বিরোধপূর্ণ দ্বীপে সেনা পাঠাতে পারে জাপান

পূর্ব চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ দ্বীপগুলো নিয়ে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেলে ওই অঞ্চলে সৈন্য পাঠাতে পারে জাপান। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গতকাল শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। আগের দিন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদাও প্রায় একই ধরনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন।


পূর্ব চীন সাগরের কয়েকটি দ্বীপের মালিকানা নিয়ে চীন ও জাপানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। জাপানের দখলে থাকা দ্বীপগুলো সেখানে সেঙ্কাকু আর চীনে দিয়াওইউ নামে পরিচিত। কয়েক দিন আগে চীন ঘোষণা দিয়েছে, বিরোধপূর্ণ দ্বীপগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে আলাদা সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা এবং ওইসব দ্বীপে তারা সেনা মোতায়েন করে।
জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাতোশি মরিমোতো বলেন, টোকিওর অবস্থান বদলায়নি। তবে দ্বীপগুলো রক্ষায় প্রয়োজনে টোকিও শক্তি প্রয়োগ করতে পারে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
সাতোশি মরিমাতো টোকিওতে সাংবাদিকদের বলেন, ‘নাম সেঙ্কাকু হোক বা না হোক দ্বীপগুলোর প্রতিরক্ষার কাজ প্রধানত কোস্টগার্ড ও পুলিশ পরিচালনা করে। তবে আইনের শর্ত অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হলে সেখানে সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের সেনারা পদক্ষেপ নিতে পারে।’
জাপানি ভূখণ্ডে কোনো ‘অবৈধ পদক্ষেপ’ নেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে বলে প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোদা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার একদিন পর প্রতিরক্ষামন্ত্রী মরিমোতোর এ মন্তব্য এল। প্রধানমন্ত্রী নোদা গত বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টকে বলেন, ‘সেঙ্কাকুসহ আমাদের রাষ্ট্রের অধীন যেকোনো স্থল বা জলসীমায় প্রতিবেশী দেশগুলো কোনো পদক্ষেপ নিলে তার বিরুদ্ধে আমরা সেলফ-ডিভেন্স ফোর্সের সেনাদের ব্যবহার করাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেব। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আমরা সংকট-ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নিরেট কাঠামো গ্রহণ করি এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করি।’
অবশ্য জাপানের প্রধান কেবিনেট সচিব ও সরকারের শীর্ষ মুখপাত্র ওসমাও ফুজিমুরা প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের ভিন্ন সংজ্ঞা উপস্থাপন করেছেন। তিনি গতকাল মন্তব্য করেন, প্রধানমন্ত্রী একটি চীনা সামরিক আক্রমণের কাল্পনিক প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মাত্র।
ফুজিমুরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নোদা একটি তাত্ত্বিক সম্ভাব্যতার বিষয় উল্লেখ করেন এবং তার উদাহরণ টানতে গিয়ে সেলফ-ডিফেন্স ফোর্স সেনা ব্যবহারের কথা উল্লেখ করেছেন।’ সুনির্দিষ্টভাবে চীনকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী ওই মন্তব্য করেননি বলেও তিনি দাবি করেন।
তেলসমৃদ্ধ ওই দ্বীপগুলোর পাশের জলসীমায় গত মাসে চীনা জাহাজ দুবার প্রবেশ করার পর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ওই ঘটনার বিরুদ্ধে জাপান গত সপ্তাহে বেইজিংয়ের কাছে দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছে। এ ছাড়া জাপানে চীনা রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.