সাগরজয়ী দলকে ফুলেল শুভেচ্ছা-'ভারতের বিপক্ষেও জয় প্রায় নিশ্চিত'
সমুদ্রসীমা নিয়ে ঐতিহাসিক মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ প্রতিনিধি দলটিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। জার্মানির হামবুর্গে সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) গত বুধবার রায়ের সময় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন।
হামবুর্গ থেকে তাঁরা গতকাল সকালে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছলে তাঁদের শুভেচ্ছা জানানো হয়। মিয়ানমারের বিপক্ষে মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে উপপ্রতিনিধি (ডেপুটি এজেন্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও আনক্লজ অনুবিভাগের প্রধান রিয়ার এডমিরাল (অব.) খুরশিদ আলম এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের বিপক্ষে মামলাতেও বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি নিজেই মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি (এজেন্ট) হিসেবে আদালতে বক্তব্য রেখেছিলেন। রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশিদ আলমের মামলার সামগ্রিক দিক তত্ত্বাবধান করেন। বাংলাদেশের নিয়োজিত বিদেশি আইনজীবীরাও আদালতে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং যুক্তি-তর্কে অংশ নেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল তুন শিন।
ঐতিহাসিক জয় নিয়ে ঢাকায় ফেরত আসা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে শুভেচ্ছা জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল সকালে বিমানবন্দরে যান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেশে ফেরা মো. খুরশিদ আলম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানান, সমুদ্রসীমাসংক্রান্ত মামলায় মিয়ানমারের বিপক্ষে পাওয়া জয় ভারতের সঙ্গে জয়কেও সহজ করে দিয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। তিনি বলেন, 'ভৌগোলিক অবস্থান একই রকম বলে ভারতের বিপক্ষের মামলাতেও (নেদারল্যান্ডসের হেগের স্থায়ী সালিস ট্রাইব্যুনালে) বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত।' মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের করা তিনটি দাবিই মেনে নিয়েছে বলে তিনি জানান।
ন্যায্যতার ভিত্তিতেই আদালত রায় দিয়েছেন উল্লেখ করে খুরশিদ আলম বলেন, 'সব সময়ের মতো বাংলাদেশের নৌবাহিনী এখনো দেশের সমুদ্রে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সচেষ্ট থাকবে।'
ন্যায্যতার ভিত্তিতে রায় হওয়ায় মিয়ানমারকেও কিছু অংশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তাতে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি বরং দাবির চেয়ে বেশিই পেয়েছে বাংলাদেশ।'
খুরশিদ আলম আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার যেভাবে নিজের সাগরের রেখা টেনেছিল তাতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই মহীসোপানের অধিকার পেত না। কেননা, মিয়ানমার আর ভারতের টানা রেখার পর বাংলাদেশের জন্য কেবল ১৩০ নটিক্যাল মাইলই অবশিষ্ট ছিল। এ কারণেই আন্তর্জাতিক আদালতে যায় বাংলাদেশ।'
তিনি বলেন, '১৪ মার্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ১৩০ নয় বরং ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক এলাকা (ইইজেড) পাবে। শুধু তাই নয়, ওই দূরত্বের পর বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য মহীসোপানও উন্মুক্ত থাকবে।'
খুরশিদ আলম জানান, মিয়ানমার আদালতের কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাগরের (টেরিটোরিয়াল সি) মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইল বাংলাদেশকে দেওয়ার আবেদন করেছিল। মিয়ানমারের ওই দাবি নাকচ করে আদালত বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য ১২ নটিক্যাল মাইল সাগর এলাকার পক্ষে রায় দেয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের তিনটি দাবিই ইটলস মেনে নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ মামলায় খুরশিদ আলমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নৌবাহিনীতে কাজ করার সময় থেকেই বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি।
ইটলস গত বুধবারের রায়ে ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক এলাকায় (ইইজেড) এবং এর পরবর্তী মহীসোপান এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ অধিকারের আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের এ অধিকারকে মিয়ানমার অস্বীকার করে আসছিল। রায়ের পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশ যা চেয়েছিল তার চেয়েও বেশি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য বিশাল বিজয়।
খুরশিদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের কারণ সীমা নির্ধারণের পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে। মিয়ানমারের মতো ভারতও সমদূরত্বের ভিত্তিতে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশ বরাবরই ন্যায্যতাভিত্তিক পদ্ধতিতে সীমা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি নাগাদ ভারতের বিরুদ্ধে মামলাটি হেগের স্থায়ী সালিস ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ আশা করছে।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি নিজেই মিয়ানমারের সঙ্গে মামলায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি (এজেন্ট) হিসেবে আদালতে বক্তব্য রেখেছিলেন। রিয়ার এডমিরাল (অব.) মো. খুরশিদ আলমের মামলার সামগ্রিক দিক তত্ত্বাবধান করেন। বাংলাদেশের নিয়োজিত বিদেশি আইনজীবীরাও আদালতে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন এবং যুক্তি-তর্কে অংশ নেন। অন্যদিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল তুন শিন।
ঐতিহাসিক জয় নিয়ে ঢাকায় ফেরত আসা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে শুভেচ্ছা জানাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গতকাল সকালে বিমানবন্দরে যান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানানো হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেশে ফেরা মো. খুরশিদ আলম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানান, সমুদ্রসীমাসংক্রান্ত মামলায় মিয়ানমারের বিপক্ষে পাওয়া জয় ভারতের সঙ্গে জয়কেও সহজ করে দিয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন। তিনি বলেন, 'ভৌগোলিক অবস্থান একই রকম বলে ভারতের বিপক্ষের মামলাতেও (নেদারল্যান্ডসের হেগের স্থায়ী সালিস ট্রাইব্যুনালে) বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত।' মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের করা তিনটি দাবিই মেনে নিয়েছে বলে তিনি জানান।
ন্যায্যতার ভিত্তিতেই আদালত রায় দিয়েছেন উল্লেখ করে খুরশিদ আলম বলেন, 'সব সময়ের মতো বাংলাদেশের নৌবাহিনী এখনো দেশের সমুদ্রে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সচেষ্ট থাকবে।'
ন্যায্যতার ভিত্তিতে রায় হওয়ায় মিয়ানমারকেও কিছু অংশ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তাতে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি বরং দাবির চেয়ে বেশিই পেয়েছে বাংলাদেশ।'
খুরশিদ আলম আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার যেভাবে নিজের সাগরের রেখা টেনেছিল তাতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই মহীসোপানের অধিকার পেত না। কেননা, মিয়ানমার আর ভারতের টানা রেখার পর বাংলাদেশের জন্য কেবল ১৩০ নটিক্যাল মাইলই অবশিষ্ট ছিল। এ কারণেই আন্তর্জাতিক আদালতে যায় বাংলাদেশ।'
তিনি বলেন, '১৪ মার্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ১৩০ নয় বরং ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অর্থনৈতিক এলাকা (ইইজেড) পাবে। শুধু তাই নয়, ওই দূরত্বের পর বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য মহীসোপানও উন্মুক্ত থাকবে।'
খুরশিদ আলম জানান, মিয়ানমার আদালতের কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাগরের (টেরিটোরিয়াল সি) মাত্র ৬ নটিক্যাল মাইল বাংলাদেশকে দেওয়ার আবেদন করেছিল। মিয়ানমারের ওই দাবি নাকচ করে আদালত বাংলাদেশের দাবি অনুযায়ী সেন্টমার্টিন দ্বীপের জন্য ১২ নটিক্যাল মাইল সাগর এলাকার পক্ষে রায় দেয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের তিনটি দাবিই ইটলস মেনে নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এ মামলায় খুরশিদ আলমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নৌবাহিনীতে কাজ করার সময় থেকেই বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি।
ইটলস গত বুধবারের রায়ে ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক এলাকায় (ইইজেড) এবং এর পরবর্তী মহীসোপান এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ অধিকারের আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের এ অধিকারকে মিয়ানমার অস্বীকার করে আসছিল। রায়ের পরপরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশ যা চেয়েছিল তার চেয়েও বেশি পেয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য বিশাল বিজয়।
খুরশিদ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের কারণ সীমা নির্ধারণের পদ্ধতিকে কেন্দ্র করে। মিয়ানমারের মতো ভারতও সমদূরত্বের ভিত্তিতে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে আগ্রহী। কিন্তু বাংলাদেশ বরাবরই ন্যায্যতাভিত্তিক পদ্ধতিতে সীমা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে আসছে। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি নাগাদ ভারতের বিরুদ্ধে মামলাটি হেগের স্থায়ী সালিস ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তি হওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ আশা করছে।
No comments