মিনিট দমে রাখতে হবে। পরিবেশনের আগে ঢাকনা খুলে সিল করা রুটি ছুরির আগা দিয়ে উঠিয়ে নিতে হবে। ধোঁয়া ওঠা গরম গরম দম বিরিয়ানি কাবাব, বোরহানি ও সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

সিন্ধি বিরিয়ানি
উপকরণ: পোলাওর চাল বা বাসমতী চাল ৫০০ গ্রাম, ঘি আধা কাপ, তেল আধা কাপ, মুরগির স্টক তিন কাপ, মুরগির মাংস (মাঝারি আকারের টুকরা) এক কেজি, আনারসের রস (হালকা হলুদ রং দিয়ে জ্বাল দেওয়া) এক কাপ, আদা বাটা দুই টেবিল-চামচ, রসুন বাটা এক টেবিল-চামচ, বেরেস্তা পৌনে এক কাপ, পেঁয়াজ বাটা দুই টেবিল-চামচ, কাঁচা মরিচ সাত-আটটি, তেজপাতা তিন-চারটি, দারুচিনি ছয়-সাত টুকরা, এলাচ চারটি, স্টার অ্যানিস দুটি, লবঙ্গ ছয়-সাতটি, লবণ স্বাদমতো, পেস্তা বাদাম, কিশমিশ, কাজু আধা কাপ, মরিচ গুঁড়া এক চা-চামচ, বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, মালাই আধা কাপ, মাওয়া গুঁড়া আধা কাপ, টকদই আধা কাপ ও টমেটোর সস তিন টেবিল-চামচ।
প্রণালি: চাল আধা সিদ্ধ করে মাড় ঝরাতে হবে। আদা-রসুন বাটা, মরিচ গুঁড়া, বাদাম বাটা, লবণ, অর্ধেকটা গরম মসলা ও তেজপাতা দিয়ে মাংস মাখিয়ে দুই ঘণ্টা রাখতে হবে। তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি বাদামি করে ভেজে তাতে মসলা থেকে মাংস উঠিয়ে ওই মসলা দিয়ে কষাতে হবে। তারপর দই ও মাংস দিয়ে কষাতে হবে ও এক কাপ গরম পানি দিতে হবে। ঝোল কমে এলে টমেটোর সস দিয়ে ভুনা ভুনা করে লবণ চেখে নামাতে হবে। ঘি গরম করে পেস্তা বাদাম, কিশমিশ, কাজু ভেজে ওঠাতে হবে এবং ওই ঘি দিয়ে আধা সিদ্ধ চাল মেখে রাখতে হবে। হাঁড়িতে প্রথমে কিছু চাল, কিছু বেরেস্তা, কিছু মাওয়া আবার কিছু চাল, রান্না মাংস, কিছু কাজু, পেস্তা, বাদাম, কিশমিশ, মাওয়া, চাল, মাংস এভাবে দিতে হবে। এরপর আনারসের রস, কেওড়া, মালাই, কাজুবাদাম, কিশমিশ দিয়ে ৩০-৩৫ মিনিট দমে রাখতে হবে।

মুগডালের বিরিয়ানি
উপকরণ: গরুর মাংস দুই কেজি, পোলাওর চাল এক কেজি, মুগডাল আধা কেজি, ঘি এক কাপ, পেঁয়াজ বাটা দুই টেবিল-চামচ, আদা বাটা দুই টেবিল-চামচ, রসুন বাটা এক টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ কুচি এক কাপ, দারুচিনি সাত-আট টুকরা, এলাচ ছয়-সাতটি, গরম মসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ৮-১০টি, লবণ স্বাদমতো, চিনি আধা টেবিল-চামচ, তেজপাতা চার-পাঁচটি ও টকদই পৌনে এক কাপ।
প্রণালি: মাংস টুকরা করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে তাতে টকদই মাখিয়ে ২৫-৩০ মিনিট রাখতে হবে। তেল গরম করে কিছু দারুচিনি ও এলাচের ফোড়ন দিয়ে তাতে আধা কাপ পেঁয়াজ কুচি ভাজতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে পেঁয়াজ বাটা ও অর্ধেকটা আদা ও রসুন বাটা দিয়ে মাংস কষাতে হবে। পরিমাণমতো পানি দিয়ে মাংস সিদ্ধ করতে হবে। ঝোল শুকিয়ে এলে গরম মসলার গুঁড়া দিয়ে চুলা থেকে নামাতে হবে। মুগডাল ভেজে, ধুয়ে, গরম পানি দিয়ে এমনভাবে সিদ্ধ করতে হবে, যাতে ডাল গলে না যায়। চাল ধুয়ে পানি ঝরাতে হবে। ঘি গরম করে বাকি পেঁয়াজ কুচি বাদামি রং করে ভেজে তাতে অবশিষ্ট বাটা মসলা ও গরম মসলা দিয়ে কষিয়ে চাল ভাজতে হবে। চাল ভাজা হলে গরম পানি দিতে হবে। ফুটে উঠলে লবণ ও ডাল দিতে হবে। পানি কমে এলে চিনি দিতে হবে।
পোলাওর পানি শুকিয়ে গেলে হাঁড়ি থেকে কিছুটা পোলাও উঠিয়ে কিছু মাংস ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আবার পোলাও দিয়ে ওপরে মাংস ও কাঁচা মরিচ ছিটিয়ে এভাবে তিন স্তরে সাজিয়ে দমে দিতে হবে। মুগডালের বিরিয়ানি কাবাব ও সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।

কাশ্মীরি পোলাও
উপকরণ: পোলাওর চাল এক কেজি, ঘি এক কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাজুবাদাম আধা কাপ, গাজর (ছোট ছোট কিউব করে কাটা) আধা কাপ, পেস্তা আধা কাপ, দারুচিনি চার টুকরা, এলাচ ছয়টি, কিশমিশ সিকি কাপ, কাঠবাদাম আধা কাপ, জাফরান আধা চা-চামচ, গোলাপজল এক টেবিল-চামচ, লেবুর রস দুই টেবিল-চামচ, চিনি দুই চা-চামচ, পেস্তা-আমন্ড-কাজু বাটা দুই টেবিল-চামচ, ঘন দুধ এক কাপ, মালাই এক কাপ, গরম পানি ছয় কাপ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: দুধ, পেস্তা-আমন্ড-কাজু বাদাম বাটা, জাফরান, গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে রাখতে হবে। চাল ধুয়ে ২০-২৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। পেস্তা, আমন্ড, কাজু, কিশমিশ ঘিয়ে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। গরম ঘিয়ে পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা করে উঠিয়ে রাখতে হবে। চাল ঘিয়ে ভেজে তাতে দারুচিনি, এলাচ ও গাজর দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে পানি দিতে হবে। ফুটে উঠলে লবণ ও লেবুর রস দিতে হবে। এরপর চালের পানি কমে গেলে দুধ বাদাম বাটা ইত্যাদির মিশ্রণ দিয়ে দমে রাখতে হবে। ২০-২৫ মিনিট পর মালাই ও কিছুটা কিশমিশ, কাজু, পেস্তা, আমন্ড ভাজা দিয়ে ১০ মিনিট দমে রাখতে হবে। কাশ্মীরি পোলাও পরিবেশন পাত্রে ঢেলে ওপরে বাকি কিশমিশ, কাজু, পেস্তা ও আমন্ড ভাজা ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.