মন্ত্রীর যানজট দর্শন
মন্ত্রণালয়ের গণসংযোগ শাখা থেকে আগের দিনই গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিকেল চারটায় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যানজট পরিদর্শনে যাবেন। স্থান বাংলামোটর থেকে ফার্মগেট। বিকেল চারটার দিকে পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আগে থেকেই অবস্থান নেন বাংলামোটরে।
গণমাধ্যমকর্মী ও টিভি ক্যামেরাও ছিল প্রস্তুত। পাঁচটার দিকে ওবায়দুল কাদের বাংলামোটরে এসে গাড়ি থেকে নামেন।
মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল, ফার্মগেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চালকের লাইসেন্স এবং যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করবেন। কিন্তু ইফতারের আগে আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে ব্যস্ততম এই সড়ক অচল হয়ে যেতে পারে, এ আশঙ্কায় কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে নিরুৎসাহিত করেন।
এরপর ওবায়দুল কাদের ব্যস্ত সড়ক ধরে হাঁটা শুরু করেন। সঙ্গে পুলিশ, মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা। পেছনে মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের গাড়ির বহর। মন্ত্রীর পথচলা, অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা ধারণ করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে টিভি ও ফটোসাংবাদিকদের ক্যামেরাগুলো। কারওয়ান বাজার মোড়ে এসে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই স্থানের যানজট কমানোর জন্য করণীয় কী? তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মাহবুবুর রহমান বলেন, কারওয়ান বাজারে ডান ও বাঁ দিকে চলাচল বন্ধ করে দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে টানা যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করলে যানজট কমে যাবে। তবে এখন এ ব্যবস্থা নিলে দুর্ভোগ বাড়বে। তাই ঈদের পর এ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। ওবায়দুল কাদের এতে সায় দেন।
সেখান থেকে যোগাযোগমন্ত্রী দলবল নিয়ে যান ফার্মগেটে। সেখানে গিয়ে দেখেন, শত শত ঘরমুখী মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষায়। মন্ত্রী তখন ফোন দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে। বিআরটিসির বাস বাড়ানোর নির্দেশ দেন তাঁকে। বিশেষ করে নারীদের জন্য বাস চালুর কথা বলেন।
এরপর যোগাযোগমন্ত্রী ফার্মগেট ফুটওভারব্রিজের নিচে গিয়ে কিছুক্ষণ থামেন। সেখানে ফুটপাতের ওপর থাকা ওভারব্রিজের একটি পিলার দেখিয়ে বলেন, ‘এটা সরিয়ে ফেললে তো রাস্তা বাড়ে। যানজটও কমে।’ পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে বলেন, ‘আপনি আগেও তো আমাকে বলেছিলেন, যানবাহন মোড় নেওয়ার ক্ষেত্রে এই পিলার একটি বাধা।’ এরপর ওবায়দুল কাদের উৎসুক মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘এই কাজ আমার নয়। গাড়ি আমার। রাস্তা ও ফুটওভারব্রিজ সিটি করপোরেশনের। তার পরও আমি তো আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না।’ এ কথা বলেই ওবায়দুল কাদের তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রশাসককে ফোনে ধরিয়ে দিতে। কিন্তু ডিসিসি উত্তরের প্রশাসককে তখন মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি, পাওয়া যায় দক্ষিণের প্রশাসককে। তাঁর কাছে যাত্রাবাড়ী এলাকার যানজটের অবস্থা জানতে চান।
ফার্মগেটে রাস্তায় দাঁড়িয়েই ওবায়দুল কাদের অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেন। বলেন, এখন যানজট অসহনীয় পর্যায়ে। তবে ছয় মাসের মধ্যে যানজট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। এ জন্য ঈদের পর প্যাকেজ কার্যক্রম চালু করা হবে।
ফার্মগেট এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, মন্ত্রী আসবেন, সেটা আগেই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই খামারবাড়ী হয়ে মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও গাবতলী থেকে আসা যানবাহন আটকে দিয়ে মন্ত্রীর পরিদর্শনের পথ খোলা রাখা হয়। এ জন্য শাহবাগ থেকে মহাখালীমুখী পথে যান চলাচল বন্ধ হয়নি এবং যানজটও হয়নি। কিন্তু এ সময় মহাখালী থেকে শাহবাগমুখী সড়ক অর্থাৎ পূর্ব পাশের পথটিও দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখা হয়।
প্রায় এক ঘণ্টার এই যানজট দর্শন শেষে যখন যোগাযোগমন্ত্রী ফিরে যান, তখন ইফতারের সময়ও প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। মহাখালী থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ যানবাহনে পুরো ঠাসা। যানবাহনগুলো চলছিল হাঁটা গতিতে। খামারবাড়ীর সামনের সড়কের যানবাহনের সারি তখন পশ্চিমে মানিক মিয়া এভিনিউ এবং উত্তরে চন্দ্রিমা উদ্যান ছাড়িয়ে গেছে। একপর্যায়ে বিরক্ত যাত্রীরা বাস থেকে চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করেন। রাসেল আহমেদ নামের এক বাসযাত্রী বলেন, ‘ইফতারের আগে যানজট-দর্শনের এই নাটক দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। মানুষের এখন আর নাটক দেখার সময় নেই। পারলে কিছু করে দেখান।’
মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রীর ইচ্ছা ছিল, ফার্মগেটে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চালকের লাইসেন্স এবং যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করবেন। কিন্তু ইফতারের আগে আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসালে ব্যস্ততম এই সড়ক অচল হয়ে যেতে পারে, এ আশঙ্কায় কর্মকর্তারা মন্ত্রীকে নিরুৎসাহিত করেন।
এরপর ওবায়দুল কাদের ব্যস্ত সড়ক ধরে হাঁটা শুরু করেন। সঙ্গে পুলিশ, মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা। পেছনে মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের গাড়ির বহর। মন্ত্রীর পথচলা, অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা ধারণ করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে টিভি ও ফটোসাংবাদিকদের ক্যামেরাগুলো। কারওয়ান বাজার মোড়ে এসে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই স্থানের যানজট কমানোর জন্য করণীয় কী? তখন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক) মাহবুবুর রহমান বলেন, কারওয়ান বাজারে ডান ও বাঁ দিকে চলাচল বন্ধ করে দিয়ে উত্তর-দক্ষিণে টানা যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করলে যানজট কমে যাবে। তবে এখন এ ব্যবস্থা নিলে দুর্ভোগ বাড়বে। তাই ঈদের পর এ ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে। ওবায়দুল কাদের এতে সায় দেন।
সেখান থেকে যোগাযোগমন্ত্রী দলবল নিয়ে যান ফার্মগেটে। সেখানে গিয়ে দেখেন, শত শত ঘরমুখী মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষায়। মন্ত্রী তখন ফোন দেন বিআরটিসির চেয়ারম্যানকে। বিআরটিসির বাস বাড়ানোর নির্দেশ দেন তাঁকে। বিশেষ করে নারীদের জন্য বাস চালুর কথা বলেন।
এরপর যোগাযোগমন্ত্রী ফার্মগেট ফুটওভারব্রিজের নিচে গিয়ে কিছুক্ষণ থামেন। সেখানে ফুটপাতের ওপর থাকা ওভারব্রিজের একটি পিলার দেখিয়ে বলেন, ‘এটা সরিয়ে ফেললে তো রাস্তা বাড়ে। যানজটও কমে।’ পুলিশের যুগ্ম কমিশনারকে বলেন, ‘আপনি আগেও তো আমাকে বলেছিলেন, যানবাহন মোড় নেওয়ার ক্ষেত্রে এই পিলার একটি বাধা।’ এরপর ওবায়দুল কাদের উৎসুক মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘এই কাজ আমার নয়। গাড়ি আমার। রাস্তা ও ফুটওভারব্রিজ সিটি করপোরেশনের। তার পরও আমি তো আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না।’ এ কথা বলেই ওবায়দুল কাদের তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রশাসককে ফোনে ধরিয়ে দিতে। কিন্তু ডিসিসি উত্তরের প্রশাসককে তখন মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি, পাওয়া যায় দক্ষিণের প্রশাসককে। তাঁর কাছে যাত্রাবাড়ী এলাকার যানজটের অবস্থা জানতে চান।
ফার্মগেটে রাস্তায় দাঁড়িয়েই ওবায়দুল কাদের অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেন। বলেন, এখন যানজট অসহনীয় পর্যায়ে। তবে ছয় মাসের মধ্যে যানজট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। এ জন্য ঈদের পর প্যাকেজ কার্যক্রম চালু করা হবে।
ফার্মগেট এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, মন্ত্রী আসবেন, সেটা আগেই তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই খামারবাড়ী হয়ে মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও গাবতলী থেকে আসা যানবাহন আটকে দিয়ে মন্ত্রীর পরিদর্শনের পথ খোলা রাখা হয়। এ জন্য শাহবাগ থেকে মহাখালীমুখী পথে যান চলাচল বন্ধ হয়নি এবং যানজটও হয়নি। কিন্তু এ সময় মহাখালী থেকে শাহবাগমুখী সড়ক অর্থাৎ পূর্ব পাশের পথটিও দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখা হয়।
প্রায় এক ঘণ্টার এই যানজট দর্শন শেষে যখন যোগাযোগমন্ত্রী ফিরে যান, তখন ইফতারের সময়ও প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। মহাখালী থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ যানবাহনে পুরো ঠাসা। যানবাহনগুলো চলছিল হাঁটা গতিতে। খামারবাড়ীর সামনের সড়কের যানবাহনের সারি তখন পশ্চিমে মানিক মিয়া এভিনিউ এবং উত্তরে চন্দ্রিমা উদ্যান ছাড়িয়ে গেছে। একপর্যায়ে বিরক্ত যাত্রীরা বাস থেকে চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করেন। রাসেল আহমেদ নামের এক বাসযাত্রী বলেন, ‘ইফতারের আগে যানজট-দর্শনের এই নাটক দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। মানুষের এখন আর নাটক দেখার সময় নেই। পারলে কিছু করে দেখান।’
No comments