গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সুলতানা কামালের সাক্ষ্য ১০ সেপ্টেম্বর- কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে জবানবন্দি চতুর্থ সাক্ষীর
জামায়াতে ইসলামীর নেতা মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানবত-াবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী ফকির আবদুল মান্নান গতকাল সোমবার জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, শেরপুরে ব্যাপক জনশ্রুতি আছে, মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হিসেবে যে কামারুজ্জামানের নাম শোনা যায়, তিনিই জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল মান্নানের জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি এ কে এম সাইফুল ইসলাম। কামারুজ্জামান এ সময় আসামির কাঠগড়ায় ছিলেন।
সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেন, সনদপত্রে তাঁর নাম মো. আবদুল মান্নান, তবে ফকির বংশের লোক হওয়ায় তিনি ফকির আবদুল মান্নান নামে পরিচিত। একাত্তরে ২১ বছর বয়সে তিনি শেরপুর কলেজে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগ করতেন এবং কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বলেন, একাত্তরের ২৬ মার্চ ভোরে বঙ্গবন্ধুর একটি ওয়্যারলেস বার্তা তাঁর হাতে আসে। শেরপুরের ঝিনাইগাতি বাজারে একটি শক্তিশালী ওয়্যারলেস কেন্দ্র ছিল, যেটি পরিচালনা করতেন বর্তমানে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার জামাল সাহেব। তাঁর কাছ থেকে তিনি ওই ওয়্যারলেস বার্তাটি পান। পরে স্থানীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নিজাম উদ্দিন এবং শেরপুর সংগ্রাম পরিষদের নেতারা তাঁকে বার্তাটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। ২৭ মার্চ তিনি ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাঙালি সুবেদার আবদুল হালিমের সহায়তায় ভারতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ক্যাপ্টেন কুমারের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, এপ্রিলের শেষ দিকে তিনি ভারতে যান এবং চেঙ্গাপাড়া যুব ক্যাম্পে গিয়ে ‘পলিটিক্যাল মোবিলাইজার’ হিসেবে কাজ করেন। বিজয়ের পর তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুল বাকী মিয়া (মৃত) ও হারুন-উর-রশীদ মাস্টার (মৃত) যুদ্ধ চলাকালে মৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করছিলেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে তথ্য দিতেন। এক দিন তিনি সেখানে উপস্থিত থাকাকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হিসেবে কামারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নাম শোনেন।
আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি দেশে ফিরে জানতে পারি পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার, আলবদর বাহিনীর লোকেরা এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ করে মানুষের জানমালের অনেক ক্ষতি করেছে। শেরপুরে ব্যাপক জনশ্রুতি আছে, যে কামারুজ্জামানের নাম আগে বলেছি, তিনিই জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান।’
জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী জেরার জন্য সময়ের আরজি জানান। ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সাক্ষীকে জেরা করার আদৌ কি দরকার আছে? যদি জেরা করতে ভালো লাগে তাহলে করেন।’
পরে জেরায় কফিল উদ্দিন জানতে চান, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে সাক্ষী কোনো আবেদন করেছেন কি না?’ জবাবে সাক্ষী বলেন, ‘না’। ‘শেরপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে কামারুজ্জামানের সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ হয়েছিল কি না’—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না’। ওই সময় তিনি কী করতেন না করতেন তা তিনি জানেন না।
কয়েকটি প্রশ্নের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী আবারও সময়ের আরজি জানান। পরে ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত জেরা মুলতবি করেন।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় সুলতানা কামালের সাক্ষ্য ১০ সেপ্টেম্বর: জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই মামলায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন ১০ সেপ্টেম্বর।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন এই ট্রাইব্যুনাল গতকাল এ দিন পুনর্নির্ধারণ করেন। সাক্ষ্যের দিন ধার্য থাকায় গতকাল সুলতানা কামাল ট্রাইব্যুনালে যান। তবে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনাল এই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ করেন।
এই মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং দ্বিতীয় সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবউদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম (এসপি মাহবুব)।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা: একই ট্রাইব্যুনালে গতকাল সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিনকে ৪৪তম দিনের মতো জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। বুধবারের (৮ আগস্ট) মধ্যে এই জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা রয়েছে। শারীরিক কারণে গতকালও সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি।
সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেন, সনদপত্রে তাঁর নাম মো. আবদুল মান্নান, তবে ফকির বংশের লোক হওয়ায় তিনি ফকির আবদুল মান্নান নামে পরিচিত। একাত্তরে ২১ বছর বয়সে তিনি শেরপুর কলেজে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগ করতেন এবং কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বলেন, একাত্তরের ২৬ মার্চ ভোরে বঙ্গবন্ধুর একটি ওয়্যারলেস বার্তা তাঁর হাতে আসে। শেরপুরের ঝিনাইগাতি বাজারে একটি শক্তিশালী ওয়্যারলেস কেন্দ্র ছিল, যেটি পরিচালনা করতেন বর্তমানে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার জামাল সাহেব। তাঁর কাছ থেকে তিনি ওই ওয়্যারলেস বার্তাটি পান। পরে স্থানীয় জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান, প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নিজাম উদ্দিন এবং শেরপুর সংগ্রাম পরিষদের নেতারা তাঁকে বার্তাটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। ২৭ মার্চ তিনি ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাঙালি সুবেদার আবদুল হালিমের সহায়তায় ভারতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ক্যাপ্টেন কুমারের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, এপ্রিলের শেষ দিকে তিনি ভারতে যান এবং চেঙ্গাপাড়া যুব ক্যাম্পে গিয়ে ‘পলিটিক্যাল মোবিলাইজার’ হিসেবে কাজ করেন। বিজয়ের পর তিনি দেশে ফেরেন। সে সময় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুল বাকী মিয়া (মৃত) ও হারুন-উর-রশীদ মাস্টার (মৃত) যুদ্ধ চলাকালে মৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করছিলেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে তথ্য দিতেন। এক দিন তিনি সেখানে উপস্থিত থাকাকালে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হিসেবে কামারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তির নাম শোনেন।
আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমি দেশে ফিরে জানতে পারি পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার, আলবদর বাহিনীর লোকেরা এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ করে মানুষের জানমালের অনেক ক্ষতি করেছে। শেরপুরে ব্যাপক জনশ্রুতি আছে, যে কামারুজ্জামানের নাম আগে বলেছি, তিনিই জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান।’
জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী জেরার জন্য সময়ের আরজি জানান। ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘সাক্ষীকে জেরা করার আদৌ কি দরকার আছে? যদি জেরা করতে ভালো লাগে তাহলে করেন।’
পরে জেরায় কফিল উদ্দিন জানতে চান, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়ে সাক্ষী কোনো আবেদন করেছেন কি না?’ জবাবে সাক্ষী বলেন, ‘না’। ‘শেরপুর কলেজের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে কামারুজ্জামানের সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ হয়েছিল কি না’—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না’। ওই সময় তিনি কী করতেন না করতেন তা তিনি জানেন না।
কয়েকটি প্রশ্নের পর আসামিপক্ষের আইনজীবী আবারও সময়ের আরজি জানান। পরে ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত জেরা মুলতবি করেন।
গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় সুলতানা কামালের সাক্ষ্য ১০ সেপ্টেম্বর: জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই মামলায় আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন ১০ সেপ্টেম্বর।
বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন এই ট্রাইব্যুনাল গতকাল এ দিন পুনর্নির্ধারণ করেন। সাক্ষ্যের দিন ধার্য থাকায় গতকাল সুলতানা কামাল ট্রাইব্যুনালে যান। তবে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনাল এই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ করেন।
এই মামলায় এ পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং দ্বিতীয় সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবউদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম (এসপি মাহবুব)।
সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা: একই ট্রাইব্যুনালে গতকাল সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিনকে ৪৪তম দিনের মতো জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। বুধবারের (৮ আগস্ট) মধ্যে এই জেরা শেষ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা রয়েছে। শারীরিক কারণে গতকালও সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়নি।
No comments