বিএনপি প্রস্তাব নিয়ে এগিয়েআসুক by আমীর-উল ইসলাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকা না-থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে। সরকার বলেছে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা রাখার সুযোগ নেই। বিরোধী দল প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে। এই প্রেক্ষাপটে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য আমীর-উল ইসলাম এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হলো সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মিজানুর রহমান খান
প্রথম আলো আদালতের রায়ের কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আর রাখা যাচ্ছে না। রাজনৈতিক দিক এড়িয়ে সরকারি দলের এ ধরনের আইনি দিকে ঝুঁকে পড়াকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
আমীর-উল ইসলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার দাবি যখন উঠেছিল, তখন আমরা বলেছিলাম, এটা ১৫ বছরের জন্য একটা সাময়িক ব্যবস্থা। যত দিন নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী না হয়, সে জন্য কথাটা ওঠে। তা ছাড়া, আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখলাম, এই ব্যবস্থার কারণে বিচার বিভাগের ওপর একটা অতিরিক্ত বোঝাও চাপল। তাতে বিচার বিভাগের ক্ষতি হলো। পৃথিবীর অন্য কোনো গণতন্ত্রে এই দৃষ্টান্ত নেই। এটা কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যবস্থা। চাপানো হলেও রাজনৈতিক কারণে আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কারণ, তখন নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রথম আলো কিন্তু ২০০৪ সালেও এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক অবস্থান আমরা দেখতে পাই। আপনি হাইকোর্টে তখন ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা মামলায় আওয়ামী লীগকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
আমীর-উল ইসলাম হ্যাঁ।
প্রথম আলো সাত বছর আগে আওয়ামী লীগ হলফনামা দিয়ে আদালতে বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ও সংবিধানসম্মত। আপনি একটি অবস্থান নিয়েছিলেন যে বিচার বিভাগকে রেহাই দেওয়া হোক।
আমীর-উল ইসলাম বিচার বিভাগ নিয়ে আমাদের একটা উদ্বেগ ছিল। তখন এই ব্যবস্থাকে আমরা অসাংবিধানিক বলিনি। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন অনেক বেশি স্বাধীন ও শক্তিশালী হয়েছে। সেটা আপনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল, অন্যান্য গণতন্ত্রে যেভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করে, সেখানে ফিরে যাওয়া।
প্রথম আলো কিন্তু সেটা পরীক্ষা করার জন্য আমরা কোনো দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারিনি। যদি আমরা ধরেও নিই যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে; তা হলে এটাও কি ধরে নেওয়া যায় যে জাতীয় নির্বাচনও অবাধ হবে?
আমীর-উল ইসলাম এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা কতটুকু কী চিন্তা করছে, সেটার ওপর নির্ভর করছে। তবে একটা বিকল্প তো খোলা আছে। বিএনপি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তারা বিকল্প একটা চিন্তা করুক। জাতীয় সরকার-ধরনেরও কিছু হতে পারে। বিকল্প যে একেবারেই নেই, তা তো নয়।
প্রথম আলো আপনি কি আলোচনার জন্য দু-একটি বিকল্পের ধারণা দিতে পারেন?
আমীর-উল ইসলাম আমরা রাজনৈতিক সংঘাত চাই না। আমরা চাই গণতন্ত্র যাতে সবলভাবে চলতে পারে।
প্রথম আলো আমরা তো ধরে নিতে পারি, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন যতই অবাধ হোক, প্রধান বিরোধী দল বয়কট করলে তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আমীর-উল ইসলাম হ্যাঁ, একটা সংকট থেকে যাচ্ছে। সংকট উত্তরণের জন্য এবং দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী বিএনপির উচিত সংলাপ করা এবং বিকল্প প্রস্তাব হাজির করা। বিচার বিভাগের কাঁধে দায় না চাপিয়ে উপযুক্ত বিকল্প উদ্ভাবন করা। বিচার বিভাগও কিন্তু বলে দিয়েছেন, তাঁরা এই দায়িত্ব নিতে নারাজ। অবশ্য পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো পড়িনি।
প্রথম আলো পূর্ণাঙ্গ রায় না পেয়েই সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত এল, সেটি কি আরও একটু ধীরে-সুস্থে আসতে পারত না?
আমীর-উল ইসলাম এতে করে বিএনপির ওপর একটা চাপ তৈরি হলো। এখন তাদের কাছে যে বিকল্পগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে তারা আগেভাগেই আলাপ-আলোচনার জন্য সংসদে আসবে। এভাবেও একে দেখা যায়।
আমি সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলে পার্লামেন্টে যাব না, এটা তো সংস্কৃতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়।
প্রথম আলো মওদুদ আহমদ বলেছেন, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদে বলা নেই যে সুপ্রিম কোর্টের রায় সংসদকে মানতে হবে। বরং সেখানে লেখা আছে, হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতের জন্য আপিল বিভাগের রায় প্রযোজ্য।
আমীর-উল ইসলাম শ্রদ্ধা রেখেই বলব, কথাটা স্ববিরোধী। কারণ, সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করাই গণতন্ত্র ও সভ্যতার অংশ। ১১১ অনুচ্ছেদের যুক্তিও এখানে অপ্রাসঙ্গিক। ওই অনুচ্ছেদের মূল কথা হচ্ছে রায়ের প্রাধান্য নিশ্চিত করা। আপিল বিভাগের ঘোষিত আইন সব আদালতের জন্য অবশ্যপালনীয় হবে।
প্রথম আলো তাহলে কি সব ধরনের পরিস্থিতিতে কিংবা সব রাজনৈতিক প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দেবেন, সেটাই সংসদকে মেনে নিতে হবে? আমরা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে এ রকম অনেক স্রোতধারা দেখেছি, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কংগ্রেস পাশ কাটিয়েছে। ভারতেও তেমনটা ঘটেছে। এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব রাজনৈতিক দায় কাঁধে নিচ্ছেন না। তাঁরা আদালতের কাঁধে বন্দুক রাখছেন।
আমীর-উল ইসলাম আদালত কিন্তু বিকল্প রেখেছেন। এখন বিএনপি যদি সেগুলো গ্রহণ করত কিংবা বলা যায়, সেই দরজা এখনো খোলা রয়েছে।
প্রথম আলো আরও দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খোলা থাকায় ভারসাম্যটা কোন দিকে রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
আমীর-উল ইসলাম আমার মনে হয়, আদালতের রায় দলগুলোকে অনেক পরিপক্ব হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন তারা পরিপক্বতা প্রদর্শনের প্রমাণ দিতে না পারলে আমাদের জন্য তা দুর্ভাগ্যজনক হবে।
প্রথম আলো সুপ্রিম কোর্ট যাতে অবিলম্বে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন, সে আশা আপনি করবেন কি না? কারণ আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে যে এক-দুই বছরেও আপিল বিভাগের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়া যায়নি।
আমীর-উল ইসলাম এটা স্বাভাবিক প্রত্যাশা।
প্রথম আলো আপনি বলেছেন যে আলোচনার দরজা খোলা। কীভাবে সেই আলোচনা সামনের দিকে এগোতে পারে?
আমীর-উল ইসলাম এ রকম একটি অবস্থায় ঠিক নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়তো সমীচীন হবে না। তবে এটাই বলব যে সদিচ্ছা থাকতে হবে। তা হলে উপযুক্ত উপায় পাওয়া যাবে। ফিফথ ফ্রেঞ্চ রিপাবলিকে রাজনৈতিক সংকটের সময় স্পিকারের নেতৃত্বে প্রধান দলগুলোকে নিয়ে ছোট মন্ত্রিসভা হয়েছে। সুতরাং রাজনীতিকেরা আলাপ-আলোচনা করে সবার জন্য নিরাপদ, বাস্তব ও রাজনৈতিকভাবে অনুকূল একটি বিকল্প বেছে নিতে পারেন।
প্রথম আলো এই মুহূর্তে আপনি কোন বিষয়টির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান?
আমীর-উল ইসলাম নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে এবং সবাইকে সক্রিয়ভাবে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। নির্বাচনকালে সরকারের ধরন যা-ই হোক, নির্বাচন কমিশনকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
প্রথম আলো ধন্যবাদ।
আমীর-উল ইসলাম ধন্যবাদ।
আমীর-উল ইসলাম তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার দাবি যখন উঠেছিল, তখন আমরা বলেছিলাম, এটা ১৫ বছরের জন্য একটা সাময়িক ব্যবস্থা। যত দিন নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী না হয়, সে জন্য কথাটা ওঠে। তা ছাড়া, আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখলাম, এই ব্যবস্থার কারণে বিচার বিভাগের ওপর একটা অতিরিক্ত বোঝাও চাপল। তাতে বিচার বিভাগের ক্ষতি হলো। পৃথিবীর অন্য কোনো গণতন্ত্রে এই দৃষ্টান্ত নেই। এটা কিন্তু অস্বাভাবিক ব্যবস্থা। চাপানো হলেও রাজনৈতিক কারণে আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কারণ, তখন নিরপেক্ষ নির্বাচন করাই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রথম আলো কিন্তু ২০০৪ সালেও এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক অবস্থান আমরা দেখতে পাই। আপনি হাইকোর্টে তখন ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা মামলায় আওয়ামী লীগকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
আমীর-উল ইসলাম হ্যাঁ।
প্রথম আলো সাত বছর আগে আওয়ামী লীগ হলফনামা দিয়ে আদালতে বলেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক ও সংবিধানসম্মত। আপনি একটি অবস্থান নিয়েছিলেন যে বিচার বিভাগকে রেহাই দেওয়া হোক।
আমীর-উল ইসলাম বিচার বিভাগ নিয়ে আমাদের একটা উদ্বেগ ছিল। তখন এই ব্যবস্থাকে আমরা অসাংবিধানিক বলিনি। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন অনেক বেশি স্বাধীন ও শক্তিশালী হয়েছে। সেটা আপনাকে বিবেচনায় নিতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল, অন্যান্য গণতন্ত্রে যেভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করে, সেখানে ফিরে যাওয়া।
প্রথম আলো কিন্তু সেটা পরীক্ষা করার জন্য আমরা কোনো দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারিনি। যদি আমরা ধরেও নিই যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে; তা হলে এটাও কি ধরে নেওয়া যায় যে জাতীয় নির্বাচনও অবাধ হবে?
আমীর-উল ইসলাম এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা কতটুকু কী চিন্তা করছে, সেটার ওপর নির্ভর করছে। তবে একটা বিকল্প তো খোলা আছে। বিএনপি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়, তাহলে তারা বিকল্প একটা চিন্তা করুক। জাতীয় সরকার-ধরনেরও কিছু হতে পারে। বিকল্প যে একেবারেই নেই, তা তো নয়।
প্রথম আলো আপনি কি আলোচনার জন্য দু-একটি বিকল্পের ধারণা দিতে পারেন?
আমীর-উল ইসলাম আমরা রাজনৈতিক সংঘাত চাই না। আমরা চাই গণতন্ত্র যাতে সবলভাবে চলতে পারে।
প্রথম আলো আমরা তো ধরে নিতে পারি, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন যতই অবাধ হোক, প্রধান বিরোধী দল বয়কট করলে তার গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
আমীর-উল ইসলাম হ্যাঁ, একটা সংকট থেকে যাচ্ছে। সংকট উত্তরণের জন্য এবং দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী বিএনপির উচিত সংলাপ করা এবং বিকল্প প্রস্তাব হাজির করা। বিচার বিভাগের কাঁধে দায় না চাপিয়ে উপযুক্ত বিকল্প উদ্ভাবন করা। বিচার বিভাগও কিন্তু বলে দিয়েছেন, তাঁরা এই দায়িত্ব নিতে নারাজ। অবশ্য পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো পড়িনি।
প্রথম আলো পূর্ণাঙ্গ রায় না পেয়েই সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত এল, সেটি কি আরও একটু ধীরে-সুস্থে আসতে পারত না?
আমীর-উল ইসলাম এতে করে বিএনপির ওপর একটা চাপ তৈরি হলো। এখন তাদের কাছে যে বিকল্পগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে তারা আগেভাগেই আলাপ-আলোচনার জন্য সংসদে আসবে। এভাবেও একে দেখা যায়।
আমি সংখ্যাগরিষ্ঠ না হলে পার্লামেন্টে যাব না, এটা তো সংস্কৃতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়।
প্রথম আলো মওদুদ আহমদ বলেছেন, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদে বলা নেই যে সুপ্রিম কোর্টের রায় সংসদকে মানতে হবে। বরং সেখানে লেখা আছে, হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতের জন্য আপিল বিভাগের রায় প্রযোজ্য।
আমীর-উল ইসলাম শ্রদ্ধা রেখেই বলব, কথাটা স্ববিরোধী। কারণ, সর্বোচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করাই গণতন্ত্র ও সভ্যতার অংশ। ১১১ অনুচ্ছেদের যুক্তিও এখানে অপ্রাসঙ্গিক। ওই অনুচ্ছেদের মূল কথা হচ্ছে রায়ের প্রাধান্য নিশ্চিত করা। আপিল বিভাগের ঘোষিত আইন সব আদালতের জন্য অবশ্যপালনীয় হবে।
প্রথম আলো তাহলে কি সব ধরনের পরিস্থিতিতে কিংবা সব রাজনৈতিক প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দেবেন, সেটাই সংসদকে মেনে নিতে হবে? আমরা মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে এ রকম অনেক স্রোতধারা দেখেছি, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে কংগ্রেস পাশ কাটিয়েছে। ভারতেও তেমনটা ঘটেছে। এখন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব রাজনৈতিক দায় কাঁধে নিচ্ছেন না। তাঁরা আদালতের কাঁধে বন্দুক রাখছেন।
আমীর-উল ইসলাম আদালত কিন্তু বিকল্প রেখেছেন। এখন বিএনপি যদি সেগুলো গ্রহণ করত কিংবা বলা যায়, সেই দরজা এখনো খোলা রয়েছে।
প্রথম আলো আরও দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খোলা থাকায় ভারসাম্যটা কোন দিকে রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?
আমীর-উল ইসলাম আমার মনে হয়, আদালতের রায় দলগুলোকে অনেক পরিপক্ব হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। এখন তারা পরিপক্বতা প্রদর্শনের প্রমাণ দিতে না পারলে আমাদের জন্য তা দুর্ভাগ্যজনক হবে।
প্রথম আলো সুপ্রিম কোর্ট যাতে অবিলম্বে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন, সে আশা আপনি করবেন কি না? কারণ আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে যে এক-দুই বছরেও আপিল বিভাগের কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়া যায়নি।
আমীর-উল ইসলাম এটা স্বাভাবিক প্রত্যাশা।
প্রথম আলো আপনি বলেছেন যে আলোচনার দরজা খোলা। কীভাবে সেই আলোচনা সামনের দিকে এগোতে পারে?
আমীর-উল ইসলাম এ রকম একটি অবস্থায় ঠিক নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়তো সমীচীন হবে না। তবে এটাই বলব যে সদিচ্ছা থাকতে হবে। তা হলে উপযুক্ত উপায় পাওয়া যাবে। ফিফথ ফ্রেঞ্চ রিপাবলিকে রাজনৈতিক সংকটের সময় স্পিকারের নেতৃত্বে প্রধান দলগুলোকে নিয়ে ছোট মন্ত্রিসভা হয়েছে। সুতরাং রাজনীতিকেরা আলাপ-আলোচনা করে সবার জন্য নিরাপদ, বাস্তব ও রাজনৈতিকভাবে অনুকূল একটি বিকল্প বেছে নিতে পারেন।
প্রথম আলো এই মুহূর্তে আপনি কোন বিষয়টির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে চান?
আমীর-উল ইসলাম নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এ বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে এবং সবাইকে সক্রিয়ভাবে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে। নির্বাচনকালে সরকারের ধরন যা-ই হোক, নির্বাচন কমিশনকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।
প্রথম আলো ধন্যবাদ।
আমীর-উল ইসলাম ধন্যবাদ।
No comments