শেখ হাসিনার উন্নয়ন মডেল জাতিসংঘের আলোচনায় স্থান পাবে- আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনে আলোচকবৃন্দ
দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনগণের ক্ষমতায়ন মডেলটি বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দেবে। আগামীতে তা জাতিসংঘের উন্নয়ন আলোচনায় স্থান করে নেবে।
রবিবার রূপসী বাংলা হোটেলে জনগণের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শেষ দিনে এ আশা প্রকাশ করেন অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণ, অসমতা দূর করা, বঞ্চনা কমানো, সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানব উন্নয়ন, সন্ত্রাসবাদ দমন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে উন্নয়ন কাজে অন্তর্ভুক্ত করা বিষয়ে বিভিন্ন সুপারিশ উঠে আসে দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে। অংশগ্রহণকারীদের মতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৈষম্য দূর করতে উন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতিশীল হতে হবে। তবে তাঁদের মতে, দারিদ্র্যই সব সময় সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করে না।
সম্মেলন শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ঢাকায় দুই দিনের এ সম্মেলনে অনেক সুপারিশ এসেছে। সেসব সুপারিশ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকে খসড়া আকারে দেয়া হবে। সদস্যদের সম্মতি নেয়ার পর খসড়াটি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে জমা দেয়া হবে এবং সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, সদস্যদের গৃহীত জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুযায়ী আমরা সম্মেলন আয়োজন করেছি। ভবিষ্যত কর্মপন্থাও সদস্যদের সম্মতিক্রমে নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতের মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, মালদ্বীপের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী হামিদ, ভুটানের মন্ত্রী লিউনপো ইয়াশে জিম্বা, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী জিএল পেইরিস, নিউইয়র্কে আলজিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ও জি-৭৭ এর সভাপতি মুরাদ বেন মেহদি, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ড. জোয়ান ক্লস, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) সাইদা মুনা তাসনিম।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের গ্রাম উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ সহস্্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাতৃ-মৃত্যু, শিশু-মৃত্যু ও স্যানিটেশন বিষয়ে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। এসব বিষয়ে দেশটিতে যত অগ্রগতি হয়েছে তা ভারতেও হয়নি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থনীতে সমৃদ্ধিশালী তারকা দেশ হওয়ার কোন প্রয়োজন হয় না। সে প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে জনগণের ক্ষমতায়ন শীর্ষক মডেল উপস্থাপন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপিত মডেল আগামীতে জাতিসংঘের উন্নয়ন আলোচনায় স্থান করে নেবে। তবে দারিদ্য সন্ত্রাসবাদ বাড়ায়Ñ এমন মতের বিরোধিতা করে জয়রাম রমেশ বলেন, এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। অনেক উচ্চশিক্ষিত লোক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষকরাও সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদে জড়িয়ে যায়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোকে মুক্ত শ্রমবাজার গড়ে তোলার আবারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কিভাবে উৎপাদনশীল এবং সবুজ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যায় তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এমন হতে হবে যাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়। তিনি বলেন, কৃষিতে সকলের কর্মসংস্থান সম্ভব নয়, তাই শিল্প খাতকে আরও উন্নত করা প্রয়োজন। আর চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষা ও দক্ষতার বিষয়গুলো জড়িত বলে শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার ওপরও জোর দেন।
তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য উন্নত দেশগুলোর সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাব প্রদর্শন অত্যন্ত জরুরী বলে মন্তব্য করেন ভারতের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী। তিনি বলেন, জাপান, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, এমনকি চীনেও এখন কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে। সে অনুপাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো ঘন জনবসতিপূর্ণ। কর্মক্ষম বেকার লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। উন্নত দেশগুলো এদিকে নজর দিচ্ছে না। তারা মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে। অথচ মুক্ত শ্রমবাজার গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে উন্নত দেশগুলোকে এর দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ, ভারতসহ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পর সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) স্থলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) প্রতিস্থাপিত হবে। এমডিজি শুধু উন্নয়শীল দেশের জন্য হলেও এসডিজি সব দেশের জন্য প্রযোজ্য।
সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কে আলজিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ও জি-৭৭ এর সভাপতি মুরাদ বেন মেহদি বলেন, কিভাবে উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়া যায় সেই পথ দেখানো হয়েছে শেখ হাসিনা উত্থাপিত এই মডেলে। এর ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ জননীতি গ্রহণ করতে পারবে।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ড. জোয়ান ক্লস বলেন, এই মডেল উত্থাপন করে বাংলাদেশ এসব ইস্যুতে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। যেসব ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে তাতে কোন একটি বিষয়ে প্রশ্ন তোলা খুবই কঠিন ব্যাপার। উন্নয়ন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। সবক্ষেত্রেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে মালদ্বীপের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপিত জনগণের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই মডেলের মূল উদ্দেশ্যে ছিল সুবিধাবঞ্চিতদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেয়া। এ সম্মেলনে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে যেসব আলোচনা ও সুপারিশ উঠে এসেছে তাতে আমি আশা করি মডেলটিকে নিয়ে আগামীতে অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর হওয়া যাবে।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিএল পেইরিস বলেন, বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠায় মডেলটিতে যেভাবে জোর দেয়া হয়েছে তাতে একটি বাস্তবসম্মত বাস্তবায়ন রূপরেখা তৈরি করা দরকার। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একটি শিশুর শিক্ষা থেকে সবচেয়ে বড় অসমতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ভর্তি নিশ্চিত করতে পারলেও শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বড় পরিসরে উচ্চ শিক্ষায় গিয়ে যে প্রতিযোগিতার মুখে ছিটকে পড়ে। তাই সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিকদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় কোটা পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা নেয়া উচিত।
তিনি সন্ত্রাসবাদ দমনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি ইন্টেলিজেন্স গঠনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে চোরাচালান, স্মাগলিং, অস্ত্র কারবার, দস্যুতা জড়িতÑ যা যে কোন একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে ব্যবহার করা হয়।
ভুটানের ওয়ার্কস এ্যান্ড হিউম্যান সেটেলমেন্ট মন্ত্রী লিউনপো ইয়াশে জিম্বা দারিদ্র্যকে সবচেয়ে বড় সমস্যা চিহ্নিত করে তা দূর করার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, দারিদ্র্যই মূল সমস্যা। দারিদ্র্য দূর করতে না পারলে কোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না।
সম্মেলন শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ঢাকায় দুই দিনের এ সম্মেলনে অনেক সুপারিশ এসেছে। সেসব সুপারিশ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকে খসড়া আকারে দেয়া হবে। সদস্যদের সম্মতি নেয়ার পর খসড়াটি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে জমা দেয়া হবে এবং সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, সদস্যদের গৃহীত জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুযায়ী আমরা সম্মেলন আয়োজন করেছি। ভবিষ্যত কর্মপন্থাও সদস্যদের সম্মতিক্রমে নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতের মন্ত্রী জয়রাম রমেশ, মালদ্বীপের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী হামিদ, ভুটানের মন্ত্রী লিউনপো ইয়াশে জিম্বা, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী জিএল পেইরিস, নিউইয়র্কে আলজিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ও জি-৭৭ এর সভাপতি মুরাদ বেন মেহদি, জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ড. জোয়ান ক্লস, পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) সাইদা মুনা তাসনিম।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের গ্রাম উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ সহস্্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাতৃ-মৃত্যু, শিশু-মৃত্যু ও স্যানিটেশন বিষয়ে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। এসব বিষয়ে দেশটিতে যত অগ্রগতি হয়েছে তা ভারতেও হয়নি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অর্থনীতে সমৃদ্ধিশালী তারকা দেশ হওয়ার কোন প্রয়োজন হয় না। সে প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ থেকে জনগণের ক্ষমতায়ন শীর্ষক মডেল উপস্থাপন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপিত মডেল আগামীতে জাতিসংঘের উন্নয়ন আলোচনায় স্থান করে নেবে। তবে দারিদ্য সন্ত্রাসবাদ বাড়ায়Ñ এমন মতের বিরোধিতা করে জয়রাম রমেশ বলেন, এটা পুরোপুরি ঠিক নয়। অনেক উচ্চশিক্ষিত লোক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষকরাও সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গীবাদে জড়িয়ে যায়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সবার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোকে মুক্ত শ্রমবাজার গড়ে তোলার আবারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কিভাবে উৎপাদনশীল এবং সবুজ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যায় তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান এমন হতে হবে যাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে হুমকি হয়ে না দাঁড়ায়। তিনি বলেন, কৃষিতে সকলের কর্মসংস্থান সম্ভব নয়, তাই শিল্প খাতকে আরও উন্নত করা প্রয়োজন। আর চাকরির ক্ষেত্রে শিক্ষা ও দক্ষতার বিষয়গুলো জড়িত বলে শিক্ষা খাতে ব্যয় বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই। তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলার ওপরও জোর দেন।
তবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির জন্য উন্নত দেশগুলোর সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাব প্রদর্শন অত্যন্ত জরুরী বলে মন্তব্য করেন ভারতের এই প্রভাবশালী মন্ত্রী। তিনি বলেন, জাপান, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, ফ্রান্স, এমনকি চীনেও এখন কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে। সে অনুপাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো ঘন জনবসতিপূর্ণ। কর্মক্ষম বেকার লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। উন্নত দেশগুলো এদিকে নজর দিচ্ছে না। তারা মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে। অথচ মুক্ত শ্রমবাজার গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে উন্নত দেশগুলোকে এর দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ, ভারতসহ কয়েকটি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের পর সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) স্থলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) প্রতিস্থাপিত হবে। এমডিজি শুধু উন্নয়শীল দেশের জন্য হলেও এসডিজি সব দেশের জন্য প্রযোজ্য।
সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কে আলজিরিয়ার রাষ্ট্রদূত ও জি-৭৭ এর সভাপতি মুরাদ বেন মেহদি বলেন, কিভাবে উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়া যায় সেই পথ দেখানো হয়েছে শেখ হাসিনা উত্থাপিত এই মডেলে। এর ভিত্তিতে বিভিন্ন দেশ জননীতি গ্রহণ করতে পারবে।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ড. জোয়ান ক্লস বলেন, এই মডেল উত্থাপন করে বাংলাদেশ এসব ইস্যুতে বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে। যেসব ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে তাতে কোন একটি বিষয়ে প্রশ্ন তোলা খুবই কঠিন ব্যাপার। উন্নয়ন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। সবক্ষেত্রেই গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে মালদ্বীপের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপিত জনগণের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই মডেলের মূল উদ্দেশ্যে ছিল সুবিধাবঞ্চিতদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেয়া। এ সম্মেলনে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে যেসব আলোচনা ও সুপারিশ উঠে এসেছে তাতে আমি আশা করি মডেলটিকে নিয়ে আগামীতে অনেক দূর পর্যন্ত অগ্রসর হওয়া যাবে।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিএল পেইরিস বলেন, বৈষম্য দূর করে সমতা প্রতিষ্ঠায় মডেলটিতে যেভাবে জোর দেয়া হয়েছে তাতে একটি বাস্তবসম্মত বাস্তবায়ন রূপরেখা তৈরি করা দরকার। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে একটি শিশুর শিক্ষা থেকে সবচেয়ে বড় অসমতার ক্ষেত্র তৈরি হয়। প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ভর্তি নিশ্চিত করতে পারলেও শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বড় পরিসরে উচ্চ শিক্ষায় গিয়ে যে প্রতিযোগিতার মুখে ছিটকে পড়ে। তাই সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিকদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় কোটা পদ্ধতি চালু করার পরিকল্পনা নেয়া উচিত।
তিনি সন্ত্রাসবাদ দমনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি ইন্টেলিজেন্স গঠনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে চোরাচালান, স্মাগলিং, অস্ত্র কারবার, দস্যুতা জড়িতÑ যা যে কোন একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে ব্যবহার করা হয়।
ভুটানের ওয়ার্কস এ্যান্ড হিউম্যান সেটেলমেন্ট মন্ত্রী লিউনপো ইয়াশে জিম্বা দারিদ্র্যকে সবচেয়ে বড় সমস্যা চিহ্নিত করে তা দূর করার জন্য পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, দারিদ্র্যই মূল সমস্যা। দারিদ্র্য দূর করতে না পারলে কোন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে না।
No comments