সম্ভাবনা-পদ্মার চরে পর্যটন কেন্দ্র

রাজধানীর সনি্নকটে পদ্মার চরে সরকারিভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি সর্বাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র। নৌপরিবহনমন্ত্রীর ইচ্ছায় বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় এ পর্যটন কেন্দ্র বাস্তবায়ন করতে একসঙ্গে কাজ করছে। প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে এরই মধ্যে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ কমিটির একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে প্রস্তাবিত পদ্মা বহুমুখী সেতুর নিচে লৌহজংয়ের মাওয়া ও শিবচরের কাওড়াকান্দি


ঘাটের মাঝামাঝি পদ্মার একটি চরকে বেছে নেওয়া হয়েছে সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য। এরই মধ্যে নৌ মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, এলজিইডি, স্বরাষ্ট্র, বন ও পরিবেশ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সরেজমিন ঘুরে গেছেন মাওয়া থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর কাউলিয়ার চরের কাছে ও হাজরা টার্নিংয়ের পশ্চিমের এ চরটি। সঙ্গে ছিলেন মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক। পর্যটন কেন্দ্রটির প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) মোঃ আলাউদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১০ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। হাইড্রোলজিক্যাল জরিপ ও সয়েল টেস্টের পরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এ স্থানটিতে এ পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হলে এখানে হোটেল, মোটেল, ঝুলন্ত সেতুসহ
থাকবে আধুনিক
সব সুযোগ-সুবিধা। সি-বোট ও সি-ট্রাকে করে পদ্মায় ঘুরে বেড়ানোসহ চরের মনোরম পরিবেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ তো থাকবেই।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কীর্তিনাশা পদ্মার অপরূপ সৌন্দর্য আর গ্রাম-বাংলার বৈচিত্র্য ও পদ্মায় জেগে ওঠা চরে অতিথি পাখিদের বিচরণ পর্যটকদের করবে আকৃষ্ট। সেই সঙ্গে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার অনুভূতি এক অন্য রকম আনন্দ দিতে পারে পদ্মাচরের এ পর্যটন কেন্দ্র। একই সঙ্গে সাঝের বেলা পদ্মার অপরূপ সাজ দেখতে পর্যটকরা প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে অনুভব করবেন এক অন্য রকম স্বাদ। এখানে থাকছে বয়ে যাওয়া পদ্মার দূষণমুক্ত বাতাস। মাথার ওপর নীল আকাশ সঙ্গে বিরামহীন বয়ে যাওয়া পদ্মার স্রোতধারা এবং পরিকল্পিত বনের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর মজা। পদ্মার মাঝে জন্ম নেওয়া কাশবনে বাতাসের দোলা ও হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে মাঝি-মাল্লার গানের সুমধুর সুর পর্যটকরা অনুভব করতে পারবেন তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে।
বালুচরে দাঁড়িয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলে নৌকার মাছ শিকারের দৃশ্য পর্যটকদের বিমোহিত করবে। রাতের নিস্তব্ধতায় পদ্মার চরের এ পর্যটন কেন্দ্রে বসে মনের সুখে পূর্ণিমার চাঁদ অবলোকন করা যাবে। ছয় খাতুর বাংলাদেশের সবক'টিই এখান থেকে উপভোগ করা সম্ভব হবে।
এরই মধ্যে পদ্মার চরে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়ে গেছে। সেখানে ঘুরে বেড়ানো, ঘুড়ি ওড়ানো, জমিতে আড্ডা দেওয়া সবই চলছে।

No comments

Powered by Blogger.