চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন-উচ্ছেদ নোটিশের ১০ মাস পরও উদ্ধার হয়নি ২০ কোটি টাকার সরকারি জমি by আহমেদ কুতুব
উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার ১০ মাস পরও রহস্যজনক কারণে প্রায় ২০ কোটি টাকার সরকারি জমি উদ্ধার করতে পারেনি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর দখলদারদের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে ওই উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উত্তর পাহাড়তলী মৌজার ৩২ একর সরকারি জমি দীর্ঘদিন ধরে জমির আহম্মদসহ কয়েকজন অবৈধভাবে দখল করে আছেন।
অভিযোগ আছে, জেলা প্রশাসনের একটি দুর্নীতিবাজ চক্র জমির আহম্মদের পক্ষ নেওয়ায় এ জমি উদ্ধার করা হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহম্মদ গতকাল সোমবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কী কারণে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কখন দেওয়া হয়েছে, কেন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না- এসব নথিপত্র না দেখে বলতে পারছি না। নথিপত্র দেখার পর সরকারি জমিতে কোনো অবৈধ দখলদার থাকলে নিশ্চয়ই তাদের উচ্ছেদ করা হবে।'
উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার পর ১০ মাস চলে গেলেও সরকারি মূল্যবান জমি থেকে কেন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়নি জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, 'আমার সরকারি অফিস সাড়ে ৩টা পর্যন্ত, কিন্তু আমি এখনো (সাড়ে ৪টা) অফিস করছি। নথিপত্র না দেখে কিছুই বলা সম্ভব নয়।'
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, '২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর জমির আহম্মদ গংয়ের ১১ জনকে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এর কিছুদিন পর তাঁরা একটি আপত্তি দাখিল করেন। চলতি মাসের ২৯ তারিখে চূড়ান্ত শুনানি রয়েছে। এখানে তাঁরা যদি যথাযথ নথিপত্র দেখাতে না পারেন তাহলে সরকারি জমি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে। আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'
এক প্রশ্নের জবাবে এডিসি ইসমাঈল হোসেন বলেন, 'পূর্বে যে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল তা নথিপত্র দেখেই দেওয়া হয়েছিল। তার পরও তাঁরা যখন একটি আপত্তি দিয়েছেন সেটা চূড়ান্তভাবে যাচাই করে দেখছি।'
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী জানান, জেলা প্রশাসক জায়গাজমি সংক্রান্ত আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) মাধ্যমে করিয়ে থাকেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র নীরবে সরকারি জায়গাজমি বিভিন্নভাবে লুটপাট করছে। ডিসি-এডিসি সরকারের সুনজরে থাকায় এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছেন না।
জেলা প্রশাসন ও কাট্টলী ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্রে দেখা গেছে, জমির আহম্মদ গং উত্তর পাহাড়তলী মৌজার বিএস ২১৪ দাগে সাত দশমিক ৯৬ শতক টিলা, ২০৫ দাগে ছয় দশমিক ১৬ একর টিলা, ১৫০ দাগে তিন দশমিক ২২ একর টিলা, ৭৬৫ দাগে ১৬ একর টিলা ১ নম্বর খাস খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার চট্টগ্রামের নামে সঠিকভাবে বিএস জরিপ চূড়ান্ত আছে। কিন্তু জমির গং এ জমির জাল দলিল করে তা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। কাট্টলী ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুছা ২০১০ সালের ১৫ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) চান্দগাঁও সার্কেল বরাবর এ রিপোর্ট দেন। ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন স্বাক্ষরিত উচ্ছেদ মামলা নম্বর ০২/১১-এর নথিপত্র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর পাঠানো হয়। দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর জমির গংকে বিএস দাগ ১৫০ ও ২১৪ নম্বরের প্রায় ১০ একর জায়গা থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। ১০ একর জায়গা থেকে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার পর ১০ মাস চলে গেলেও রহস্যজনক 'আপত্তি'র কারণে সরকারি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া ৩২ একর জায়গার মধ্যে মাত্র ১০ একর জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাকি ২২ একর জায়গা ওই চক্রের কবলে থাকলেও সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়নি জেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানায়, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন উত্তর কাট্টলী এলাকায় প্রতি গণ্ডা জায়গা দেড় লাখ থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে ৩২ একর (৮০ কানি) জায়গার বেসরকারি মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
জমির আহম্মদের ছেলে শাহাবুদ্দিন আহম্মদ বলেন, 'এসব আমাদের নিজেদের জমি। শুনানির সময় জেলা প্রশাসনের কাছে সব নথিপত্র দাখিল করেছি। এসব জায়গা থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার অধিকার নেই জেলা প্রশাসনের।'
এক প্রশ্নের জবাবে শাহাবুদ্দিন বলেন, 'জেলা প্রশাসন আমাদের যে উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছে তা সঠিক হয়নি।'
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহম্মদ গতকাল সোমবার বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'কী কারণে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কখন দেওয়া হয়েছে, কেন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না- এসব নথিপত্র না দেখে বলতে পারছি না। নথিপত্র দেখার পর সরকারি জমিতে কোনো অবৈধ দখলদার থাকলে নিশ্চয়ই তাদের উচ্ছেদ করা হবে।'
উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার পর ১০ মাস চলে গেলেও সরকারি মূল্যবান জমি থেকে কেন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়নি জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, 'আমার সরকারি অফিস সাড়ে ৩টা পর্যন্ত, কিন্তু আমি এখনো (সাড়ে ৪টা) অফিস করছি। নথিপত্র না দেখে কিছুই বলা সম্ভব নয়।'
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, '২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর জমির আহম্মদ গংয়ের ১১ জনকে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এর কিছুদিন পর তাঁরা একটি আপত্তি দাখিল করেন। চলতি মাসের ২৯ তারিখে চূড়ান্ত শুনানি রয়েছে। এখানে তাঁরা যদি যথাযথ নথিপত্র দেখাতে না পারেন তাহলে সরকারি জমি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে। আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।'
এক প্রশ্নের জবাবে এডিসি ইসমাঈল হোসেন বলেন, 'পূর্বে যে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল তা নথিপত্র দেখেই দেওয়া হয়েছিল। তার পরও তাঁরা যখন একটি আপত্তি দিয়েছেন সেটা চূড়ান্তভাবে যাচাই করে দেখছি।'
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী জানান, জেলা প্রশাসক জায়গাজমি সংক্রান্ত আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) মাধ্যমে করিয়ে থাকেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র নীরবে সরকারি জায়গাজমি বিভিন্নভাবে লুটপাট করছে। ডিসি-এডিসি সরকারের সুনজরে থাকায় এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছেন না।
জেলা প্রশাসন ও কাট্টলী ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্রে দেখা গেছে, জমির আহম্মদ গং উত্তর পাহাড়তলী মৌজার বিএস ২১৪ দাগে সাত দশমিক ৯৬ শতক টিলা, ২০৫ দাগে ছয় দশমিক ১৬ একর টিলা, ১৫০ দাগে তিন দশমিক ২২ একর টিলা, ৭৬৫ দাগে ১৬ একর টিলা ১ নম্বর খাস খতিয়ানে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ডেপুটি কমিশনার চট্টগ্রামের নামে সঠিকভাবে বিএস জরিপ চূড়ান্ত আছে। কিন্তু জমির গং এ জমির জাল দলিল করে তা আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। কাট্টলী ভূমি অফিসের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুছা ২০১০ সালের ১৫ মার্চ সহকারী কমিশনার (ভূমি) চান্দগাঁও সার্কেল বরাবর এ রিপোর্ট দেন। ২০১১ সালের ৩১ জানুয়ারি চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন স্বাক্ষরিত উচ্ছেদ মামলা নম্বর ০২/১১-এর নথিপত্র অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবর পাঠানো হয়। দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর জমির গংকে বিএস দাগ ১৫০ ও ২১৪ নম্বরের প্রায় ১০ একর জায়গা থেকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। ১০ একর জায়গা থেকে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়ার পর ১০ মাস চলে গেলেও রহস্যজনক 'আপত্তি'র কারণে সরকারি কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া ৩২ একর জায়গার মধ্যে মাত্র ১০ একর জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু বাকি ২২ একর জায়গা ওই চক্রের কবলে থাকলেও সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়নি জেলা প্রশাসন।
এলাকাবাসী জানায়, সিটি করপোরেশনের আওতাধীন উত্তর কাট্টলী এলাকায় প্রতি গণ্ডা জায়গা দেড় লাখ থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে ৩২ একর (৮০ কানি) জায়গার বেসরকারি মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।
জমির আহম্মদের ছেলে শাহাবুদ্দিন আহম্মদ বলেন, 'এসব আমাদের নিজেদের জমি। শুনানির সময় জেলা প্রশাসনের কাছে সব নথিপত্র দাখিল করেছি। এসব জায়গা থেকে আমাদের উচ্ছেদ করার অধিকার নেই জেলা প্রশাসনের।'
এক প্রশ্নের জবাবে শাহাবুদ্দিন বলেন, 'জেলা প্রশাসন আমাদের যে উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছে তা সঠিক হয়নি।'
No comments