সমুদ্রসীমা নিয়ে দুই পক্ষই সন্তুষ্ট-মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের সুযোগ by মেহেদী হাসান
'সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের রায়ে কেবল বাংলাদেশ নয়, মিয়ানমারেরও জয় হয়েছে। কেননা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এ রায়ের মধ্য দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি ঘটেছে।' জার্মানির হামবুর্গে সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) গত বুধবার ঐতিহাসিক এক রায় ঘোষণার পর এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত
করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ নেই। তদুপরি রায় নিয়ে সন্তুষ্ট মিয়ানমারও। দেশটির রাষ্ট্রদূত উ মিন লুইন গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এ রায়ে উভয় দেশ সমভাবেই লাভবান হয়েছে।
সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ প্রায় চার দশকের। তিন বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৫১ পৃষ্ঠার রায়টি এ বিরোধের ইতি টেনেছে। বাংলাদেশ এক লাখ ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার সাগর এলাকা পেয়েছে। অন্যদিকে বেশি দৈর্ঘ্যের উপকূল নিয়ে মিয়ানমার পেয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পথে ছিল একটি বড় বাধা। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এর সমাধান আসেনি। এখন বিরোধের অবসান হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ এসেছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের এক কূটনীতিক অনেকটা আক্ষেপের সুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যস্ত ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টায়। অথচ মিয়ানমারের সঙ্গে সে ধরনের প্রচেষ্টা দেখা যায় না।'
তবে ঢাকার কূটনীতিকদের অভিযোগ উল্টো। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে রেখেছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই সেই মাত্রায় সাড়া মিলছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘদিনের সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমার গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার সফর করেছেন। ওই সফরে ১৫ দফা ঘোষণায় দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর ওপর গুরুত্বারোপের পাশাপাশি সম্পর্কোন্নয়নে বিভিন্ন প্রচেষ্টা স্থান পেয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি বাংলাদেশ জোর দিয়ে উপস্থাপনের পর মিয়ানমার এ ব্যাপারে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রীর ওই সফরের পরের মাসেই দুই দেশ সরাসরি বিমান চলাচলের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভিয়েতনাম দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, এর ফলে কেবল মিয়ানমার নয়, আরো দূরের আসিয়ান সদস্য দেশ ভিয়েতনাম পর্যন্ত আগের চেয়ে কম খরচে ও কম সময়ে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিয়ানমার সফরের পর ফিরতি সফরে ওই দেশের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। সফর শুরুর সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে মিয়ানমার প্রস্তাব করেছিল ১৩ মার্চ। কিন্তু এ সময়ই জার্মানির আদালতে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে রায়ের তারিখ থাকায় বাংলাদেশ অন্য কোনো তারিখ নির্ধারণের অনুরোধ জানায়। উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য রায়ের পর নতুন করে সফরের তারিখ নির্ধারণে গুরুত্ব বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন।
এ ছাড়া মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে চীনের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালুর একটি আঞ্চলিক উদ্যোগ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় এক ডজন গাড়ি চীনের কুনমিং থেকে রওনা হয়ে মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন করেছে। চার দেশের নামের আদ্যক্ষর 'বিসিআইএম' নামের ওই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে জোরদার সম্পর্ক জরুরি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারকে যেভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তা অত্যন্ত ইতিবাচক। বিরোধটি আন্তর্জাতিক আদালতে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে মিয়ানমারের যে সহযোগিতা ছিল তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। মিয়ানমারের সম্মতি নিয়েই বাংলাদেশ আদালতে গেছে। আদালতে বিচার প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে।'
ড. দেলোয়ার বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশের) সমস্যা মূলত দুটি। একটি সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ, অন্যটি রোহিঙ্গা ইস্যু। সামগ্রিক বিবেচনায় সমুদ্রসীমা বিরোধের তুলনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি ছোট। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা, বোঝাপড়ার মাধ্যমে এ বিষয়ের নিষ্পত্তি সম্ভব।' তিনি বলেন, 'মিয়ানমার বিমসটেকের (বঙ্গোপসাগর এলাকার কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট) প্রেসিডেন্ট হতে চলেছে। আসিয়ানেও (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট) দেশটির গুরুত্ব বাড়ছে। তাই বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদারের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া।'
সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশ ঘটানোর খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে ড. দেলোয়ার বলেন, 'রায়ের ব্যাপারে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য যদি তাঁর সরকারের প্রকৃত মনোভাব হয়ে থাকে তবে তা অবশ্যই ইতিবাচক। মিয়ানমার যে এলাকাকে তার বলে দাবি করেছিল, রায়ের মাধ্যমে আমাদের অধিকারে আসা ওই এলাকায় আমরা যখন খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেব তখনই ওই দেশটির আচরণ থেকে তার আসল মনোভাব বোঝা যাবে।'
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব সি এম শফি সামী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা ছাড়া আমাদের তেমন কোনো বিরোধ নেই। দুই পক্ষই আদালতে গেছে। রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতও বলেছেন, রায় উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হয়েছে।'
শফি সামী বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। এ রায়ের ফলে আরো উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা কেবল অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে সাগরের সম্পদ আহরণের বিষয়টির কথাও ভাবা যেতে পারে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গেও আশানুরূপ রায় পাওয়া গেলে দ্বিপক্ষীয়ভাবে না করে বহুপক্ষীয়ভাবেই সাগরের সম্পদ আহরণের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।'
সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ প্রায় চার দশকের। তিন বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৫১ পৃষ্ঠার রায়টি এ বিরোধের ইতি টেনেছে। বাংলাদেশ এক লাখ ১১ হাজার বর্গকিলোমিটার সাগর এলাকা পেয়েছে। অন্যদিকে বেশি দৈর্ঘ্যের উপকূল নিয়ে মিয়ানমার পেয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের পথে ছিল একটি বড় বাধা। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় এর সমাধান আসেনি। এখন বিরোধের অবসান হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরো এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ এসেছে।
সম্প্রতি মিয়ানমারের এক কূটনীতিক অনেকটা আক্ষেপের সুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যস্ত ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টায়। অথচ মিয়ানমারের সঙ্গে সে ধরনের প্রচেষ্টা দেখা যায় না।'
তবে ঢাকার কূটনীতিকদের অভিযোগ উল্টো। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে রেখেছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই সেই মাত্রায় সাড়া মিলছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘদিনের সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমার গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার সফর করেছেন। ওই সফরে ১৫ দফা ঘোষণায় দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালুর ওপর গুরুত্বারোপের পাশাপাশি সম্পর্কোন্নয়নে বিভিন্ন প্রচেষ্টা স্থান পেয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি বাংলাদেশ জোর দিয়ে উপস্থাপনের পর মিয়ানমার এ ব্যাপারে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রীর ওই সফরের পরের মাসেই দুই দেশ সরাসরি বিমান চলাচলের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। ভিয়েতনাম দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে চুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, এর ফলে কেবল মিয়ানমার নয়, আরো দূরের আসিয়ান সদস্য দেশ ভিয়েতনাম পর্যন্ত আগের চেয়ে কম খরচে ও কম সময়ে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মিয়ানমার সফরের পর ফিরতি সফরে ওই দেশের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। সফর শুরুর সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে মিয়ানমার প্রস্তাব করেছিল ১৩ মার্চ। কিন্তু এ সময়ই জার্মানির আদালতে সমুদ্রসীমা নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে রায়ের তারিখ থাকায় বাংলাদেশ অন্য কোনো তারিখ নির্ধারণের অনুরোধ জানায়। উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য রায়ের পর নতুন করে সফরের তারিখ নির্ধারণে গুরুত্ব বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা করছেন।
এ ছাড়া মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে চীনের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ চালুর একটি আঞ্চলিক উদ্যোগ রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় এক ডজন গাড়ি চীনের কুনমিং থেকে রওনা হয়ে মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে ভারতের কলকাতা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক চলাচল সম্পন্ন করেছে। চার দেশের নামের আদ্যক্ষর 'বিসিআইএম' নামের ওই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে জোরদার সম্পর্ক জরুরি বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন গতকাল শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারকে যেভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তা অত্যন্ত ইতিবাচক। বিরোধটি আন্তর্জাতিক আদালতে নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে মিয়ানমারের যে সহযোগিতা ছিল তা কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। মিয়ানমারের সম্মতি নিয়েই বাংলাদেশ আদালতে গেছে। আদালতে বিচার প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে।'
ড. দেলোয়ার বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের (বাংলাদেশের) সমস্যা মূলত দুটি। একটি সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ, অন্যটি রোহিঙ্গা ইস্যু। সামগ্রিক বিবেচনায় সমুদ্রসীমা বিরোধের তুলনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি ছোট। পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা, বোঝাপড়ার মাধ্যমে এ বিষয়ের নিষ্পত্তি সম্ভব।' তিনি বলেন, 'মিয়ানমার বিমসটেকের (বঙ্গোপসাগর এলাকার কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জোট) প্রেসিডেন্ট হতে চলেছে। আসিয়ানেও (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট) দেশটির গুরুত্ব বাড়ছে। তাই বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদারের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া।'
সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা সমাবেশ ঘটানোর খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে ড. দেলোয়ার বলেন, 'রায়ের ব্যাপারে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য যদি তাঁর সরকারের প্রকৃত মনোভাব হয়ে থাকে তবে তা অবশ্যই ইতিবাচক। মিয়ানমার যে এলাকাকে তার বলে দাবি করেছিল, রায়ের মাধ্যমে আমাদের অধিকারে আসা ওই এলাকায় আমরা যখন খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেব তখনই ওই দেশটির আচরণ থেকে তার আসল মনোভাব বোঝা যাবে।'
সাবেক পররাষ্ট্রসচিব সি এম শফি সামী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা ছাড়া আমাদের তেমন কোনো বিরোধ নেই। দুই পক্ষই আদালতে গেছে। রায় আমাদের পক্ষে এসেছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতও বলেছেন, রায় উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হয়েছে।'
শফি সামী বলেন, 'মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। এ রায়ের ফলে আরো উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা কেবল অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন খাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে সাগরের সম্পদ আহরণের বিষয়টির কথাও ভাবা যেতে পারে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গেও আশানুরূপ রায় পাওয়া গেলে দ্বিপক্ষীয়ভাবে না করে বহুপক্ষীয়ভাবেই সাগরের সম্পদ আহরণের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।'
No comments