চাকরির তিন বছরে এক বছরই বিদেশে-ঢাকা ওয়াসার এমডির ভ্রমণপ্রীতি by অমিতোষ পাল
চাকরিজীবনের দুই বছর ১০ মাসের মধ্যে এক বছরই বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করে কাটিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. তাকসিম এ খান। এই সময়ে দাপ্তরিক কাজে ১৩টি দেশে এক বা একাধিকবার সফর করলেও প্রতিটি সফরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে যুক্ত করে নিয়েছেন তিনি। কারণ তাঁর স্ত্রী-সন্তান যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
সেখানেই তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাকসিম এ খান নিজেও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাই প্রতিটি সফরে যুক্তরাষ্ট্রকে জুড়ে দিয়েছেন। এসব ভ্রমণের প্রায় পুরো অর্থই ঢাকা ওয়াসাকে বহন করতে হয়েছে।
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত নথিপত্র ঘেঁটে এমডির ব্যাপারে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রহমতউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমিও শুনেছি ওনার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। এ জন্য উনি মাঝেমধ্যে সেখানে যান। কতবার গিয়েছেন আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নিয়ে গেলে সেই অর্থ তিনি নিজেই বহন করেছেন বলে আমি শুনেছি।'
জানা গেছে, ড. তাকসিম এ খান বিভিন্ন দেশে স্যুয়ারেজ ও পানিবিষয়ক কর্মশালায় যোগদান করলেও এসব থেকে আহরিত জ্ঞানের কোনো প্রতিফলন ঢাকা শহরে পড়েনি। শুষ্ক মৌসুম শুরু হলেই তীব্র হয় পানি সংকট। আবার সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ওয়াসার কর্মকর্তাদের মতে, কর্মশালা-সম্মেলন এসব এমডির বাহানা। আড়ালে বিদেশ ভ্রমণই প্রধান উদ্দেশ্য। না হলে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার এমন নাজুক অবস্থা হতো না।
ঢাকা ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গত তিন বছরে প্রায় ২০ বার যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টিপল ভিসা থাকায় তাঁর যাতায়াতে কোনো সমস্যা হয়নি। প্রতিবার তিনি পাঁচ থেকে ১০ দিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকবার নিজের খরচে গেলেও বেশ কয়েকবার সেমিনার-ওয়ার্কশপের নামে খরচটা ওয়াসার ওপর দিয়ে চালিয়ে দিয়েছেন। এমনকি অন্য কোনো দেশে সেমিনার হলেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভ্রমণের তালিকায় যুক্ত করেছেন তিনি। গত এক বছরে তিনি অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র (অনেকবার), সিঙ্গাপুর, উগান্ডা, কেনিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ সফর করেছেন। বিদেশ ভ্রমণের তালিকায় তিনিই সবার শীর্ষে।
ঢাকা ওয়াসার সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুল বাকী চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, যেকোনো প্রকল্পের বিপরীতে বিদেশে গেলে অনেকে মনে করেন এটা প্রকল্পের টাকা, ওয়াসার নয়। বাস্তবে এই টাকা ওয়াসার কাঁধেই বর্তায়। যেমন- একটি প্রকল্পের জন্য বিদেশে অনেক সময় প্রকল্প পরিদর্শন করতে যেতে হয়। এ জন্য একটি বাজেট থাকে। দাতা সংস্থা ঋণ দিলেও এট ওয়াসার পানি বেচার টাকা দিয়েই পরিশোধ করতে হয়। এ ছাড়া প্রতিবছর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে কর্মশালায় যোগদানের জন্যও একটি বাজেট থাকে। এটা সরাসরি রাজস্ব খাতের টাকা। সে টাকাই এসব ভ্রমণের খরচ বাবদ ব্যয় করা হয়।
ওয়াসার অনেক কর্মকর্তার বক্তব্য, এমডি তাঁর দায়িত্ব পালনের দুই বছর ১০ মাসের মধ্যে অন্তত এক বছরই বিদেশে কাটিয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় ঢাকা শহর নিয়ে তাঁর ভাবারও সময় নেই। কারণ তিনিও যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী হতে চাচ্ছেন।
তাকসিম এ খানের বিদেশ ভ্রমণ-সম্পর্কিত নথিতে দেখা গেছে, ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকা ওয়াসায় যোগদানের পর এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে ৯১ দিন বিদেশে কাটিয়েছেন। ২০০৯ সালের ১৭ থেকে ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে, ২০১০ সালের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি চীনে, ৯ থেকে ১৪ এপ্রিল উগান্ডায়, ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে, ১০ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর ফিলিপাইন ও ফ্রান্সে এবং ২১ থেকে ২৯ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ায় থেকেছেন। ২০১১ সালের ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানি, ৪ থেকে ৮ জুলাই সিঙ্গাপুরে, ২৯ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় এবং ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কুয়েতে কাটিয়েছেন। এ ছাড়া ২০১২ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্রিটেনে এবং ২৮ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ইতালিতে কাটিয়েছেন ড. তাকসিম। বেশির ভাগ সফরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে জুড়ে দেওয়ায় বিদেশে তাঁর মোট অবস্থানকাল এক বছরের বেশি হবে বলে ওয়াসার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান।
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ-সংক্রান্ত নথিপত্র ঘেঁটে এমডির ব্যাপারে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তাকসিম এ খানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। তবে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রহমতউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমিও শুনেছি ওনার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। এ জন্য উনি মাঝেমধ্যে সেখানে যান। কতবার গিয়েছেন আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে ছুটি নিয়ে গেলে সেই অর্থ তিনি নিজেই বহন করেছেন বলে আমি শুনেছি।'
জানা গেছে, ড. তাকসিম এ খান বিভিন্ন দেশে স্যুয়ারেজ ও পানিবিষয়ক কর্মশালায় যোগদান করলেও এসব থেকে আহরিত জ্ঞানের কোনো প্রতিফলন ঢাকা শহরে পড়েনি। শুষ্ক মৌসুম শুরু হলেই তীব্র হয় পানি সংকট। আবার সামান্য বৃষ্টিতেই নগরীতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ওয়াসার কর্মকর্তাদের মতে, কর্মশালা-সম্মেলন এসব এমডির বাহানা। আড়ালে বিদেশ ভ্রমণই প্রধান উদ্দেশ্য। না হলে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার এমন নাজুক অবস্থা হতো না।
ঢাকা ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা জানান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক গত তিন বছরে প্রায় ২০ বার যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টিপল ভিসা থাকায় তাঁর যাতায়াতে কোনো সমস্যা হয়নি। প্রতিবার তিনি পাঁচ থেকে ১০ দিন যুক্তরাষ্ট্রে কাটিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকবার নিজের খরচে গেলেও বেশ কয়েকবার সেমিনার-ওয়ার্কশপের নামে খরচটা ওয়াসার ওপর দিয়ে চালিয়ে দিয়েছেন। এমনকি অন্য কোনো দেশে সেমিনার হলেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভ্রমণের তালিকায় যুক্ত করেছেন তিনি। গত এক বছরে তিনি অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, ফিলিপাইন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র (অনেকবার), সিঙ্গাপুর, উগান্ডা, কেনিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ সফর করেছেন। বিদেশ ভ্রমণের তালিকায় তিনিই সবার শীর্ষে।
ঢাকা ওয়াসার সাবেক প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুল বাকী চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, যেকোনো প্রকল্পের বিপরীতে বিদেশে গেলে অনেকে মনে করেন এটা প্রকল্পের টাকা, ওয়াসার নয়। বাস্তবে এই টাকা ওয়াসার কাঁধেই বর্তায়। যেমন- একটি প্রকল্পের জন্য বিদেশে অনেক সময় প্রকল্প পরিদর্শন করতে যেতে হয়। এ জন্য একটি বাজেট থাকে। দাতা সংস্থা ঋণ দিলেও এট ওয়াসার পানি বেচার টাকা দিয়েই পরিশোধ করতে হয়। এ ছাড়া প্রতিবছর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশে কর্মশালায় যোগদানের জন্যও একটি বাজেট থাকে। এটা সরাসরি রাজস্ব খাতের টাকা। সে টাকাই এসব ভ্রমণের খরচ বাবদ ব্যয় করা হয়।
ওয়াসার অনেক কর্মকর্তার বক্তব্য, এমডি তাঁর দায়িত্ব পালনের দুই বছর ১০ মাসের মধ্যে অন্তত এক বছরই বিদেশে কাটিয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় ঢাকা শহর নিয়ে তাঁর ভাবারও সময় নেই। কারণ তিনিও যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী হতে চাচ্ছেন।
তাকসিম এ খানের বিদেশ ভ্রমণ-সম্পর্কিত নথিতে দেখা গেছে, ২০০৯ সালের ১৪ অক্টোবর ঢাকা ওয়াসায় যোগদানের পর এ পর্যন্ত বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে ৯১ দিন বিদেশে কাটিয়েছেন। ২০০৯ সালের ১৭ থেকে ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে, ২০১০ সালের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি চীনে, ৯ থেকে ১৪ এপ্রিল উগান্ডায়, ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে, ১০ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর ফিলিপাইন ও ফ্রান্সে এবং ২১ থেকে ২৯ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ায় থেকেছেন। ২০১১ সালের ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানি, ৪ থেকে ৮ জুলাই সিঙ্গাপুরে, ২৯ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় এবং ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০১২ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কুয়েতে কাটিয়েছেন। এ ছাড়া ২০১২ সালের ২৮ জানুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্রিটেনে এবং ২৮ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত ইতালিতে কাটিয়েছেন ড. তাকসিম। বেশির ভাগ সফরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে জুড়ে দেওয়ায় বিদেশে তাঁর মোট অবস্থানকাল এক বছরের বেশি হবে বলে ওয়াসার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান।
No comments