ধর্ম-ইসলামে পরিবেশ সংরক্ষণ ও পরিচ্ছন্নতা by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
ইসলামে পরিবেশের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন পরিবেশে বসবাস করলে মানুষের সুবিধা হবে বা মানুষ বেঁচে থাকতে পারবে, ইসলাম তা সুনিশ্চিত করেছে। আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে যেমন—গাছপালা, বাড়িঘর, মাটি, পানি, বায়ু, জীবজন্তু, পশুপাখি, রাস্তাঘাট, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, যানবাহন, কলকারখানা ইত্যাদি নিয়েই পরিবেশ।
চারপাশের পরিমণ্ডল, আকাশ-বাতাস, পাহাড়-পর্বত, মাটি, পানি, গাছপালা ইত্যাদি যা পরিবেশ হিসেবে খ্যাত, এগুলো সবই মহান স্রষ্টার অপূর্ব নিয়ামত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আমি পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছি এবং এতে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছি, আমি পৃথিবীতে প্রতিটি বস্তু সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছি এবং এতে তোমাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করেছি আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও, তাদের জন্যও। প্রতিটি বস্তুর ভান্ডার আমার কাছে আছে এবং আমি তা প্রয়োজনীয় পরিমাণেই সরবরাহ করে থাকি। আমি বৃষ্টিগর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করি এবং তা তোমাদের পান করতে দিই, ওর ভান্ডার তোমাদের কাছে নেই।’ (সূরা আল-হিজর, আয়াত: ১৯-২২)
পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্টিজীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এগুলোর বিনাশ বা ক্ষতি সাধন করা হলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়। অথচ ইসলাম তার অনুসারীদের সামগ্রিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত দেখতে চায়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং উন্নত জীবনমান পদ্ধতি একে অপরের পরিপূরক। পৃথিবীর মানুষকে গাছপালা ও পাহাড়-পর্বতকে ধ্বংস না করার জন্য সতর্কবাণী দিয়ে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে (মেঘমালাকে) স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে, তার মধ্য থেকে বৃষ্টিধারা নির্গত হয়। তিনি (আল্লাহ) তার বান্দাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সূরা আর-রূম, আয়াত-৩৮)
ইসলামে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। যেখানে-সেখানে উন্মুক্ত স্থ্থানে ময়লা-আবর্জনা, কফ, থুথু ও মলত্যাগে পরিবেশ দূষিত হয়ে স্বাস্থ্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। নোংরা ও দূষণমুক্ত পরিবেশ রোগব্যাধির প্রধান কারণ। তাই এসব দূষণযুক্ত পরিবেশের কবল থেকে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখলে মারাত্মক ও সংক্রামক রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে এসব নোংরা পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার ওপরই নির্ভর করে জনস্ব্বাস্থ্থ্যের সফলতা। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা ও দূষণ প্রতিরোধে সবার যথোচিত দায়িত্ব পালন করা উচিত। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ ও রুচিহীনতা পরিবেশদূষণের অন্যতম কারণ। অথচ ইসলাম এটাকে নিষিদ্ধ করেছে। সুস্থতা, সৌন্দর্য, মননশীলতা, উৎকর্ষ ও সমৃদ্ধির কথা বলে ইসলাম। সুতরাং ময়লা-আবর্জনা দিয়ে পরিবেশ দূষিত করা ঠিক নয়। নবী করিম (সা.) সাবধান করে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের আঙিনাকে পরিচ্ছন্ন রাখ।’ ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’
ইসলামে রুচিশীল পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতার কদর রয়েছে। রুচিশীলতা ও সৌন্দর্য ইসলামের সহজাত ও প্রকৃতিগত বিষয়। ঘরবাড়ি, দরজা-জানালা, বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট, শ্রেণীকক্ষ, বাড়ির আঙিনা এসব অপরিষ্কার থাকলে মানুষের জীবন খুবই দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে এগুলো সুন্দর, পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজ করতে, চলতে-ফিরতে মনে স্ব্বাচ্ছন্দ্যবোধ আসে এবং কাজ করে আনন্দ পাওয়া যায়। নামাজসহ বিভিন্ন শারীরিক ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য দেহ ও পোশাকের মতো পরিবেশও পবিত্র থাকা অন্যতম শর্ত। অবাধে শিল্পকারখানা নির্মাণ, ডাস্টবিন ও রাস্তার পাশের নোংরা আবর্জনার স্তূপ পরিবেশ দূষণ করছে। বায়ু ও পানি যেসব কারণে দূষিত হয়, সেগুলো প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি হওয়া চাই। নবী করিম (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘ঈমানের ৭০টি বা এর চেয়ে বেশি কিছু শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্ন হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক আবর্জনা সরানো।’ (বুখারি)
পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষায় ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে বৃক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবহাওয়া আর্দ্র ও নাতিশীতোষ্ণ রাখতে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বৃষ্টিপাত ঘটাতে, ভূমিক্ষয়, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস রোধ করতে এবং মাটিকে সরস ও উর্বর করতে বৃক্ষ প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। শুধু পরিবেশ রক্ষার জন্যই নয়, ধর্মীয় কারণেও মানুষকে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার কথা উল্লেখ করে গেছেন।
সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য চাই সুস্থ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। অনুকূল ও সুন্দর পরিবেশ ছাড়া কোনো জীবের অস্তিত্ব দীর্ঘ হতে পারে না। বনভূমি ও বন্য পশুপাখি আল্লাহপাকের দান ও প্রকৃতির শোভাবর্ধক। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রকৃতি-পরিবেশ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষভাবে দিকনির্দেশনা আরোপ করেছেন। তাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপনের জন্য অবশ্যই ইসলামের আলোকে পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন করা বাঞ্ছনীয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও তাপমাত্রা কমানোর জন্য বন-জঙ্গল ও গাছপালা অতীব প্রয়োজনীয়, যা মানুষ নির্বিচারে ধ্বংসে মেতেছে। অথচ প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে ইসলামের আরেকটি মৌলিক নীতি হলো প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির কোনোরূপ ধ্বংস, বিনাশ, অপচয় বা অপব্যবহার করা যাবে না। প্রত্যেকটি সৃষ্টি কোনো না কোনোভাবে মানুষ অথবা অন্য কোনো সৃষ্টিকে সেবা দান করে। পরিবেশ ধ্বংসের যেকোনো ধরনের উদ্যোগ বা চেষ্টা মানুষসহ অন্যান্য সৃষ্টিকে আল্লাহ প্রদত্ত সেবা থেকে বঞ্চিত করার শামিল। বিনা প্রয়োজনে অযৌক্তিকভাবে কোনো সেবা থেকে বঞ্চিত করার কোনো নৈতিক অধিকার কিন্তু মানবজাতিকে প্রদান করা হয়নি। প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়, বিনাশ অথবা অপরিমিত ব্যবহার কোনোটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সমর্থনযোগ্য নয়। ইসলাম পরিবেশ সংকটের অবসান প্রত্যাশা করে। কেননা, পরিবেশ সংকট উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ইসলাম উন্নয়নের ক্ষেত্রে বস্তুগত ও আত্মিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। পরিবেশ সুরক্ষায় গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে ইসলামের শিক্ষা ও মূল্যবোধ বহুলাংশে সহায়ক হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
পরিবেশের বিভিন্ন উপাদান মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্টিজীবের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এগুলোর বিনাশ বা ক্ষতি সাধন করা হলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়। অথচ ইসলাম তার অনুসারীদের সামগ্রিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত দেখতে চায়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং উন্নত জীবনমান পদ্ধতি একে অপরের পরিপূরক। পৃথিবীর মানুষকে গাছপালা ও পাহাড়-পর্বতকে ধ্বংস না করার জন্য সতর্কবাণী দিয়ে পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে (মেঘমালাকে) স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে, তার মধ্য থেকে বৃষ্টিধারা নির্গত হয়। তিনি (আল্লাহ) তার বান্দাদের মধ্যে যাদেরকে ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সূরা আর-রূম, আয়াত-৩৮)
ইসলামে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। যেখানে-সেখানে উন্মুক্ত স্থ্থানে ময়লা-আবর্জনা, কফ, থুথু ও মলত্যাগে পরিবেশ দূষিত হয়ে স্বাস্থ্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। নোংরা ও দূষণমুক্ত পরিবেশ রোগব্যাধির প্রধান কারণ। তাই এসব দূষণযুক্ত পরিবেশের কবল থেকে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখলে মারাত্মক ও সংক্রামক রোগ-ব্যাধি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে এসব নোংরা পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার ওপরই নির্ভর করে জনস্ব্বাস্থ্থ্যের সফলতা। তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষা ও দূষণ প্রতিরোধে সবার যথোচিত দায়িত্ব পালন করা উচিত। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা নিক্ষেপ ও রুচিহীনতা পরিবেশদূষণের অন্যতম কারণ। অথচ ইসলাম এটাকে নিষিদ্ধ করেছে। সুস্থতা, সৌন্দর্য, মননশীলতা, উৎকর্ষ ও সমৃদ্ধির কথা বলে ইসলাম। সুতরাং ময়লা-আবর্জনা দিয়ে পরিবেশ দূষিত করা ঠিক নয়। নবী করিম (সা.) সাবধান করে বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের আঙিনাকে পরিচ্ছন্ন রাখ।’ ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’
ইসলামে রুচিশীল পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতার কদর রয়েছে। রুচিশীলতা ও সৌন্দর্য ইসলামের সহজাত ও প্রকৃতিগত বিষয়। ঘরবাড়ি, দরজা-জানালা, বিদ্যালয়, রাস্তাঘাট, শ্রেণীকক্ষ, বাড়ির আঙিনা এসব অপরিষ্কার থাকলে মানুষের জীবন খুবই দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। পক্ষান্তরে এগুলো সুন্দর, পরিচ্ছন্ন থাকলে কাজ করতে, চলতে-ফিরতে মনে স্ব্বাচ্ছন্দ্যবোধ আসে এবং কাজ করে আনন্দ পাওয়া যায়। নামাজসহ বিভিন্ন শারীরিক ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য দেহ ও পোশাকের মতো পরিবেশও পবিত্র থাকা অন্যতম শর্ত। অবাধে শিল্পকারখানা নির্মাণ, ডাস্টবিন ও রাস্তার পাশের নোংরা আবর্জনার স্তূপ পরিবেশ দূষণ করছে। বায়ু ও পানি যেসব কারণে দূষিত হয়, সেগুলো প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি হওয়া চাই। নবী করিম (সা.) বাণী প্রদান করেছেন, ‘ঈমানের ৭০টি বা এর চেয়ে বেশি কিছু শাখা-প্রশাখা রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বনিম্ন হচ্ছে রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক আবর্জনা সরানো।’ (বুখারি)
পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষায় ও দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরিতে বৃক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আবহাওয়া আর্দ্র ও নাতিশীতোষ্ণ রাখতে জলীয়বাষ্পপূর্ণ বাতাসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বৃষ্টিপাত ঘটাতে, ভূমিক্ষয়, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস রোধ করতে এবং মাটিকে সরস ও উর্বর করতে বৃক্ষ প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে। শুধু পরিবেশ রক্ষার জন্যই নয়, ধর্মীয় কারণেও মানুষকে বৃক্ষরোপণ করতে হবে। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষরোপণ ও পরিচর্যার কথা উল্লেখ করে গেছেন।
সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য চাই সুস্থ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। অনুকূল ও সুন্দর পরিবেশ ছাড়া কোনো জীবের অস্তিত্ব দীর্ঘ হতে পারে না। বনভূমি ও বন্য পশুপাখি আল্লাহপাকের দান ও প্রকৃতির শোভাবর্ধক। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রকৃতি-পরিবেশ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষভাবে দিকনির্দেশনা আরোপ করেছেন। তাই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপনের জন্য অবশ্যই ইসলামের আলোকে পরিবেশ সংরক্ষণে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন করা বাঞ্ছনীয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও তাপমাত্রা কমানোর জন্য বন-জঙ্গল ও গাছপালা অতীব প্রয়োজনীয়, যা মানুষ নির্বিচারে ধ্বংসে মেতেছে। অথচ প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে ইসলামের আরেকটি মৌলিক নীতি হলো প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির কোনোরূপ ধ্বংস, বিনাশ, অপচয় বা অপব্যবহার করা যাবে না। প্রত্যেকটি সৃষ্টি কোনো না কোনোভাবে মানুষ অথবা অন্য কোনো সৃষ্টিকে সেবা দান করে। পরিবেশ ধ্বংসের যেকোনো ধরনের উদ্যোগ বা চেষ্টা মানুষসহ অন্যান্য সৃষ্টিকে আল্লাহ প্রদত্ত সেবা থেকে বঞ্চিত করার শামিল। বিনা প্রয়োজনে অযৌক্তিকভাবে কোনো সেবা থেকে বঞ্চিত করার কোনো নৈতিক অধিকার কিন্তু মানবজাতিকে প্রদান করা হয়নি। প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়, বিনাশ অথবা অপরিমিত ব্যবহার কোনোটিই ইসলামের দৃষ্টিতে সমর্থনযোগ্য নয়। ইসলাম পরিবেশ সংকটের অবসান প্রত্যাশা করে। কেননা, পরিবেশ সংকট উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ইসলাম উন্নয়নের ক্ষেত্রে বস্তুগত ও আত্মিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করে। পরিবেশ সুরক্ষায় গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে ইসলামের শিক্ষা ও মূল্যবোধ বহুলাংশে সহায়ক হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও কলাম লেখক।
dr.munimkhan@yahoo.com
No comments